RGSV
ভাইরাস
ধানের যে কোন বৃদ্ধি পর্যায়ে এ রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে, কিন্তু ফসলের বৃদ্ধি পর্যায় বা কুশি পর্যায়ে বেশি আক্রান্ত হয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলোঃ মারাত্মকভাবে ফসলের বৃদ্ধি থেমে যায়, অধিক কুশি বের হওয়ার কারণে ফসল দেখতে ঝোপালো দেখায় এবং উপরের দিকে বাড়তে থাকে। পাতা খাটো, সরু হয় এবং পাতায় হালকা সবুজ বা হলুদ রঙের ছোপছোপ দাগ দেখা যায়। পাতা কাছ থেকে দেখলে মনে হয়, পাতায় অসংখ্য গাঢ় বাদামী বা লালচে দাগ আছে, যা মাঝে মাঝে পুরো পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। চারা অবস্থায় আক্রান্ত হলে ফলন হয় না।চারার পরবর্তী পর্যায়ে আক্রান্ত হলে গাছ ফল ধারন পর্যায়ে পৌঁছায় কিন্তু শিষ বের হয় না যা ফলনের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
সরাসরি ভাইরাস জনিত রোগ দমন সম্ভব নয়। নিম বীজের নির্যাস ব্যবহার করে বাদামী ঘাস ফড়িং পোকা কমানো যায় এবং ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হ্রাস করা যায়। বাদামী ঘাস ফড়িং পোকা দমনে প্রাকৃতিক শিকারি পোকা যেমন- জলের স্ট্রাইডার, মিরিড বাগ, মাকড়শা এবং বিভিন্ন ডিমে পরজীবিতা করে এমন ওয়াস্প এবং মাছি রয়েছে। বীজ তলা এক দিন ডুবিয়ে রেখে বাদামী ঘাস ফড়িং পোকা দমন করা যায়।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। সরাসরি ভাইরাস জনিত রোগ দমন সম্ভব নয় কিন্তু পোকার সংখ্যা বেশি হলে বালাইনাশক ব্যবহার করুন। অ্যাবামেক্টিন, বুপ্রোফিজেন এবং এটোফেনোপ্রক্স সংঘটিত বালাইনাশক ব্যবহার করুন। যে সব এলাকায় সারা বছর ধান চাষ করা হয় সেখানে বালাইনাশকের ব্যবহার করে বাহক পোকা দমন সম্ভব হয় না ।
নিলাপার্বতা ( এন. লিউজেন্স, এন. বাকেরি এবং এন. মুইরি ) প্রজাতির বাদামী ঘাস ফড়িং পোকা এ ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করে। কীড়া ও বয়স্ক পোকা দীর্ঘ সময় ধরে ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করে যার ফলে সহজেই ভাইরাস নতুন গাছকে আক্রমণ করে। যাইহোক, ঘাস ফড়িং পোকাকে ভাইরাস ছড়াতে হলে আক্রান্ত গাছে কমপক্ষে ৩০ মিনিট খেতে হয়। এ রোগ প্রধানতঃ দক্ষিণ এবং দক্ষিণ এশিয়া, চীন, জাপান, তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন এবং ভারতের যে সব অঞ্চলে কেবল ধান চাষ করা হয় সেখানে দেখা যায়। উপযুক্ত পরিবেশে এন. লিউজিনেস এ ভাইরাসের সাথে ধানের র্যাগড স্টান্ট ভাইরাসও বহন করে এবং মারাত্মকভাবে ফলন হ্রাস করে।