Penicillium spp.
ছত্রাক
প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে খোসায় নরম, জলে ভেজামত স্থানের উপস্থিতি। কিছুদিন পরে, মূল ক্ষতে একটি গোলাকার এবং খুব সরু সাদা মোল্ড জন্মায়, যা ব্যাসে প্রায় কয়েক সেমি. হয়। সময়ের সাথে সাথে, ফলের গায়ে মোল্ড তীব্রভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং কেন্দ্রের পুরাতন অংশ নীলাভ বা সবুজাভ হয়ে যায়। চারিদিকের কোষগুলো নরম এবং জলে ভেজা মনে হয় কিংবা সাদা মাইসেলিয়ামের একটি বড় বলয় দেখা যায়। ফলটি দ্রুত পচে যায় এবং ঝরে যায় বা নিম্ন আর্দ্রতায় চুপসে গিয়ে মমির মত হয়ে যায়।
সিউডোমোনাস সিরিঞ্জি এর ইএসসি-১০ স্ট্রেইন ভিত্তিক ফরমুলেশন ব্যবহার করে ছত্রাকের জৈবিক দমন করা সম্ভব হয়। এগার্যানটাম কনজিওইডিস গাছের নির্যাসও মোল্ডের বিরুদ্ধে কার্যকর। থাইমাস ক্যাপিট্যাটাস গুল্ম থেকে প্রাপ্ত একটি “অত্যাবশ্যকীয় তেল” এবং নিমের তেলও কার্যকর ফল দেয়। চায়ের স্যাপোনিন নিরাপদ বস্তু হিসেবে মূল্যায়িত হয় এবং লেবু জাতীয় ফলের আহরণ পরবর্তী ক্ষয় দমনে ব্যবহৃত হয়।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। সাধারণত কিছু ছত্রাকনাশকসহ ৪০-৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরম জলে ডিটারজেন্ট মিশ্রণ বা দুর্বল ক্ষারের দ্রবণে ধুয়ে নিলে ফলের ক্ষয় হ্রাস পায়। ইমাজালিল, থাইবেণ্ডাজোল এবং বাইফেনল ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ রয়েছে।
পেনিসিলিয়াম গণের দুটি প্রজাতির ছত্রাক লেবু জাতীয় ফলের এ মারাত্মক পচনের জন্য দায়ী। পেনিসিলিয়াম ইটালিকাম নীলাভ মোল্ডের মত এবং পেনিসিলিয়াম ডিজিট্যাটাম সবুজাভ মোল্ডের মত ফলের গায়ে জন্মায়। প্রথমটি দ্বারা যে ক্ষত হয় তা দ্বিতীয়টির তুলনায় অপেক্ষাকৃত ধীরে বিস্তৃত হয়। এদের বৃদ্ধির লক্ষণ হল নতুন সাদা মাইসেলিয়াম যারা কেন্দ্রে থাকা পুরাতনগুলোকে বেষ্টন করে থাকে। এ ছত্রাকগুলো সুযোগসন্ধানী এবং ফলের গায়ে থাকা ক্ষতকে নতুন করে জীবনচক্র সম্পাদনের সুযোগ নেয়। ক্ষতস্থান থেকে জল ও পুষ্টির নিঃসরনের মাধ্যমে এ স্পোরগুলোর অঙ্কুরোদগম ঘটে। ২৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা এর জন্য অ্ত্যন্ত অনুকূল যখন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সংক্রমণ ঘটে এবং ৩ দিনের মধ্যে প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায়। যন্ত্রপাতির মাধ্যমে বা জলবাহিত কিংবা বায়ুবাহিত স্পোরের মাধ্যমে এর বিস্তার ঘটতে পারে। স্পোরগুলো সাধারণত মাটিতে পাওয়া যায় কিন্তু সংক্রমিত গুদামের বাতাসেও এদের পাওয়া যেতে পারে।