আখ

আখের হলুদ পাতা ভাইরাস রোগ

Sugarcane Yellow Leaf Virus

ভাইরাস

সংক্ষেপে

  • পাতার মধ্যশিরা হলুদাভ হয়ে যায়।
  • কচি পাতা শুকিয়ে যায়।
  • গাছ খর্বাকৃতি হয়ে থাকে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

আখ

উপসর্গ

আখের হলুদ পাতার ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে আখ গাছ খর্বাকৃতি, পাতা বর্ণহীন এবং পত্রগুচ্ছের গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়। পাতার নীচের দিকে মধ্যশিরা হলুদাভ হয়ে যায় এবং উপরের দিকে প্রসারিত পাতা থেকে নীচে ৩ থেকে ৬ নম্বর পাতায় লক্ষণ দেখা যায়। পাতার মধ্যশিরা থেকে বাকি অংশে হলুদাভ আভা ছড়িয়ে পড়ে, যতক্ষণ না দূর থেকে পাতাগুলোকে সাধারণ হলুদ বর্ণের লক্ষ্য করা যায়। গুরুতর সংক্রমণ হলে, শীর্ষ মুকুল পাতার সাথে শুকিয়ে যায় এবং উপরের পত্রপল্লবে ঝোপসদৃশ চেহারা পায়। কখনও কখনও তাতে লাল বিবর্ণতা লক্ষ্য করা যায়। পরিপক্ক আখের মধ্যে, এ রোগটি খুব বেশি ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি দূর থেকে সনাক্ত করা যায়। তবে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিৎ যে, লক্ষণ গাছের ধকল, পোকার ক্ষতি বা জলের অপ্রতুলতার পাশাপাশি অন্যান্য কারণগুলোর সাথেও সম্পর্কিত হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাবপোকার ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ জরুরী। জাবপোকা সনাক্তকরণের জন্য পাতার নীচের পৃষ্ঠটি পরীক্ষা করুন এবং যদি তাতে জাবপোকার উপস্থিতি পাওয়া যায় তবে অতি শীঘ্রই কীটনাশক সাবান, নিম তেল বা পাইরিথ্রয়েড সংগঠিত জৈব পণ্য দিয়ে দমন করুন। জাবপোকা খেয়ে থাকে এমন শিকারী প্রাণীও ব্যবহার করতে পারেন ।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ম্যালাথিয়ন @ ০.১% বা ডাইমেক্রন @ ০.২% প্রয়োগ করে পোকামাকড় সৃষ্ট গৌণ সংক্রমণ রোধ করতে পারেন। শুকনো পাতাগুলো অপসারনের পরে প্রতি এক মাস ব্যবধানে দুই ধাপে প্রতি হেক্টরে ১.৫ কেজি ম্যালাথিয়ন প্রয়োগ করুন। কার্বোফিউরান @ ২ কেজি / হেক্টর হারে জমিতে প্রয়োগের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

এটা কি কারণে হয়েছে

রোগের লক্ষণ আখের হলুদ পাতার ভাইরাসের কারণে ঘটে থাকে যা পরোক্ষভাবে এফিড (মেলানাপিস স্যাচারি এবং রোপালোসিফাম মাইডিস) দ্বারা বাহিত হয় অথবা পাতাফড়িং দ্বারা বাহিত হয়ে আখের হলুদ পাতার ফাইটোপ্লাজমা (এসসিওয়াইএলপি) দ্বারা সংক্রামিত হয় । এটি প্রাথমিকভাবে সংক্রামিত বীজআখের মাধ্যমে বাহিত হয় তবে যান্ত্রিকভাবে সংক্রমিত হয় না। অন্যান্য শস্য যেমন গম, বার্লি, জোয়ার এবং যইগুলোও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে, তবে কেবল তখনই আক্রান্ত হয় যখন এসব ফসলের কাছাকাছি জমিতে আখের চাষ হয়। শুষ্ক আবহাওয়ার সময় এ রোগের লক্ষণ ফসলের শেষ অবধি অর্থাৎ পরিপক্ক আখের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সম্ভাব্য ক্ষেত্রে রোগ-মুক্ত সুস্থ সবল বীজ খণ্ড এবং রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করুন।
  • প্রথমে একটি বীজতলাতে বীজ খণ্ড রোপণ করুন এবং পরে সেগুলো ক্ষেতে পুনঃ রোপণ করা হলে তা রোগ সংক্রামণ এড়াতে ভালো অবদান রাখবে।
  • এফিড বাহক পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য হলুদ আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করুন।
  • পরিপক্ক পাতা নিয়মিত ছেঁটে ফেলুন নতুবা জাব পোকা সেখানে আবাস গড়ে তুলবে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন