জোয়ার

জোয়ার ফসলের রাস্ট রোগ

Puccinia purpurea

ছত্রাক

5 mins to read

সংক্ষেপে

  • পাতায় নিচে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিট দাগ ধীরে ধীরে হালকা বেগুনি রঙের ফুলে উঠা ফুস্কুড়িতে পরিণত হয়।
  • এগুলো গোলাকার থেকে ডিম্বাকৃতি এবং আলগাভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বা স্তরে স্তরে থাকে।
  • কাণ্ডের খোলে এবং ফুলের বোঁটায় লক্ষণ দৃশ্যমান হতে পারে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

জোয়ার

উপসর্গ

সাধারণত ১-১.৫ মাস বয়সী গাছে প্রথম লক্ষণ দেখা যায়। প্রথমে পাতার নিচে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভিন্ন রঙের (বেগুনি, তাম্র বা লাল) ছিট দাগ দেখা যায়। রোগ প্রতিরোধী জাতে সাধারণত লক্ষণ বিকশিত হয় না। সংবেদনশীল জাতের মধ্যে, সরগম বীজ বীজগুটি দ্বারা পূর্ণ থাকে, পত্রফলক দানাদার, বেগুনি, সামান্য ফুস্কুড়িতে পরিণত হয় এবং তা আকারে বড় হয়ে বৃত্তাকার হয়। এগুলো আলগাভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বা পরবর্তীতে দাগে পরিণত হয় এবং গাছ পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে সেসব আরও কালো হতে থাকে। অত্যন্ত সংবেদনশীল জাতের ক্ষেত্রে, ফুস্কুড়ি সম্পূর্ণ গাছকে আবৃত করে দিতে পারে এবং তখন সংক্রামিত জমি বাদামী বর্ণের দেখায়। ফুলের বোঁটায় ফুস্কুড়ি দেখতে পাওয়া যেতে পারে।

Recommendations

জৈব নিয়ন্ত্রণ

পাকসিনিয়া পার্পিউরি্যার বিরুদ্ধে বিকল্প কোন দমন ব্যবস্থা এখনও অবধি পাওয়া যায় নি। এ রোগের সাথে লড়াই করতে সহায়তা করতে পারে এমন কোনও বিষয়ে আপনি যদি জানেন তবে অনুগ্রহ করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার কাছ থেকে জানার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। রোগ সংবেদনশীল জাতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ কার্যকর হতে পারে। হেক্সাকোনাজল (০.১%), ডাইফেনকোনাজোল (০.১%) এবং প্রোপিকোনাজোল (০.১%) সংগঠিত ছত্রাকনাশক রোগ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা যেতে পারে। লক্ষণের উপস্থিতি দেখা মাত্র এ ধরনের ছত্রাকনাশক দ্বারা অনতিবিলম্বে ১৫ দিনের ব্যবধানে দু’বার স্প্রে করার সুপারিশ রয়েছে।

এটা কি কারণে হয়েছে

পাকসিনিয়া পার্পিউরিয়া নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ সৃষ্ট হয় , যা মাটি এবং সংক্রামিত অবশিষ্টাংশে অল্প সময়ের জন্য বেঁচে থাকতে পারে। অতএব, এটির শীতকালীন সময় বেঁচে থাকার জন্য বিকল্প বাহক যেমন অতিরিক্ত ঘাস বা কিছু আগাছা প্রয়োজন ( উদাহরণস্বরূপ বলা যায় লতানো উডসোরেল অক্সালিস কর্নিকুলাটা )। ছত্রাকের বীজগুটি বাতাস এবং বৃষ্টির মাধ্যমে বহুদুর পর্যন্ত পরিবাহিত হতে পারে। রোগ বিকাশে অধিক আপেক্ষিক আর্দ্রতা (প্রায় ১০০%), শিশির, বৃষ্টি এবং ঠাণ্ডা তাপমাত্রা (১০-১২ °সে) অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। গরম, শুষ্ক আবহাওয়া ছত্রাকের বিকাশ এবং রোগের প্রকোপকে ধীরগতির করে বা বাধাস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, মারাত্মকভাবে সংক্রামিত পাতা নেতিয়ে পড়ে এবং সম্পূর্ণ ধ্বংস হতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • এলাকায় পাওয়া যায় এমন রোগ প্রতিরোধী জাত বপন করুন।
  • প্রত্যয়িত উৎস থেকে সুস্থ সবল বীজ ব্যবহার করুন।
  • সংক্রামিত জমি থেকে সংগৃহীত বীজ ব্যবহার করবেন না।
  • সংক্রমণের অনুকূল পরিস্থিতি এড়াতে সরগাম আগাম বপণ করুন।
  • স্বল্পকালীন মরশুমের যে জাত তাড়াতাড়ি পরিপক্ক হয় তা ব্যবহার করুন।
  • রোগের লক্ষণ সনাক্তকরণের জন্য জমি পর্যবেক্ষণ করুন।
  • সংক্রামিত গাছ অপসারণ এবং ধ্বংস করুন (উদাহরণস্বরূপ, সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া)।
  • অন্যান্য বাহক গাছ থেকে ছড়িয়ে পড়া এড়াতে সুষ্ঠু আগাছা ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা করুন।
  • সংক্রমণের প্রতি সংবেদনশীল নয় এমন গাছ দিয়ে ফসল আবর্তন করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন