সয়াবিন

মটরশুঁটির হলুদ মোজাইক ভাইরাস

BYMV

ভাইরাস

সংক্ষেপে

  • পাতার শীর্ষ বিবর্ণ হয়, মোজাইকের মত দেখতে হয় এবং হলুদ দাগের ছোপ ছোপ এলাকা দেখা যায়।
  • পত্রপল্লব বিকৃত হতে পারে এবং পাতার কিনারা নিচের দিকে বেঁকে যেতে পারে।
  • ফল অপরিপক্ক বা বিকৃত এবং স্বল্প সংখ্যক বীজ উৎপন্ন হয়।
  • সর্বোপরি, গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

4 বিবিধ ফসল

সয়াবিন

উপসর্গ

আবাদকৃত ফসল ও এর জাত, ফসলের বাড়ন্ত পর্যায় ও সংক্রমণের সময় এবং পরিবেশের অবস্থার উপর রোগের লক্ষণ নির্ভর করে। পাতার অগ্রভাগের বিবর্ণতা সৃষ্টি করে, পাতলা স্তর এবং হলুদ রঙের ছোপ ছোপ দাগের সৃষ্টি করে। যাইহোক, সব মিলে পত্রপল্লবের উপর বিসদৃশ হলুদ ও সবুজ বর্ণের বর্ণছটার সুস্পষ্ট লক্ষণ ফুটে ওঠে। কোন কোন ক্ষেত্রে গাঢ় সবুজ রঙের কোষকলা আশপাশের হলুদ কোষকলার চেয়ে কিছুটা উপরের দিকে ওঠানো দেখায়। কোন কোন ফসলের শিরা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। অসম বৃদ্ধির ফলে পাতা বিকৃত হয় এবং কিনারা নিচের দিকে কুঁকড়ে যায়। যদিও ফল সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, তবুও সেগুলো মাঝে মধ্যে অপুষ্ট হয় ও এতে স্বল্প সংখ্যক বীজ উৎপন্ন হয়। সর্বোপরি, গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

শিমের হলুদ মোজাইক ভাইরাসের বিস্তার দমনের জন্য জাবপোকার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরী। পাতার নীচে জাব পোকা আছে কিনা তা পরীক্ষা করুন, যদি পাওয়া যায়, তা হলে অতি সত্ত্বর সাবান জলের সাথে কীটনাশক, নিম তেল বা পাইরিথ্রয়েড সংঘটিত জৈব উপাদান প্রয়োগ করুন। জাবপোকা ভোগী শিকারি পোকাও ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ভাইরাসের কোন দমন ব্যবস্থা নেই এবং জাবপোকার সংখ্যা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন। প্রকৃতপক্ষে, জাবপোকা দ্রুত দমন করাই ভাইরাস ছড়ানো বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট নয়। যাইহোক, এগুলো যথেষ্ট ব্যয়বহুল এবং নতুন গজানো শাখায় ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পর্যায়ক্রমে দমন ব্যবস্থা নিতে হবে। শিমের ফলনও কমে যেতে পারে।

এটা কি কারণে হয়েছে

মটরশুঁটির এ রোগের লক্ষণ শিমের হলুদ মোজাইক ভাইরাস (BYMV)-এর কারনে ঘটে। মাঝে মধ্যে অন্য ভাইরাসের সাথে সহ-সংক্রমণ করে বিভিন্ন প্রকার লক্ষণ দেখায়, উদাহরণ হিসেবে কুমড়ার মোজাইক ভাইরাস (CMV)এর কথা বলা যায়। মটরশুঁটি ছাড়াও এ জীবাণু অন্য গুরুত্বপূর্ণ শিমজাতীয় ফসলও আক্রমণ করতে পারে, যেমন- চিনাবাদাম, সয়বিন, ব্রডবিন। বিভিন্ন প্রজাতির ক্লোভার,আলফালফা এবং লুপাইনি গাছ শীতাবস্থায় পোষক হিসেবে কাজ করে। কিছু ফুলের গাছ যেমন গ্লাডিওলাস অন্য পোষক গাছ হিসেবে কাজ করে। এ ভাইরাস বাহক পোকার মাধ্যমে গাছ থেকে গাছে বাহিত হয়, যদিও কিছুটা বীজবাহিত বলেও সন্দেহ আছে। ৮০টিরও বেশী প্রজাতির জাবপোকা এ ভাইরাস অস্থায়ীভাবে বহন করতে পারে। এ রোগ, সংক্রমিত ডাল দ্বারা শাখা কলমের মাধ্যমে বা হাতেনাতে পরিচর্যার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • বেশী ঘন করে বীজ বপন করুন যাতে গাছের ঘনত্ব বাড়ে।
  • উত্তম ফসল চক্রের পরিকল্পনা নিন, বিশেষ করে অতীতে যদি এ জমিতে রোগ সংক্রমণের অতীত ইতিহাস থাকে।
  • আলফালফা, ক্লোভার বা অন্য কোন কলাই (শিম) জাতীয় ফসল বা ফুল যেমন- গ্লাডিওলাসের কাছে মটরশুঁটি বপন যেন না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
  • ক্ষেত এবং এর আশপাশ আগাছামুক্ত রাখুন।
  • উপকারী পোকার বিচরণ বাড়াতে স্বল্প মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করুন।
  • জাবপোকার জীবনচক্র বাধাগ্রস্ত করতে প্লাস্টিক বা জৈবিক মাল্চ ব্যবহার করুন।
  • প্রতিবন্ধক ফসল হিসেবে জমির চারিদিকে দানা জাতীয় ফসল চাষ করতে হবে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন