Xanthomonas campestris pv. musacearum
ব্যাকটেরিয়া
সাধারণত সংক্রমণের প্রায় ৩ সপ্তাহ পরে লক্ষণ প্রকাশিত হয়। গাছের জাত, বৃদ্ধি পর্যায় এবং আবহাওয়া পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে রোগের তীব্রতা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিন্ন হতে পারে। সংক্রমিত গাছে পাতার ক্রমান্বয়ে হলুদ হয়ে যাওয়া, ঢলে পড়া এবং অসম ও অকালে ফল পেকে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। যাহোক, সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যমূলক লক্ষণ হল উদ্ভিদের অঙ্গ থেকে হলুদাভ এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া জনিত তরলের (ওজ) ক্ষরণ। সংক্রমিত কলায় পরিবহনতন্ত্র বিবর্ণ হয়ে হলুদ-কমলা রঙ ধারণ করে এবং কোষকলায় ঘন বাদামী দাগ দেখা যায়। পুষ্পমঞ্জরীতে লক্ষণ হিসেবে। মঞ্জরীপত্র ধীরে ধীরে ঢলে যেতে এবং পুরুষ কুঁড়ি কুঞ্চিত হয়ে যেতে দেখা যায়।
এ রোগের বিরূদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোন জৈবিক দমন ব্যবস্থা সহজলভ্য নয়। এ ব্যাপারে আপনার কোন উপায় জানা থাকলে অনুগ্রহ করে আমাদের জানান।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। এ ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে কিন্তু এরা কদাচিৎ আর্থিক ভাবে সাশ্রয়ী। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, সংক্রমিত কলাগাছ ধ্বংস করার মাধ্যমে রোগের বিস্তার এড়ানোর জন্য আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী এবং কার্যকর বলে আগাছানাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়।
জ্যান্থোমোনাস ক্যাম্পেসট্রিস এর মুসাসিরাম প্যাথোভারের কারণে এসব লক্ষণ প্রকাশিত হয়। বিশেষত এটি একটি অনমনীয় ব্যাকটেরিয়া যা কলা বাগানের প্রভূত ক্ষতি সাধন করতে পারে। গাছের সংক্রমিত অংশ, সংক্রমিত সরঞ্জামাদি এবং পুরুষ ফুলের উন্মীলনে বায়ুবাহিত বাহকের মাধ্যমে এর বিস্তার ঘটে। ব্যাকটেরিয়া মাটিকে ৪ মাস পর্যন্ত সংক্রমিত করে রাখতে পারে এবং এটিই সংক্রমণের প্রধান উৎস। আর্দ্রতার পরিমাণের উপর এদের বেঁচে থাকা নির্ভর করে, যা শুষ্ক মাটিতে সবচেয়ে কম। বায়ুবাহিত বাহকের মধ্যে রয়েছে হুল বিহীন মৌমাছি (এপিডি), ফলের মাছি (ড্রসোফিলিডি) এবং ঘাসের মাছি (ক্লোরোপিডি) পরিবারের পোকা। এরা পুরুষ ফুলের সংক্রমিত নেকটার (মধু) আহরণের মাধ্যমে এক কলাগাছ থেকে আরেক কলাগাছে রোগের বিস্তার ঘটায়।