আলু

আলুর ব্ল্যাকলেগ রোগ

Pectobacterium atrosepticum

ব্যাকটেরিয়া

সংক্ষেপে

  • উদ্ভিদের কাণ্ডের গোড়ায় সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট জল-সিক্ত ক্ষত দেখা যায় যেটা পরবর্তীতে উদ্ভিদের উপরের দিকে ছড়াতে থাকে।
  • কাণ্ডের ভিতরের কোষকলা পচে কালো হয়ে যায়, ফলে পর্যাপ্ত জল ও পুষ্টির সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে।
  • সংক্রমিত কাণ্ডের পাতার কিনারা কুঁকড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিস্তেজ ও ক্লোরোফিল শূন্য হয়ে যেতে পারে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

আলু

উপসর্গ

ব্ল্যাকলেগ সংক্রমণের ফলে প্রাথমিকভাবে উদ্ভিদের কাণ্ডের গোড়ায় জল-সিক্ত ক্ষতদাগের আবির্ভাব হয়। পরবর্তীতে ক্ষতগুলো একত্রিত ও কালো হয়ে কাণ্ডের উপরের দিকে ছড়িয়ে যায়। কাণ্ডের ভিতরের কোষকলা পচে কালো হয়ে যায় এবং উদ্ভিদের উপরের অংশে পর্যাপ্ত জল ও পুষ্টি সরবরাহে বাধা দেয়। সংক্রমিত কাণ্ডের পাতার কিনারা কুঁকড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিস্তেজ হয়ে প্রথমে ক্লোরোফিল শূন্য এবং পরবর্তীতে বাদামী হয়ে যেতে পারে। উদ্ভিদ ঢলে পড়ে এবং টান দিলে সহজেই উঠে আসে। আলুর কন্দ সংক্রমণের স্থান থেকে ধীরে ধীরে পচে কালো হয়ে যেতে শুরু করে। রোগ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সম্পূর্ণ কন্দ অথবা শুধু ভিতরের অংশটা নষ্ট হয়ে যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কোনো জৈবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্ভব নয়।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। জীবাণুর ছড়িয়ে পড়া কমাতে কপারের যৌগ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এই যৌগগুলো মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে।

এটা কি কারণে হয়েছে

সাধারণত আক্রমনের পর অথবা সাথে সাথেই কন্দ পচে যাওয়ার মাধ্যমে রোগের উৎপত্তি শুরু হয়। পচে যাওয়ার জন্য আর্দ্র পরিবেশ উপযোগী হয়। কাদামাটি ও জলবদ্ধ জমিতে চারাগাছ রোপণ, ব্ল্যাকলেগ সংক্রমণের জন্য বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ। উদ্ভিদের পচা মূল অথবা মাটির কাছাকাছি থাকা মরা পাতার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া উদ্ভিদের মধ্যে প্রবেশ করে। পোকামাকড়ের কামড়ে অথবা যন্ত্রপাতির আঘাতে কোনো ক্ষত সৃষ্টি হলে সেটাও জীবাণুর প্রবেশদ্বার রূপে কাজ করতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সুস্থ সবল উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত অথবা প্রত্যয়িত কোন উৎসের বীজ ব্যবহার করুন।
  • সহনশীল প্রজাতি কিনা যাচাই করে নিন।
  • আলুর খণ্ডাংশ ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ কন্দটিই বপণ করুন।
  • ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার ঠাণ্ডা মাটিতে আলু রোপণ করবেন না।
  • পর্যাপ্ত পরিমান সার বিশেষ করে নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করুন।
  • ২-৩ বছর পর পর পর্যায়ক্রমে পরাশ্রয় দান করেনা এরকম ফসল চাষ করে শস্য আবর্তন করুন।
  • মাঠের জল সঠিকভাবে নিষ্কাশন করুন এবং বেশী জলসেচ করা থেকে বিরত থাকুন।
  • নিয়মিত দেখাশোনা করুন এবং সংক্রমিত উদ্ভিদ অপসারিত করুন।
  • ফসল তোলার সময় অথবা অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কাজের সময় উদ্ভিদের গায়ে যাতে আঘাত না লাগে সেদিকে নজর দিন।
  • ফসল ফলানোর সময় ব্যবহার্য যন্ত্রপাতি ও সংরক্ষণাগারকে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।
  • ফসল তোলার পর মাঠ থেকে উদ্ভিদের অবশিষ্টাংশ দূর করে ফেলুন এবং মাটিকে সূর্যের তাপে শুকিয়ে যেতে দিন।
  • শুকনো অবস্থায় আলু তুলুন এবং পর্যাপ্ত বায়ু প্রবাহিত হয় ও তাপমাত্রার কমবেশি হয়না এরকম জায়গায় আলু সংরক্ষণ করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন