PapMV
ভাইরাস
রোগের লক্ষণ সবথেকে বেশী করে নবীন পাতার উপরেই ফুটে ওঠে এবং পাতার উপরে মৃদু চিত্রবিচিত্র নকশা দেখা যায় ও পাতা সামান্য বিকৃত আকার ধারণ করে। এই রোগের প্রভাবে হয় পাতার উপরে গাঢ় সবুজ ফোস্কার মতো দাগ দেখা যাবে নতুবা পত্রফলক হলুদাভ সবুজ বর্ণ ধারণ করবে। রোগের পরবর্তী পর্যায়ে, পত্রশিরার মধ্যবর্তী স্থান ফাঁকা দেখা যাবে, পত্রফলক কিছুটা খর্বাকৃতি হবে এবং পাতা নিচের দিকে গুটিয়ে যাবে যদিও পাতার ঋজুভাব বজায় থাকবে। উদ্ভিদের অন্য অংশ (কাণ্ড, ফুল) কিন্তু প্রভাবিত হয় না। উদ্ভিদের বৃদ্ধি পরিমিতভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং তা অন্য সুস্থ উদ্ভিদের সঙ্গে তুলনা করলেই বোঝা যায়।
চাষের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিকে জীবাণুমুক্ত করুন বা এগুলোকে উনুনে ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১ ঘন্টা ধরে উত্তপ্ত করলে তা ভাইরাসকে মেরে ফেলতে পারে। ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি বা দস্তানাকেও ০.৫২৫% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দ্রবণে চুবিয়ে রেখে পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ভারটিসিলিয়াম লেকানির উপর ভিত্তি করে প্রস্তুত জৈব-ছত্রাকনাশকও জাবপোকার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। রোগের শুরুতে জীবাণুনাশক সাবান ব্যবহার করলেও তা কার্যকরী হয়।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ভাইরাস ঘটিত এই রোগের জন্য কোন রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই। জাবপোকাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কতগুলি রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা যায় যেমন, সাইপারমেথ্রিন (cypermetrhin), ক্লোরোপাইরিফস (chlorpyrifos), ইমিডাক্লোপ্রিড (imidacloprid), পাইরিমিকার্ব (pirimicarb) বা কার্বোসালফান (carbosulfan)।
এই রোগের ভাইরাস পেঁপে গাছকেও যেমন আক্রমণ করে তেমনি অন্য শস্যকেও আক্রমণ করে। উদাহরণ হিসাবে লাউ জাতীয় উদ্ভিদের কথা বলা যায়। এই জীবাণু জাবপোকা বা গাছে যন্ত্রপাতির দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতের মাধ্যমে এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছড়িয়ে যায়। অন্য যে উপায়ে এই রোগের জীবাণু ছড়িয়ে যায় তা হলো রোগাক্রান্ত উদ্ভিদের অংশ দিয়ে কলম তৈরী করা বা উদ্ভিদে যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সৃষ্ট ক্ষতের মাধ্যমে। এই ভাইরাস আসলে পেঁপের ক্ষেত্রে স্বল্প গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু যদি রোগের শর্তগুলি সঠিকভাবে মিলে যায় তবে তা ফসলের হ্রাস ঘটায়।