আম

আমের পার্শ্ব মুকুল বিকৃতি

Fusarium mangiferae

ছত্রাক

5 mins to read

সংক্ষেপে

  • পার্শ্বস্থ মুকুল পাতা এবং ফুলের অস্বাভাবিক বিকৃতি ঘটে।
  • গুচ্ছকার অবয়ব, খর্বাকৃতির বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়।
  • দুই ধরণের বিকৃতি দেখা যায়: অঙ্গজ বিকৃতি এবং ফুলের বিকৃতি।
  • ফুল এবং পার্শ্ব মুকুল বিকৃতি লাভ করে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

আম

উপসর্গ

ফুসারিয়াম ম্যানগিফেরার ছত্রাক প্রজাতি দ্বারা এ রোগ সৃষ্ট হয়। অঙ্গজ বিকৃতি সাধারণত কচি চারাতে দেখতে পাওয়া যায়। চারা ছোট ছোট শল্কাকার পাতা দিয়ে তৈরি ছোট মঞ্জরী গঠন করে, এবং ডগার শীর্ষে একটি গোছা সৃষ্টি করে। চারার বৃদ্ধি থেমে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত মারা যায়। শীর্ষভাগে পরিবর্তনের ধারা পুষ্পমঞ্জরীর বিরূপ অবয়ব দেখা যায়। বড় আকারের ফুলের কারণে বিকৃত শীর্ষভাগগুলো পুঞ্জীভূত এবং ঘন পাতায় ভরে যায়। আক্রান্তু ডগা ঘন শাখা-প্রশাখা এবং বিকৃত ফুলে ভরে যায়। পাতা এবং কাণ্ডের কুঁড়ির ক্রমবর্ধমান অংশে ছোট পর্বমধ্য এবং ভঙ্গুর বিকৃত পাতার সৃষ্টি করে। সুস্থ সবল গাছের তুলনায় সংক্রামিত গাছের পাতা উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট হয়ে থাকে। একই সাথে স্বাভাবিক এবং বিকৃত বৃদ্ধি কোন আম গাছে চলমান থাকতে পারে।

Recommendations

জৈব নিয়ন্ত্রণ

সংক্রমণ হ্রাসে ধাতুরা স্ট্রোমোনিয়াম (অ্যালকালয়েডস), ক্যালোট্রপিস জিগ্যান্তিয়া এবং নিম গাছের (আজাডির‍্যাক্টিন) পাতার নির্যাস ব্যবহার করুন। ট্রাইকোডার্মা হার্জিয়ানাম, সংক্রামকের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর ভূমিকা রাখে। সংক্রামিত গাছপালা ধ্বংস করুন। রোগমুক্ত চারা ব্যবহার করুন। সংক্রামিত গাছের সায়ন ব্যবহার পরিহার করুন।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ক্যাপ্টান ০.১% রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নিয়ন্ত্রণ উপাদান হিসাবে ফলিডল বা মেট্যাসিস্টক্স নিয়ন্ত্রক কীটনাশক হিসেবে স্প্রে করুন। ফুল ধরার পর্যায়ে ১০, ১৫ বা ৩০ দিনের ব্যবধানে কার্বেনডাজিম ০.১% স্প্রে করুন। ১০০ বা ২০০ পিপিএম হারে ন্যাপথ্যালিন অ্যাসিটিক অ্যাসিড (এনএএ) পরবর্তী মৌসুমে রোগের প্রকোপ হ্রাস করে। ফুল ফোটার আগে এবং ফল সংগ্রহের পরে জিংক, বোরন এবং কপার সংগঠিত উপাদান স্প্রে করলে, ফল বিকৃত হওয়ার ধারা নিয়ন্ত্রণ বা হ্রাস প্রমাণিত হয়েছে।

এটা কি কারণে হয়েছে

এ রোগ মূলত সংক্রামিত চারার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মাটির অতি আর্দ্রতা, মাকড়ের উপদ্রব, ছত্রাকের সংক্রমণ, ভাইরাস, ছত্রাকনাশক এবং অন্যান্য বিষাক্ত উপাদান এ রোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। আয়রন, দস্তা এবং কপারের ঘাটতিও এ বিকৃতি ঘটায়। এ রোগ সংক্রামিত বাগানের মধ্যে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। ফুল ধরার সময় তাপমাত্রা ১০-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে তা ছত্রাকের বিস্তারে সহায়তা করে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • রোপণের জন্য রোগমুক্ত চারা নির্বাচন করুন।
  • আমের পার্শ্ব মুকুল বিকৃতি সনাক্তকরণে নিয়মিত বাগান পর্যবেক্ষণ করুন।
  • পুষ্পমঞ্জরীর বিকৃত শীষ ছাঁটাই করার মাধ্যমে পরবর্তী বছর পুষ্পমঞ্জরীর বিকৃতির তীব্রতা হ্রাস করা যেতে পারে।
  • সংক্রামিত গাছের অংশ অপসারণ এবং ধ্বংস করুন।
  • ফুল ফোটার আগে এবং ফল সংগ্রহের পরে অনুখাদ্য যেমন, জিংক, বোরন এবং কপার জাতীয় উপাদান সংমিশ্রিত করে স্প্রে করার মাধ্যমে, বিকৃত হওয়ার ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণ বা হ্রাসের প্রমাণ রয়েছে।
  • একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নাইট্রোজেন ডোজ বাড়ানো শীর্ষভাগ বিকৃতি হ্রাস করে।
  • ছত্রাক ছড়িয়ে পড়া পরিহারে বাগানে এবং সরঞ্জামগুলোতে ভাল স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন।
  • রোগের বিস্তার হ্রাসে ছাঁটাই করার সরঞ্জামগুলো ভালভাবে পরিষ্কার করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন