RTBV
ভাইরাস
RTBV এবং RTSV উভয় ভাইরাস দ্বারা বা যে কোনো একটি দ্বারা ধান ক্ষেত আক্রান্ত হতে পারে। ধানের সবুজ পাতা ফড়িং এ রোগের বাহক। দ্বিতীয় বার আক্রান্ত গাছ খর্বাকৃতির হয় ও কুশির সংখ্যা কমে যায় এবং ‘টুংরো ’ নামে বৈশিষ্ট্যমূলক লক্ষণ প্রকাশ করে। পাতার অগ্রভাগ থেকে গোড়ার দিকে হলুদ বা হলুদাভ কমলা বর্ণ ধারন করতে থাকে। বিবর্ণ পাতায় অনিয়মিতভাবে গাঢ় বাদামী বর্ণের ছোট ছোট ফুস্কুড়ি থাকতে পারে। ছোট গাছের শিরা পাণ্ডুর রোগ প্রদর্শন করে। RTBV বা RTSV যে কোন একটি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত গাছে মৃদু লক্ষণ প্রকাশ পায় ( উদাহরণস্বরূপ , খুব কম খর্ব হওয়া এবং পাতা হলুদ না হওয়া )। এ লক্ষণ পটাশিয়ামের ঘাটতিজনিত রোগের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে কিন্তু টুংরো ভাইরাসের আক্রমণ ধানক্ষেতের অংশবিশেষে দেখা যায় যেখানে পটাশিয়ামের ঘাটতিজনিত লক্ষণ গোটা ধানক্ষেত জুড়েই লক্ষ্য করা যায়।
সবুজ পাতা ফড়িংকে আকর্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য আলোর ফাঁদ ব্যবহার করুন এবং পোকার সংখ্যা পর্যবেক্ষণ করুন। ভোরে আলোর ফাঁদের আশেপাশের পোকাগুলো ধরে সরিয়ে ফেলুন অথবা কীটনাশক স্প্রে করে/গায়ে সরাসরি ছিটিয়ে মেরে ফেলুন। এটা প্রত্যেকদিনই নিয়ম করে করা উচিৎ।
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ধান রোপণের ১৫ এবং ৩০ দিন পর বুফ্রোফেজিন অথবা পাইমেট্রোজিন প্রয়োগে কিছুটা সাফল্য আসে। পাতাফড়িং নিয়ন্ত্রণের জন্য কীটনাশক ব্যবহার করা কার্যকর নয় কারণ এরা খুব দ্রুত পাশের জমিতে চলে যায় এবং অত্যন্ত অল্প সময়ে এ রোগ ছড়ায়। জমির আশেপাশের ফসলেও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। ক্লোরপাইরিফস, ল্যামডা সাইহ্যালোথ্রিন, বা সিনথেটিক পাইরিথ্রয়েডের মিশ্রণ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, কারন এসব কীটনাশক পাতাফড়িং আংশিকভাবে প্রতিরোধ করতে পারে।
নেফোটেটিক্স ভাইরিসেনস (Nephotettix virescen ) নামক এক ধরনের পাতা ফড়িং দ্বারা এ ভাইরাস ছড়ায়। যে সকল উচ্চফলনশীল স্বল্পায়ু ধান বছরে দুবার চাষ করা হয়, সেগুলোতে টুংরো দেখা যায়। ধান গাছ একবার টুংরো ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে গেলে সেটা আর আরোগ্য হয় না। সরাসরি রোগ নিয়ন্ত্রণের চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা বেশি কার্যকর। দ্বি-শস্য আবাদ এবং বংশগত অসামঞ্জস্যতাই ধানের টুংরো আক্রমণের প্রধান কারণ। শুষ্ক বা উঁচু জমির চেয়ে সেচ নির্ভর জমির ধান এ রোগে অধিক পরিমাণে আক্রান্ত হয়। গাছের অবশিষ্টাংশ এবং নাড়াও এ রোগ সংক্রমণের অন্য আরেকটি উৎস।