Phakopsora gossypii
ছত্রাক
গ্রীষ্মমন্ডলীয় এলাকায় পাতার মরিচা পড়া রোগ বয়স্ক পাতার উপরের পৃষ্ঠে দেখা যায়। বয়স্ক পাতার উপরের পৃষ্ঠে ছোট উজ্জ্বল হলুদ বা কমলা ফুসকুড়ির আধিক্য দেখা যায়। পাতার নিচের অংশে একই রঙের কিন্তু কিছুটা বড় আকারের খসখসে ফুসকুড়ি দেখা যায়। এই রোগের অগ্রগতির ফলে এরা চারপাশে হলুদ বর্ণের আভাযুক্ত বড়, উত্থিত, ফ্যাকাশে-বাদামী ছত্রাকঘটিত ফুসকুড়ি্তে পরিণত হয়। এটি ফেটে ছত্রাকের গুটি বের হয়ে আসে এবং এরা একত্রিত হয়ে অনিয়মিত গাঢ় বাদামী দাগ গঠন করে। কাণ্ড এবং বোঁটার ফুসকুড়ি কিছুটা লম্বাটে হয় কিন্তু তেমন স্ফীত হয় না। রোগ বাড়ার সাথে সাথে অকালে পাতা ঝরে যায় এবং গুটির আকার হ্রাস পায়।
অন্যান্য মরিচা পড়া রোগ দমন করতে ১% করিম্বিয়া সাট্রিওডরিয়ার সংঘটিত উপাদানের তেল, ০.৫ % সিম্বোপোগন নারডাস এবং ০.৩ % থাইমাস ভালগারিস ব্যবহার করা হয়।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। সঠিক সময়ে সঠিক বালাইনাশক ব্যবহার করুন। ফলনের ক্ষতি কমাতে বীজ বপনের ৭৫ দিন পর থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত প্রতি ১৫ দিন পর পর হেক্সাকোনাজল এবং প্রোপিকোনাজলের সংঘটিত উপাদানের বালাইনাশক প্রয়োগ করুন। গ্রামা ঘাস থেকে ছত্রাকের গুটি যাতে বের না হতে পারে সে জন্য ০.২৫% ম্যানকোজেব ছিটিয়ে দিন।
ফ্যাকোপসোরা গসিপি ছত্রাক সংঘটিত তুলোর মরিচা পড়া রোগ তুলোর জন্য একটি মারাত্মক রোগ। এটি বীজ বা মাটি বাহিত রোগ নয় এবং এদের টিকে থাকার জন্য জীবিত সজীব কোষ কলার প্রয়োজন হয়। মরশুমের সময় জমির চারপাশে গ্রামা ঘাসে ( বউটেলুয়া এসপিপি.) ছত্রাকের গুটি ফুসকুড়ি সৃষ্টি করে এবং এদের পাতায় লম্বাটে বাদামী বা কালো দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে মরশুমের শুরুতে এরা ঘাস থেকে তুলো ফসলে আক্রমণ করে এদের জীবনচক্র সম্পন্ন করে। এরা পাতার কোষ কলার ছিদ্র বা আঘাতের অংশ নয়, বরং সরাসরি কোষকলা ছিদ্র করে প্রবেশ করতে পারে। উচ্চ আর্দ্রতা, পাতার ভেজা অবস্থা এবং মাঝারি থেকে উষ্ণ তাপমাত্রা রোগের জন্য সহায়ক।