তুলা

বীজকোষের ছত্রাকজনিত পচন জটিলতা

Fusarium/Aspergillus/Phytophthora/Rhizopus/Diplodia

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • বীজকোষ গাঢ় বিবর্ণতা প্রদর্শন করে ও নরম হয়ে যায়।
  • তুলার বীজমুখ অকালে ফেটে যায় ও মাটিতে খসে পড়ে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

তুলা

উপসর্গ

তুলার বীজকোষের ছত্রাকজনিত পচনকে রোগ লক্ষণের অগ্রগতি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। প্রাথমিকভাবে, কচি সবুজ তুলার বীজকোষের উপরে ছোট বাদামী বা কালো দাগের আবির্ভাব হয়, যা পরে সমগ্র বীজকোষকে আবৃত করে দেয়। সংক্রমিত বীজকোষ গাঢ় বাদামী থেকে কালো হয়, নরম হয়ে পড়ে, এবং দেখে জল-সিক্ত বলে মনে হয়। রোগ যত বৃদ্ধি পায়, এটি ভিতর দিকের টিস্যুগুলিকে ভেদ করে, বীজ ও তন্তু ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। গুরুতর ক্ষেত্রে, ছত্রাক বীজকোষের অকালে ফেটে যাওয়ার জন্য দায়ী থাকে, যার ফলে দাগ ধরা ও তুলার তন্তুর মান কমে যায়। আর্দ্র অবস্থায়, বীজকোষে ছত্রাকঘটিত বৃদ্ধি দৃশ্যমান হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

জৈব ও জীবতাত্ত্বিক পদ্ধতি ব্যবহার করে সম্পূর্ণভাবে তুলার বীজকোষের পচন নিয়ন্ত্রণ করাটা চ্যালেঞ্জের কাজ। গবেষকরা ট্রাইকোডার্মা ভিরিডির মতো বিকল্প পণ্য নিয়ে গবেষণা করছেন, কিন্তু এটি এখনো পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য উপলব্ধ নয়।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

কপার অক্সিক্লোরাইড ছড়িয়ে ও পাতা এবং বীজে ম্যানকোজেব স্প্রে করে রোগ ছড়িয়ে পড়া প্রতিহত করা যায়। এছাড়াও, বিভিন্ন প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে মোকাবিলার জন্য একটি সাসপেনশন কনসেন্ট্রেট তৈরী করতে ফ্লাক্সাঅ্যাপিরোক্সাড ও পাইরাক্লস্ট্রোবিন মিশ্রিত করুন। যখন আপনি প্রথম রোগটির আবির্ভাব বুঝতে পারবেন তখন এই মিশ্রণ প্রয়োগ করুন এবং সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৫ দিন পরে পুনরায় এই ব্যবস্থাটির পুনরাবৃত্তি করুন। কীটনাশক বা যে কোন রাসায়নিক পণ্য ব্যবহার করার সময়ে সুরক্ষামূলক পোষাক ব্যবহার করা ও সাবধানে লেবেলের গায়ে লেখা নির্দেশাবলী পড়ে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। দেশ থেকে দেশান্তরে নিয়মবিধি ভিন্ন ভিন্ন হয়, তাই আপনার অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য সুনির্দিষ্ট নিয়মবিধি মেনে চলার ব্যাপারটি নিশ্চিত করুন। এটি সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয় এবং সফল প্রয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি করে।

এটা কি কারণে হয়েছে

তুলার বীজকোষে ছত্রাকজনিত পচন রোগ মাটি ও বীজে অবস্থিত বিভিন্ন ছত্রাকের মাধ্যমে ঘটে। অতিরিক্ত নাইট্রোজেন, অতিরিক্ত জল, বৃষ্টি, ও উচ্চ আর্দ্রতা ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তোলে। গাছের নীচের অংশে খোলা নেই এমন বীজকোষগুলি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী এবং সাধারণত বপনের ১০০ দিন পরে দেখা দেয়। ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া বোলওয়ার্ম ও রেড কটন বাগের মাধ্যমে বীজকোষের ফাটল বা ক্ষতের মাধ্যমে উদ্ভিদদেহে প্রবেশ করে। সংক্রমিত বীজকোষে থাকা ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট ছত্রাকগুটির মাধ্যমেও রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সুস্থ বীজ ব্যবহার করুন।
  • অতিরিক্ত নাইট্রোজেন প্রয়োগ থেকে বিরত থাকুন এবং সঠিকভাবে জলসেচ দিন।
  • দেরী করে বীজবপন করবেন না।
  • দুটি গাছের মধ্যে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা রাখুন।
  • বর্ষা মরশুমে লক্ষণ খুঁজে দেখতে গাছের নীচের অংশে পরিপক্ক বীজকোষ নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
  • বোলওয়ার্ম ও রেড কটন বাগের মতো বালাইকে নিয়ন্ত্রণ করার নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে কিন্তু এই ক্ষেত্রেও তা গুরুত্বপূর্ণ।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন