CPsV
ভাইরাস
এ রোগের লক্ষণগুলো লেবু ফসলের বলয় দাগ সৃষ্টকারী ভাইরাসের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না। এরা পাতা, ফল, বাকল, কাণ্ড, শিকড় ও ডালপালায় প্রকাশিত হয়। পাতায় হলুদ রঙের দাগ বা পাতলা পর্দা থেকে বিবর্ণ হয়ে যাওয়াজনিত বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায়, যা পাতাকে ভঙ্গুর করে ফেলে। পাতা পরিণত হবার সাথে সাথে লক্ষণগুলো হালকা হয়ে আসে। সোরোসিস আক্রান্ত ফলে বলয় আকৃতির হলুদ ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। যাহোক, সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল, বাকলের ক্ষয়প্রাপ্তি। ব্লিস্টার বা বুদবুদের মত লক্ষণ দেখা যায়, যা পরবর্তীতে ফেটে আলগা হয়ে যায়। এর ফলে বাকলে ছোপ ছোপ সরু দাগ দেখা যায়। ছোট ছোট এ দাগ বা পাতলা পর্দা পরবর্তীতে পুরো কাণ্ড ও প্রধান প্রধান শাখাগুলোতে বিস্তৃত হয়। ক্ষতস্থানের চারপাশ প্রায়ই আঠালো হয়ে যেতে দেখা যায়। সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পেলে বাকল ও কাঠের ভেতরের অংশ আঠা দ্বারা পূর্ণ হয় এবং মারা যায়।
এ রোগের বিরূদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন জৈবিক দমন ব্যবস্থা সহজলভ্য নয়। এ ব্যাপারে আপনার কোন উপায় জানা থাকলে অনুগ্রহ করে আমাদের জানান।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ভাইরাস ঘটিত রোগের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। লেবু ফসলের বাগানে সোরোসিস উপস্থিত থাকলে গাছ ছেঁটে রাখার সামগ্রী বা বাডিং সামগ্রী ব্লিচ দ্রবণে ডুবিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এ রোগ দমনের সর্বোত্তম পন্থা হল, গ্রাফটিংএর জন্য প্রত্যয়িত নীরোগ কুঁড়ি ব্যবহার করা।
লেবু ফসলের পোরোসিস ভাইরাসের কারণে এসব লক্ষণ প্রকাশিত হয়, যা বৈশ্বিকভাবে লেবু ফসলের সবচেয়ে ক্ষতিকর ভাইরাস হিসেবে পরিচিত। এটি মূলতঃ গ্রাফটিংএর সময় সংক্রমিত কুঁড়ি বা যন্ত্রপাতি দ্বারা বিস্তৃত হয়। মাঝে মাঝে, এ রোগটি মূলের প্রাকৃতিক গ্রাফটিংএর মাধ্যমে সুস্থ গাছে বিস্তৃত হয়। লেবু ফসলের কিছু প্রজাতির বীজের মাধ্যমেও এ রোগ ছড়ায়। প্রাকৃতিকভাবে অলপিডিয়াম ব্রাসিসি ছত্রাক এবং অজানা বায়ুবাহিত বাহকের মাধ্যমে এর বিস্তারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কুঁড়ি প্রত্যয়ন কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে অনেক জায়গায় সোরোসিসের সংক্রমণ হ্রাস করা গেছে। মূলতঃ কমলা ও আঙুর আক্রান্ত হয়ে তবে মাণ্ডারিন, ট্যাঞ্জারিন, কাগজী লেবু, পোমেলো এবং লেবুতেও লক্ষণ প্রকাশিত হয়।