TSV
ভাইরাস
প্রাথমিকভাবে, রোগাক্রান্ত গাছে ছোট, অনিয়মিত পাণ্ডুর বর্ণের অঞ্চল বা পাতার বিবর্ণ হয়ে যাওয়া অঞ্চল লক্ষ্য করা যায় যা ২ থেকে ৫ মিলিমিটার ব্যাসযুক্ত হতে পারে। ধীরে ধীরে ৫ থেকে ১৫ মিলিমিটার ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট, অনিয়মিত মোজাইক নকশার মতো বড় কৌণিক পাণ্ডুর বা বহুবর্ণীয় দাগযুক্ত (হলুদ থেকে বাদামী) অঞ্চল পাতার উপরে গড়ে উঠে। পাতার কোষকলা মরে যায় এবং অকালে গাছ থেকে পাতা ঝরে পড়ে, যার ফলস্বরূপ উদ্ভিদের পত্রপল্লবের আয়তন কমে যায় এবং গাছ খর্বাকৃতির হয়। গাছে ফুলের সংখ্যা কমে যায় এবং বীজকোষ গাছ থেকে ঝরে পড়ে যাওয়ার কারণে ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। রোগাক্রান্ত পাতার শিরাসমূহ হলুদ বর্ণের হয়ে যায়, পুরু এবং বিকৃত আকার ধারন করে। লক্ষণ কচি পাতায় বেশী পরিমানে দেখা যায় যার ফলে আক্রান্ত পাতা সুস্থ পাতার তুলনায় ফ্যাকাশে হয়ে যায় এবং পাতার অগ্রভাগের বৃদ্ধি থমকে যায়। রোগাক্রান্ত অঞ্চল সাধারণত ফ্যাকাশে দেখায়।
তুলার টোবাকো স্ট্রীক ভাইরাসের বিরুদ্ধে সরাসরি কোন জৈবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই। যা'হোক, এ ভাইরাসের বাহক জাবপোকা ও থ্রিপস-কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মধ্যে থেকে বেছে নেওয়ার অনেক সুযোগ আছে।
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ভাইরাস ঘটিত রোগের নিয়ন্ত্রণ সরাসরি করা সম্ভব নয় কিন্তু ভাইরাস বহনকারী পরজীবি পতঙ্গ যেমন থ্রিপস, জাবপোকা ও অন্যান্য শোষক পতঙ্গকে কিছু পরিমানে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। থ্রিপস ও জাবপোকার বিরুদ্ধে রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে ও এ সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য তথ্যভাণ্ডার খুঁজে দেখতে পারেন, উদাহরন স্বরূপ , ফিপ্রোনিল ( ২ মিলি/লি ) বা থাইয়ামেথক্সাম ( ০.২ গ্রাম/লি)।
এ রোগের লক্ষণ ভাইরাসের কারনে ফুটে ওঠে এবং এ ভাইরাস বেশ কিছু উদ্ভিদে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে যেমন টোব্যাকো [যার ফলে এ নাম ব্যবহার করা হয়}, অ্যাস্পারাগাস, স্ট্রবেরী , সয়াবীন, সূর্যমুখী গাছ। এ ভাইরাস বীজবাহিত হওয়ায়, রোগের প্রাথমিক উৎস তাই রোগাক্রান্ত বীজ। দ্বিতীয় পর্যায়ে এক চারাগাছ থেকে অন্য চারাগাছে পরজীবি পতঙ্গের মাধ্যমে বা জমিতে কাজ করার সময়ে গাছের গায়ে আঘাতের ফলে সৃষ্ট ক্ষতের মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। লক্ষণ ও রোগের প্রকোপ কতটা হবে তা তুলার জাতের উপর, আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতির (তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা) উপর এবং বৃদ্ধির পর্যায়ে গাছ যে সময় থেকে আক্রান্ত হয় তার উপরে নির্ভর করে। বীজ থেকে সংক্রমণ হলে যে মারাত্মক ক্ষতিসাধন হয়, পরবর্তীকালে জাবপোকার দ্বারা আক্রান্ত হলে তা তুলনামূলকভাবে কম মারাত্মক হয়।