Erwinia tracheiphila
ব্যাকটেরিয়া
শশাতে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত নেতিয়ে যাওয়া রোগ সাধারণত উপরের দিকের পাতায় শুরু হয়। এই পাতাগুলি কম উজ্জ্বল লাগতে শুরু করে এবং রোগ আরও প্রকট হলে পাতার কিনারাগুলি বাদামী হয়ে যেতে পারে। আক্রান্ত উদ্ভিদ দিনের বেলায় নেতিয়ে যায় কিন্তু সারা রাতের মধ্যে আবার সজীব হয়ে ওঠে। এটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত নেতিয়ে যাওয়া রোগ কিনা তা পরীক্ষা করতে, এই রোগ ছড়ানোর জন্য দায়ী বালাইয়ের সন্ধান করুন: গায়ে ডোরাকাটা ও ছোপ ছোপ দাগযুক্ত শশার গুবরে পোকা। এছাড়াও, যদি আপনি নেতিয়ে যাওয়া পাতা থেকে সযত্নে বোঁটাকে আলাদা করে নেন, তাহলে আঠালো সুতোর মতো পদার্থ দেখতে পারেন। তবে, এই আঠালো পদার্থের অনুপস্থিতি এটা ইঙ্গিত করে না যে উদ্ভিদ আক্রান্ত হয়নি, কিন্তু এর উপস্থিতি জোরালো প্রমাণ।
যদি কিছু গাছ রোগের লক্ষণ প্রকাশ করে, তাহলে রোগের ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে এই গাছগুলিকে অপসারিত করে মাটিতে পুঁতে দিন। এছাড়াও আপনি ফাঁদ ফসল রোপন করতে পারেন, যেগুলি এক ধরনের শশা জাতীয় গাছ যেগুলিকে বালাই খুবই আকর্ষণীয় বলে আকৃষ্ট হয়। এই ফাঁদ ফসলগুলি আপনার পছন্দের ফসল থেকে বালাইগুলির নজর সরিয়ে দিতে পারে।
মনে রাখুন, একবার ব্যাকটেরিয়া ঘটিত নেতিয়ে যাওয়া রোগ দ্বারা উদ্ভিদ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে এই রোগকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তাই গুবরে পোকাকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করাই হলো মূল চাবিকাঠি। যদি আপনি প্রারম্ভিক পর্যায়ে এক চতুর্থাংশ গাছে দুটি গুবরে পোকার সন্ধান পান, আপনাকে কীটনাশক ব্যবহারের কথা চিন্তা করতে হবে। যখন গাছ বয়স্ক হয়, প্রতি এক চতুর্থাংশ গাছে গুবরে পোকার সংখ্যা বেড়ে আটটি হয়। সুস্থ উদ্ভিদকে গুবরে পোকার আক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত নেতিয়ে পড়া রোগে আক্রান্ত গাছকে অপসারিত করাটা গুরুত্বপূর্ণ। সমগ্র গাছে কীটনাশকের পাতলা, ও সমজাতীয় লেপন নিশ্চিত করুন, এবং ভালো করে মনোযোগ দিয়ে দেখুন মাটির ঠিক কোন জায়গা থেকে গাছের কাণ্ড উত্থিত হচ্ছে এবং পাতার নীচের দিকটাও লক্ষ্য করুন কেননা গুবরে পোকার এই জায়গাগুলিতে লুকিয়ে থাকার প্রবণতা আছে।
বিশেষ করে শশা উদ্ভিদে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত নেতিয়ে যাওয়া রোগ ব্যাকটেরিয়া ঘটিত একটি সাধারন রোগ, যা—ডোরাকাটা ও ছোপ ছোপ দাগযুক্ত নির্দিষ্ট শশার গুবরে পোকার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই গুবরে পোকাগুলি শীতকালে তাদের পাকস্থলীর মধ্যে ব্যাকটেরিয়াকে বহন করে। রোগগ্রস্ত উদ্ভিদ থেকে খেয়ে এরা আক্রান্ত হয়, তারপরে সুস্থ উদ্ভিদে কামড় দিয়ে খাওয়ার সময়ে সুস্থ উদ্ভিদে এই ব্যাকটেরিয়াকে ছড়িয়ে দেয়। একবার এই ব্যাকটেরিয়া উদ্ভিদ দেহে প্রবেশ করলে, এগুলি দ্রুত বংশবিস্তার করে এবং উদ্ভিদের সংবহনতন্ত্রকে রুদ্ধ করে, যার ফলে উদ্ভিদ নেতিয়ে যায়। এই ব্যাকটেরিয়া বীজের মাধ্যমে ছড়ায় না, মাটিতে বসবাস করে না, তবে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য একমাত্র মৃত উদ্ভিদের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে বসবাস করে।