Phyllosticta maculata
ছত্রাক
সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যমূলক লক্ষণ হল, পাতা ও ফলে বিভিন্ন আকৃতির গাঢ় বাদামী থেকে কালো দাগ। পাতার পৃষ্ঠ ও ফলের ত্বক শিরিষকাগজের মত অনুভূত হয়। ছোট দাগগুলো ব্যাসে ১ মিমি.-র চাইতে ছোট হয়। এরা গুচ্ছাকারে সারিতে থাকতে পারে এবং পাতায় আড়াআড়িভাবে বা মধ্যশিরা থেকে প্রান্তের দিকে শিরা বরাবর সরু দাগ দেখা যায়। বড় দাগগুলো ব্যাসে ৪ মিমি. পর্যন্ত হয় এবং সরু দাগের মত দেখায়। কখনও কখনও এই বড় দাগগুলোর কেন্দ্র হালকা রঙের হয়। বৃন্ত, মধ্যশিরা, বিবর্তিত পাতা এবং মঞ্জরীপত্রেও দাগ হতে পারে। কাঁদি বের হওয়ার পরে ২-৪ সপ্তাহেই ফলও ছুলি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। প্রতিটি দাগ প্রথমে গাঢ় সবুজ, জলে ভেজা কোষকলার বলয় দ্বারা আবদ্ধ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লালচে-বাদামী দাগ আকারে দেখা যায়।
যেহেতু সংক্রমিত পাতা স্পোরের প্রাথমিক উৎস, তাই কলায় ব্যাগ বেঁধে দিলে তা কলা ফলে স্পোরের বিস্তারকে প্রতিরোধে বাধা তৈরি করে। এ ছত্রাকের বিরুদ্ধে খনিজ তেলের ব্যবহারেও সুফল মেলে।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। বছরজুড়ে প্রতি ২ সপ্তাহে বা মাসে একবার পাতায় ও ফলে ম্যানেব ছিটালে স্পোরের বিস্তার উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পায়। ফলপেট, ক্লোরোথ্যালোনিল, ম্যানকোজেব, ট্রায়াজোল, প্রোপিকোনাজোল এবং স্ট্রোবিলুরিন্স পরিবারের ঐসব ছত্রাকনাশক ২ সপ্তাহে একবার ছিটালে এ রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর ফল পাওয়া যায়।
ফাইলোস্টিকটা ম্যাকুলেটা ছত্রাকের কারণে এসব লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এটি উৎপাদন চক্রের যে কোন ধাপে কলা গাছকে আক্রান্ত করতে পারে এবং বিস্তারের উপায় (বৃষ্টির ফোঁটা, জলের ছাঁট, শিশির কণা প্রভৃতি) হিসেবে জলের প্রয়োজন হয় বলে এদের ‘সিক্ত স্পোর’ হিসেবে গণ্য করা হয়। গাছের সংক্রমিত অংশ এবং ফলের স্থানান্তরের মাধ্যমেও কলার ছুলি রোগ হতে পারে। ছুলির দাগে ছত্রাকের গঠন থাকে যা স্পোর উৎপাদন করে। তাদের অঙ্কুরোদগমের সাথে সাথে, স্পোরগুলো ফিলামেন্ট উৎপন্ন করে যা আবাসের কোষ ভেদ করে এবং কোষে ও কোষের ফাঁকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। ফলে গাছের কোষের অগভীরে নতুন দাগ বা পচে যাওয়া ক্ষত তৈরী হয়। এ উন্মেষপর্ব উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়ায় ২০ দিনের চাইতেও কম হতে পারে।