ম্যানিওক

কাসাভা ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইট

Xanthomonas axonopodis pv. manihotis

ব্যাকটেরিয়া

সংক্ষেপে

  • পাতায় কৌণিক নেক্রোটিক দাগ, প্রায়শই ফ্যাকাশে হলুদ বলয় দ্বারা ঘেরা থাকে।
  • ক্ষত বড় হতে পারে, একত্রিত হতে পারে এবং আঠা বের হতে পারে।
  • আঠা প্রথমে সোনালী, পরে পীতাভ বাদামী রঙ তৈরি করে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল
ম্যানিওক

ম্যানিওক

উপসর্গ

লক্ষণগুলির মধ্যে ব্লাইট, নেতিয়ে পড়া, কাণ্ডের আগা মরা রোগ এবং ভাস্কুলার টিস্যুর নেক্রোসিস প্রধান। পাতায়, কৌণিক নেক্রোটিক দাগ দৃশ্যমান হয়, ছোট শিরা দ্বারা সীমাবদ্ধ, এবং অনিয়মিতভাবে পত্র ফলকে দৃশ্যমান হয় । এ দাগ প্রায়শই একটি ফ্যাকাশে হলুদ বলয় দ্বারা ঘেরা থাকে। এ সমস্ত দাগ আর্দ্র, বাদামী ক্ষত হিসাবে শুরু হয় এবং যতক্ষণ না এই সমস্ত ক্ষত বড় হয় এবং একত্রিত হয় ততক্ষণ তা সাধারণত উদ্ভিদের নীচের অংশে সীমাবদ্ধ থাকে, এবং পরবর্তীতে প্রায়শই পুরো পাতা মারা যায়। ক্ষত থেকে পচা আঠালো রস বের হয়ে আসে, পাতার শিরা অতিক্রম করে বের হয়। এ প্রক্রিয়ায় রসপূর্ণ সোনালি তরল নিঃসরণ হয় যা পরবর্তীতে একটি অ্যাম্বার রঙের পিণ্ডের মত তৈরি করে শক্ত হয়। কচি শাখা এবং বোঁটা আক্রান্ত হওয়ার পরে ফেটে যেতে পারে, এছাড়াও আঠা বের হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

সংক্রামিত বীজকে গরম জলে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ২০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখার পরে অগভীর স্তরে রাতভর ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৪ ঘণ্টার জন্য ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় শুকানো হলে, ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। বীজ জলে ডুবিয়ে একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম করা যেতে পারে যতক্ষণ না জলের তাপমাত্রা ৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় এবং তারপরে জল থেকে অবিলম্বে তুলে ফেলতে হয়।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। এ মুহূর্তে কাসাভা ব্যাকটেরিয়াজনিত ব্লাইট রোগের সরাসরি রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ নেই। যদি আপনি এ সম্পর্কে কোন কিছু জানেন, তাহলে আমাদের জানান। কোয়ারেন্টাইন কর্তৃপক্ষকে জীবাণুর উপস্থিতি জানান।

এটা কি কারণে হয়েছে

জ্যান্থোমোনাস এক্সনোপোডিস নামক জীবাণুর প্রভাবে এ লক্ষণ দেখা দেয় যা সহজেই কাসাভা গাছকে (ম্যানিহোটিস) সংক্রমিত করে। ফসলের (বা ক্ষেত) মধ্যে, ব্যাকটেরিয়া বাতাস বা বৃষ্টির ঝাপটার মাধ্যমে ছড়ায়। বৃষ্টির সময় বা পরে দূষিত সরঞ্জাম ও মানুষ এবং প্রাণীদের চলাচল এ রোগ বিস্তারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। যা'হোক, বিশেষ করে আফ্রিকা এবং এশিয়ায়, এ জীবাণুর প্রধান সমস্যা হল, ব্যাপক এলাকা জুড়ে রোগের লক্ষণবিহীন চারা, কাটিং এবং বীজ এ রোগের প্রধান উৎস। সংক্রমণের প্রক্রিয়া এবং রোগ বিকাশের জন্য ১২ ঘন্টা ধরে ২২-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অনুকূল তাপমাত্রার সাথে ৯০-১০০% আপেক্ষিক আর্দ্রতার প্রয়োজন হয়। ব্যাকটেরিয়া কাণ্ড এবং ক্ষরিত আঠার মধ্যে অনেক মাস ধরে টিকে থাকে, আর্দ্র সময়কালে এর কার্যকারিতা বেড়ে যায়। এ জীবাণুর একমাত্র উল্লেখযোগ্য আবাস হল ইউফর্বিয়া পালচেরিমা (পয়েনসেটিয়া) শোভাবর্ধনকারী গাছ।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • প্রত্যয়িত উৎস থেকে চারা সংগ্রহ করুন এবং আপনার এলাকায় পাওয়া গেলে প্রতিরোধী জাত বেছে নিন।
  • সংক্রামিত জমি থেকে কাছাকাছি বা বাতাসের অভিমুখে চারাগাছ রোপণ করবেন না।
  • যদি শুধুমাত্র কয়েকটি গাছে উপসর্গ দেখা যায় তাহলে সংক্রমিত গাছপালা কেটে ফেলুন।
  • জীবাণুনাশক ব্যবহার করে চাষের সরঞ্জাম নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা উচিত।
  • অন্তত একবার বর্ষাকালে ফসল আবর্তন এবং জমি পতিত রাখার অভ্যাস করুন।
  • সমস্ত সংক্রামিত উদ্ভিদের ধ্বংসাবশেষ এবং আগাছা যার উপর রোগজীবাণু বেঁচে থাকতে পারে তা সরিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে বা গভীরভাবে পুঁতে দিতে হবে।
  • রোগের বিকাশ বিলম্বিত করার জন্য ম্যানিওক উদ্ভিদ বর্ষাকালের শেষের দিকে রোপণ করুন।
  • কাসাভার সঙ্গে ভুট্টা বা তরমুজের মতো সাথী ফসল চাষ করলে উপকার হতে পারে।
  • রোগের তীব্রতা কমাতে মাটিতে পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়ান।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন