ULCV
ভাইরাস
তিনটি উপপত্র বিশিষ্ট পাতার তিন নম্বর পাতা স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়ে যায়। এ পাতা অন্যান্য সাধারণ পাতার তুলনায় হালকা সবুজ রঙের হয়। লালচে বিবর্ণতাসহ পাতার বোঁটা খাটো হয়ে যায় এবং পাতার শিরা পুরু হয়ে যায়। রোপণের এক মাস পর পাতা সঙ্কুচিত হয়ে কুঁচকে যায় এবং চামড়ার ন্যায় রুক্ষ লক্ষণ দেখা যায়। পরবর্তী বৃদ্ধির পর্যায়ে বাহক পোকার মাধ্যমে ফসল সংক্রামিত হয় এবং সাধারণতঃ নতুন পাতাতে লক্ষণ বেশি দেখা যায় কিন্তু পুরাতন পাতা উপসর্গ মুক্ত থাকে। পাতার শিরায় স্পষ্ট হলুদ দাগ দেখা যায় এবং ফুল বিকৃত হয়।ফসলের বৃদ্ধি থেমে যায় এবং ছোট ছোট ফুলের কুঁড়ি দেখা যায়। সতেজ ফুলের অভ্যন্তরে বিবর্ণ এবং অস্বাভাবিক বড় আকারের বীজ দেখা যায়। শুঁটি ও বীজের গঠন মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়, যার ফলে ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিভিন্ন প্রকার জৈবিক দমন ব্যবস্থা এ রোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। সুইডোমোনাস ফ্লুরেসেন্স-এর স্ট্রেইন মাটি বা পাতায় ছিটিয়ে দিলে বাহক পোকার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। মাখনের টাটকা দুধ এবং ক্যাসিন এ রোগ বিস্তার প্রতিহত করতে পারে। মিরাবিলিস জালাপা, ক্যাথারথনস রোজিয়াস, ডাতুরা ধাতু, বুগাইনভিলা স্পেক্টবিলিস, বোয়ারহাভিয়া ডিসফুসা এবং এজাডিরেক্টা ইন্ডিকার কয়েকটি প্রজাতির নির্যাস এ ভাইরাস দমনে ভাল কাজ করে।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ভাইরাসের বিরুদ্ধে কোনও রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা নেই কিন্তু বাহক পোকার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আন্তঃপরিবাহী কীটনাশক প্রয়োগ করুন। ইমিডাক্লোপ্রিড ৭০ ডব্লিউএস @ ৫ মিলি /কেজি দ্বারা বীজ শোধনের সুপারিশ আছে। ডাইমিথোয়েট সমৃদ্ধ কীটনাশক পত্রপল্লবে স্প্রে করা যেতে পারে। ২,৪-ডিক্সোহেক্সাহাইড্রো ১,৩,৫-ট্রাইজিন (ডিএইচটি) ভাইরাসের বিস্তার রোধ করে এবং পোকার ডিম ফোটানোর সময় বাড়ায়।
ভাইরাস প্রধানত বীজ বাহিত হয় যার ফলে রোগের প্রাথমিক সংক্রমণ চারায় দেখা দেয়। পরবর্তীতে বাহক পোকা ফসলের নির্যাস খেয়ে এক গাছ থেকে অন্য গাছে ভাইরাস রোগ ছড়ায়। এর জন্য জাব পোকার কিছু প্রজাতি ( যেমন- অ্যাপিস ক্র্যাসসিভোরা এবং এ. গসসিপি), সাদা মাছি (বেমিসিয়া ট্যাবাকসি) এবং পাতা খাওয়া বিটল পোকা (হেনোসিপিলচেনা ডোডকাস্টিগমা) দায়ী। ভাইরাস সংক্রমণের পরিমাণ এবং রোগের তীব্রতা ফসলের সহনশীলতার মাত্রা, বাহকের উপস্থিতি এবং বিদ্যমান আবহাওয়ার পরিস্থিতি দ্বারা নির্ধারিত হয়। সংক্রমণের সময়ের উপর নির্ভর করে ভাইরাস ৩৫-৮১% পর্যন্ত শস্য উৎপাদন হ্রাস করতে পারে।