Gibberella fujikuroi
ছত্রাক
পরিবেশগত অবস্থা এবং রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে লক্ষণ পৃথক হতে পারে। সংক্রামিত গাছ সহজেই এদের অস্বাভাবিক উচ্চতা দ্বারা সনাক্ত করা যায়, হয়ত দীর্ঘ বা খর্বাকার এবং ফ্যাকাশে চেহারা পরিলক্ষিত হয়। বীজ ক্ষতযুক্ত হয় ও পচা এবং বিকৃত দেখায়। কাণ্ডের ত্বক বিবর্ণ হয়, ছত্রাকের বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়, গাছ খর্বাকৃতি বা পাতা গুচ্ছাকারে থাকে। পাতায় অস্বাভাবিক রঙ এবং ছত্রাকের বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়। মোচায় কালো বা বাদামী ক্ষত দেখা যায়, খসখসে ধরণের হয় এবং মোচা পচা রোগে আক্রান্ত হয়। পুরো গাছ স্যাঁতসেঁতে থাকে এবং সেখানে প্রাথমিক অবয়ব এবং চারার চেহারা ঝলসানো হয়।
জীবাণু ছড়ানোর আগে সংক্রমণকারী পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করতে নিমের নির্যাস স্প্রে করুন। জীবাণুকে দমন করতে ট্রাইকোডার্মা স্পেসিস-র মতো জৈব নিয়ন্ত্রণকারী এজেন্ট প্রয়োগ করুন। স্যিউডোমোনাস ফ্ল্যুরোসেন্স কাণ্ড পচা রোগ নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর। এ দুটি উপাদানই বীজ শোধনের পাশাপাশি মাটিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। ২৫০ কেজি খামারের জৈব সার ছিটিয়ে জমি শক্তিশালী করুন।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। বীজ বপনের আগে তা ম্যানকোজেব ৫০% এবং কার্বেনডাজিম ২৫%-র দ্রবণ দিয়ে শোধন করুন।
এ রোগ মাটি বাহিত ছত্রাক গিবেরেল্লা ফুজিকুরোই দ্বারা হয়। জীবাণুর বীজগুটি বাতাস এবং বৃষ্টিপাত দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে এবং ক্ষতের মাধ্যমে ভুট্টার থোড়ে প্রবেশ করে। চারা বীজের অঙ্কুরোদ্গম থেকে টাসেল বের হওয়া পর্যন্ত লক্ষণ দেখা যায়। এটি বীজ, ফসলের অবশিষ্টাংশ বা ঘাসের মতো বিকল্প আবাসে বেঁচে থাকে। এটি রেশম, শিকড় এবং উদ্ভিদের কাণ্ডের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি মূলতঃ পোকামাকড়ের ক্ষয়ক্ষতির ফলে সৃষ্ট ক্ষত দিয়ে মোচায় প্রবেশ করে। এটি অঙ্কুরিত হয়ে ধীরে ধীরে প্রবেশমুখ থেকে শস্য অংশে আবাস গড়ে তোলে। বিকল্পভাবে, এটি উদ্ভিদের শিকড়ে কলোনী গড়তে শুরু করে এবং গাছের উপরের দিকে ধাপে ধাপে উঠতে শুরু করে। ভুটা পরিবেশগত (চাপ) বিভিন্ন অবস্থার অধীনে সংক্রামিত হতে পারে তবে আবহাওয়া উষ্ণ (২৬-২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) এবং আর্দ্র থাকলে এবং ফসল ফুল আসার পর্যায়ে পৌঁছে গেলে লক্ষণ তীব্র হয়ে ওঠে।