অন্যান্য

আপেলের ফায়ারব্লাইট রোগ

Erwinia amylovora

ব্যাকটেরিয়া

সংক্ষেপে

  • পাতা ও ফুল আস্তে আস্তে শুকিয়ে যায় এবং বাদামী বা কালো হয়ে যায়।
  • বাড়ন্ত অঙ্কুর ধূসর সবুজ হয়ে ঢলে পড়ে এবং "মেষপালকের ক্রোক" এর ন্যায় দেখায়।
  • গুরুতর সংক্রমণের ফলে , গাছ আগুন দ্বারা ঝলসানো মনে হয়।
  • কাঠের আভ্যন্তরীণ ভাগ লালচে বাদামী রঙে রঞ্জিত হয়।
  • উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়াতে, সংক্রমিত উদ্ভিদ অংশ থেকে পাতলা সাদা তরল বেড়িয়ে আসে।
  • রোগের লক্ষণ জানার জন্য বাগান পর্যবেক্ষণ করুন।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

2 বিবিধ ফসল
আপেল
নাশপাতি

অন্যান্য

উপসর্গ

ফায়ারব্লাইট রোগ পাতা, ফুল, ফল এবং অঙ্কুরের উপর লক্ষণ দেখে চিহ্নিত করা হয় । পাতা ও ফুল আস্তে আস্তে শুকিয়ে যায় এবং বাদামী বা কালো হয়ে যায় । এরা সারা মৌসুম জুড়ে শাখার সাথে আটকে থাকে । বাড়ন্ত অঙ্কুর ধূসর সবুজ হয়ে ঢলে পড়ে এবং "মেষপালকের ক্রোক" এর ন্যায় দেখায় । রোগের লক্ষণ বাড়ার সাথে সাথে কাণ্ড কুঁচকে যায় এবং মরে যায় । গুরুতর সংক্রমণের ফলে গাছগুলি আগুন দ্বারা ঝলসানো বলে মনে হতে পারে, আর তাই এ রোগটির এমন নাম রাখা হয়েছে । গাছের শাখায় ক্যাঙ্কার দেখা যায় এবং দেখতে অন্ধকার মতো দেখায় । বাকল ফেটে যায় এবং ক্ষত তৈরি হয় । মরা বাকলের নিচে, কাঠ লালচে বাদামী রঙে রঞ্জিত হয় । উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়াতে, সংক্রমিত উদ্ভিদ অংশ থেকে পাতলা সাদা তরল বেড়িয়ে আসে । যদি দমন ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে সংক্রমন গাছের মূল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো গাছ মারা যায় ।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

ফুল আসার সময় নতুন সংক্রমণ দমনে বরদো মিক্সার অথবা কপারের অন্যান্য পণ্য একাধিক বার প্রয়োগ করতে হবে । আবহাওয়া অনুযায়ী সময় মতো প্রয়োগ করতে হবে । উচ্চ আর্দ্রতার সময় ৪-৫ দিন পর পর প্রয়োগ করতে হবে । কিছু তামার পণ্য ফল পৃষ্ঠে ক্ষত তৈরি করে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে । স্ট্রেপটোমাইসেস লিডিকাসের পণ্য প্রয়োগ করলে ব্যাক্টেরিয়ার বিস্তার রোধে কাজ করে ।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। আগুন ধ্বসা রোগ দমন করতে হলে ফুল ফোটার সময় কপার পণ্য ব্যবহার করুন । অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ঔষধও নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে না । ছাঁটাই যন্ত্র ১০ % ব্লিচিং পাউডারের সংমিশ্রণ দিয়ে জীবাণু মুক্ত করতে হবে ।

এটা কি কারণে হয়েছে

এরউইনিয়া এমাইলোভোরা ব্যাকটেরিয়া নামক আপেলের ফায়ারব্লাইট রোগের জন্য দায়ী , যা একই পরিবারের আপেল ,পেয়ার এবং শোভাময় উদ্ভিদকে সংক্রমিত করে । স্টোন ফল যেমন- প্লামস, চেরি, পিক্সস এবং নেকটেইরিন এ রোগে আক্রান্ত হয় না । বসন্ত থেকে শরৎ পর্যন্ত ক্ষতি দেখা যায় । ব্যাকটেরিয়া কুঁড়ি, শাখা বা প্রধান কান্ডের ক্ষত অংশে শীতাবস্থায় থাকে । বসন্তের সময় অনুকূল অবস্থার অধীনে, এটি ভেতরের কোষ কলায় বৃদ্ধি করে, তাদের একটি বাদামী রং প্রদান করে । এটি জল এবং পুষ্টি পরিবহনে বাধা দেয় এবং অঙ্কুর ঢলে পড়ে এবং অবশেষে নীচের দিকে বেঁকে যায় । বৃষ্টির ঝাপটা বা পোকা ও ব্যাকটেরিয়া খোলা ফুল বা দ্রুত ক্রমবর্ধমান অঙ্কুরে প্রেরণ করতে সাহায্য করে । মাটির উচ্চ উর্বরতা এবং মাটির আর্দ্রতা এ রোগে ক্ষতির পরিমান বাড়ায় । গরম অবস্থা বা আঘাত সংক্রমণের তীব্রতা বাড়ায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • যদি প্রতিরোধী জাত পাওয়া যায় তাহলে প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করুন।
  • সারের প্রতি সংবেদনশীল নয় এমন ধরনের স্বল্প-বৃদ্ধির জাত নির্বাচন করুন।
  • রোগের লক্ষণ জানার জন্য বাগান পর্যবেক্ষণ করুন।
  • শীতের শেষে আক্রান্ত শাখা কেটে পুড়িয়ে ফেলুন।
  • গাছে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন দেবেন না।
  • জমির চারপাশে যাতে কোন বিকল্প আবাসী গাছ না থাকে সেটা নিশ্চিত করুন।
  • মারাত্মক আক্রমণের ক্ষেত্রে মূলসহ পুরো গাছ সরিয়ে ফেলুন।
  • ফল আসার সময় গাছে জলসেচ দেবেন না ।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন