Physoderma maydis
ছত্রাক
সংক্রামিত পাতা, ডগা,পাতার খোল এবং দানার আবরণের উপর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র, হলুদ থেকে বাদামী বর্ণের অসংখ্য দাগ দেখা যায়। যতই সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকে, ততই ছোট দাগগুলো বড় হতে থাকে এবং সংখ্যাতেও বাড়তে থাকে। ফলস্বরূপ, সংক্রামিত সংযুক্ত কোষকলাগুলো পাতার সজীব অংশ আচ্ছাদিত করে ফেলে। দাগগুলোর বর্ণ হলুদ থেকে বাদামী বর্ণের হয়ে থাকে এবং এ রোগের উপসর্গটির অবয়ব অনেকটা মরিচা পড়া রোগের মতন। তবে মরিচা পড়া রোগের সাথে পার্থক্যস্বরূপ ফাইসোডার্মা মেইডিস সৃষ্ট ক্ষত পাতার সমস্ত অংশ ব্যাপী বিশেষ করে বৃন্তের দিকে বারংবার হয়ে থাকে। আরও একটি পার্থক্য হচ্ছে, প্রধান শিরা বরাবর বা এর কাছাকাছি অংশে সুস্পষ্ট গাঢ় বাদামী থেকে কালো দাগ দৃশ্যমান হয়ে থাকে। রোগ সংবেদনশীল জাতে, মধ্যশিরা এ জাতীয় ক্ষত দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে এবং ক্ষতগুলো চকোলেট থেকে বাদামী লাল অথবা বেগুনী বর্ণ ধারণ করে।
ফাইসোডার্মা মেইডিস জীবাণুর বিপরীতে কোন বিকল্প জৈবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কথা আমাদের জানা নেই। আপনার জানা থাকলে আমাদের জানান। রোগের প্রাদুর্ভাব এবং মহামারী ঠেকাতে হাতেনাতে দমন ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ফাইসোডার্মা মেইডিস জীবাণুর বিপরীতে কোন রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার তেমন প্রয়োজন পড়ে না কারন আক্রমণ মাঝে মাঝে হয় এবং এতে ফলনে তেমন ক্ষতি করে না।
ফাইসোডার্মা মেইডিস নামক ছত্রাক শীতকালে সংক্রামিত ফসলের অবশিষ্টাংশে বা মাটিতে (অনুকূল আবহাওয়ায় ৭ বছর পর্যন্ত) বেঁচে থাকতে পারে। একই জমিতে নিয়মিত ভুট্টা চাষ অথবা ফসলের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ বেশি হলে সাধারনত এ ধরনের রোগ হয়ে থাকে, উদাহরণস্বরূপ যেখানে স্বল্প পরিসরে জমি চাষ দেওয়া হয় সেখানে সংক্রমনের হার বেশি। বৃষ্টিপাত বা জলসেচনের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার দরুন সংক্রমণ ভুট্টার থলের ভিতর থেকে শুরু হয়ে থাকে। এখান থেকে, দ্বিতীয় ধাপে জীবাণু বাতাস বা জলের ছিটার মাধ্যমে অন্য ভুট্টার থলেতে বিস্তার লাভ করে। এধরনের বিস্তার ব্যাখ্যা করে থাকে, কেন উপসর্গ পুরাতন পাতায় আরও বেশি সুস্পষ্ট হয়ে থাকে। রোগ দমনের সর্বোত্তম ব্যবস্থা হচ্ছে সূর্যের আলোতে এবং তাপে ফসল উন্মুক্ত রাখা। সর্বোপরি, এ ধরনের রোগ গুরুতর নয় এবং ফসলের জন্য সামান্য ক্ষতিকর।