Clavibacter michiganensis subs. michiganensis
ব্যাকটেরিয়া
আক্রান্ত চারাগাছ থেকে দুর্বল ও বামনাকৃতির গাছ জন্মায়,পাতার শিরা ও বৃন্তের উপর ছোট ছোট সাদা দাগ দেখা যায়। বাড়ন্ত গাছের নতুন কোষকলায় (প্রবাহমান) প্রাথমিক সংক্রমণের কারণে অথবা পরবর্তী ধাপের সংক্রমণের কারণেও রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। পুরাতন পাতার শিরার অভ্যন্তরে ক্লোরোফিলের অভাব, কুঁকড়িয়ে যাওয়া বা নিস্তেজ হয়ে পড়া (কখনো কখনো কেবল এক পাশে) প্রবাহমান সংক্রমণ এ রোগের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ফলতঃ পাতা বাদামী হয়ে ঝরে পড়ে। পত্রবৃন্ত দেখতে সবুজই থাকে এবং কাণ্ডের সাথে দৃঢ়ভাবে যুক্ত থাকে। প্রাথমিক সংক্রমণের বড় লক্ষণ হচ্ছে পাতার ধারে গাঢ় বাদামী রঙের দাগ এবং পত্রফলকে অস্বচ্ছ উজ্জ্বল দাগের উপস্থিতি। বৃন্তের গোড়া পচে যায় এবং উপরের অংশে গাঢ় বাদামী ও বাদামী রঙের লম্বালম্বি রেখা দেখা দেয়। কাণ্ড ফেটে বাদামী বর্ণের লম্বা রেখাসম্বলিত ক্যাঙ্কার তৈরী করে। ফলের ত্বকে উজ্জ্বল , অস্বচ্ছ বলয়াকার বাদামী দাগ দেখা যায়। রোগ বৃদ্ধির ফলস্বরূপ সম্পূর্ণ গাছ শুকিয়ে যায়।
অ্যাসেটিক অ্যাসিড (৮%) অথবা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড দ্রবনে (৫%) বীজ পরিশোধন করুন। পরিশোধনের জন্য জল অথবা মিথাইল ব্রোমাইডও ব্যবহার করতে পারেন।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ঘন ঘন বৃষ্টিপাত এবং আর্দ্র আবহাওয়া প্রলম্বিত হলে, কপার সম্বলিত রাসায়নিক উপাদান স্প্রে করা যুক্তিসঙ্গত। এতে পাতার ক্ষয়রোগ এবং ফলের গায়ে দাগ পড়া কমে আসবে। যদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তাহলে কপার সংগঠিত উপাদান প্রয়োগে বড় কোন ফায়দা হয় না, কারন স্থানীয় সংক্রমণে খুবই স্বল্প আকারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়ে থাকে।
বীজ, উদ্ভিদের অবশিষ্টাংশ বা মাটির অভ্যন্তরে ব্যাকটেরিয়ার জীবাণু বেঁচে থাকতে পারে। সংক্রমিত বীজ, মাটিতে বসবাসকারী জীবাণু অথবা উদ্ভিদের ডালপালা ছেঁটে দেওয়ার সময় রোগের বিস্তার হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া পাতার শিরায় বংশবৃদ্ধি করে জল এবং পুষ্টি উপাদানের সরবরাহে বাধার সৃষ্টি করে। যার ফলে, গাছ শুকিয়ে মরে যেতে থাকে। মাটিতে উচ্চ আর্দ্রতার উপস্থিতি বা বায়ুমন্ডলের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ও উষ্ণ তাপমাত্রা (২৪ - ৩২°সেলসিয়াস) এ রোগ বৃদ্ধির পক্ষে সহায়ক হয়।