তরমুজ

কটনি লিক

Pythium aphanidermatum

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • ফল বাদামী, নরম, ও পচে যায়।
  • ফলের উপরে সাদা, তুলোর মতো বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়।
  • নতুন অঙ্কুরিত চারাগাছের মৃত্যু হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

4 বিবিধ ফসল
শসা
তরমুজ
কুমড়া
ধুন্দুল

তরমুজ

উপসর্গ

লক্ষণ শুরু হয় যখন মাটির সরাসরি সংস্পর্শে থাকা ফলের উপরে বাদামী অংশ নরম হয়ে পড়ে ও পচে যায়। আর্দ্র আবহাওয়াতে, সাদা তুলোর মতো বৃদ্ধি দেখা যায় যা ফলের এই পচে যাওয়া অংশকে আবৃত করে। বীজতলায়, এই একই প্যাথোজেন কচি ও পুরাতন উভয় চারাগাছের মৃত্যুর কারণ হয়ে ওঠে। প্যাথোজেন উদ্ভিদের শিকড়েরও ক্ষতি করতে পারে, যার ফলে শিকড় পচে যায়: পাতা এই সময়ে হলুদ হয়ে যায় কারণ উদ্ভিদ পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না। পাইথিয়ামের কারণে পচে যাওয়া ফলকে ফাইটোপথোরা ও স্কেলোরোটিনিয়ার কারণে পচে যাওয়া ফলের মতো দেখতে লাগে। দুই ধরণের ব্যাকটেরিয়াকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে, মনে রাখুন: পাইথিয়ামকে তুলোর মতো বা শেভিং ক্রিমের মতো দেখতে লাগে। ফাইটোপথোরাকে ময়দা বা পাউডারের মতো দেখতে লাগে। স্কেলোরোটিনিয়ার ঘন সাদা তুলোর মতো বৃদ্ধি হয়, সঙ্গে কালো, শক্ত হয়ে থাকা দাগ দেখা যায় যা উভিদের কাণ্ডকেও প্রভাবিত করে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

কোন প্রত্যয়িত ও উপযুক্ত জৈবিক দমন ব্যবস্থার কথা জানা নেই।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

একবার লক্ষণ দেখা দিলেই, আক্রান্ত চারাগাছ বা ফলকে আর রক্ষা করা যায় না। সংক্রমণকে প্রতিহত করতে, বীজ ও চারাগাছে রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা প্রয়োগ করুন। বীজ বপনের আগেই দমন ব্যবস্থা নিন এবং সুপারিশকৃত ঘনীভূত দ্রবণে চারাগাছকে চুবিয়ে নিন। অতিরিক্ত হিসাবে, মাটির উপরিতলে দমন ব্যবস্থা প্রয়োগ করুন। এই সকল দমন ব্যবস্থার কার্যকারিতা ছত্রাকনাশকের উপরে নির্ভর করে যা জলসেচ বা বৃষ্টির জলের মাধ্যমে মাটির উপরিতলের গভীরে প্রবেশ করে।

এটা কি কারণে হয়েছে

কটনি লিক রোগের সৃষ্টিকারী প্যাথোজেন মাটিতেই বসবাস করে! উষ্ণ, আর্দ্র আবহাওয়া এর বৃদ্ধির পক্ষে অনুকূল এবং এই প্যাথোজেন বদ্ধ জল পছন্দ করে! এটি সেচের জলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি উদ্ভিদের কোষে সহজেই প্রবেশ করে উদ্ভিদের পুষ্টি গ্রহণকে বন্ধ করে দেয় এবং আক্রান্ত অংশের ক্ষয় ঘটায়। উদ্ভিদের ছাঁটাই, ডালপালা কেটে পরিষ্কার করা বা পাতা অপসারণ করলে উদ্ভিদ রোগের প্রতি আরও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, যার ফলে প্যাথোজেন সহজেই ছড়িয়ে পড়ে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • মাটিতে যাতে উপযুক্ত জলনিকাশী ব্যবস্থা থাকে তা নিশ্চিত করুন।
  • যদি সম্ভব হয় তাহলে চাষযোগ্য জমিকে মাটি দিয়ে উত্থিত করুন ও ফোঁটা ফোঁটা করে জলসেচের ব্যবস্থা করুন।
  • অনাবাসী উদ্ভিদ যেমন ঘাস রোপন করে ও দানা শস্য চাষ করে ফসল আবর্তন করুন।
  • শীতল আবহাওয়াযুক্ত দিনে উদ্ভিদ রোপন করুন।
  • দুটি উদ্ভিদের মধ্যে বিস্তৃত জায়গা রাখুন যাতে ঘন লতাপাতার জঙ্গল তৈরী না হতে পারে।
  • ফল ও মাটির মধ্যে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করুন, যা ছোট উৎপাদকদের জন্য বাস্তবসম্মত হবে।
  • ফলকে তার, কাঠ, বা লতাপাতার উপরের দিকে রাখুন।
  • শুষ্ক অঞ্চলে ফোঁটা ফোঁটা করে জলসেচের ব্যবস্থা সহ প্লাস্টিক মালচ ব্যবহার করুন, কিন্তু বৃষ্টিস্নাত অঞ্চলে সাবধান থাকুন কেননা এই ব্যবস্থার ফলে উদ্ভিদের গোড়ায় জল জমে যেতে পারে যা পচনের কারণ হয়।
  • নিয়মিতভাবে আপনার চাষের সরঞ্জাম, পাত্র, ও ট্রে পরিষ্কার ও জীবাণুনাশক রাসায়নিক দ্রবণ দিয়ে জীবাণুমুক্ত করুন, এবং কলুষিত মাটি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
  • আর্দ্র আবহাওয়াতে ফসল আহরণ ও আহরিত ফল প্যাকেটবন্দী করবেন না।
  • সুস্থ-দেখতে ফলকেই একমাত্র আহরণ ও প্যাকেটবন্দী করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন