অন্যান্য

কুমড়া ফসলের পাতা ঝলসানো রোগ

Alternaria cucumerina

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • পাতায় সাদা রঙের কেন্দ্রবিশিষ্ট গোলাকার, ছোট ছোট বিবর্ণ দাগ দেখা যায়।
  • পরে হালকা বাদামী রঙ ধারণ করে এবং ক্রমশ বর্ধিষ্ণু হয়ে এককেন্দ্রিক বলয়ের মত দেখা যায়।
  • ফলের গায়ে গাঢ় জলপাই রঙ থেকে কালো রঙের গুঁড়ার আস্তরণ দেখা যায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

5 বিবিধ ফসল
শসা
তরমুজ
বাজরা
কুমড়া
আরো বেশি

অন্যান্য

উপসর্গ

প্রথমে গাছের মাঝামাঝি ও উপরের অংশে সাদা কেন্দ্রবিশিষ্ট গোলাকার, ছোট ছোট বিবর্ণ দাগ আকারে লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ দাগগুলো বড় হয়ে হালকা বাদামী রঙ ধারণ করে এবং কিঞ্চিৎ দেবে যায়। দাগের মাঝে পাতার ক্ষুদ্রাকার শিরাগুলো গাঢ় রঙ ধারণ করে, ফলে দেখতে জালের মত দেখায়। সময়ের সাথে সাথে এককেন্দ্রিক বলয় সৃষ্টি হয় যা শুধুমাত্র পাতার উপরের পাশে দেখা যায় এবং দেখতে লক্ষ্যভেদীর মত দেখায়। গোলাকার দাগগুলো পুরো পাতাকে আক্রমণ করে এবং এতে পত্রমোচন ঘটতে পারে। ফলের গায়ে বাদামী রঙের দেবে যাওয়া গোলাকার ক্ষত দেখা যায় যা পরবর্তীতে গাঢ় জলপাই রঙ থেকে কালো রঙেরর গুঁড়ার আস্তরণ দ্বারা ঢেকে যায়। ফসল আহরণের সময় সনাক্তকরণে ব্যর্থ সংক্রমিত ফল সংরক্ষণ বা পরিবহণের সময় ক্ষতির কারণ হতে পারে। গাছের অন্য অংশ সরাসরি আক্রান্ত হয় না।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

রোপনের অব্যবহিত পরে খড় দিয়ে মালচিং করা হলে সেটা মাটি থেকে নিচের পাতায় অলটারনারিয়া কুকুমেরিনা'র স্পোরের বিস্তার হ্রাস করে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। এজোক্সিস্ট্রোবিন, বস্কালিড, ক্লোরোথ্যালোনিল, কপার হাইড্রোক্সাইড, ম্যানকোজেব, ম্যানেব বা পটাশিয়াম বাইকার্বোনেট সমৃদ্ধ ছত্রাকনাশকের ব্যবহার এ রোগ দমনে কার্যকর। যা'হোক, ক্লোরোথ্যালোনিল সমৃদ্ধ রাসায়নিক বেশি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। প্রয়োগের সময় ও পরিমাণ অনুসারে উপাদানের ভিন্নতা দেখা দেয়। ব্যবহারের আগে নির্দেশাবলী পড়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করুন।

এটা কি কারণে হয়েছে

মৃৎজীবী ছত্রাক অলটারনারিয়া কুকুমেরিনা'র কারণে তরমুজ ও কাছাকাছি কুমড়া ফসলে এ রোগ দেখা যায়। এটি মাটিতে অবস্থিত ফসলের অবশিষ্টাংশ বা আগাছা ও অন্যান্য আবাসী কুমড়া ফসলে বেঁচে থাকে। বৃষ্টির ছটা, অতিরিক্ত সেচ, বাতাস, চাষপদ্ধতি, সরঞ্জামাদি ও শ্রমিকদের মাধ্যমে এ রোগের বিস্তার ঘটে। উষ্ণতা ও শিশির, বৃষ্টি বা উপরি সেচ থেকে প্রাপ্ত আর্দ্রতা এ রোগকে আনুকূল্য প্রদান করে। ২ থেকে ৮ ঘন্টা যাবৎ পাতা সিক্ত থাকলে সংক্রমণ শুরু হয়, কিন্তু সিক্ততার সময় বৃদ্ধির সাথে সাথে সংক্রমণের তীব্রতাও বৃদ্ধি পায়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণের চাইতে ঘন ঘন বৃষ্টিপাত এবং শিশির পতনের সময়কাল বেশি ভূমিকা পালন করে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • দুর্ভাগ্যবশতঃ এ রোগ প্রতিরোধী কোন জাত সহজলভ্য নয়।
  • রোগের লক্ষণ প্রকাশ হয়েছে কিনা নিশ্চিত হতে নিয়মিত মাঠ নিরীক্ষা করুন।
  • ১-২ বছরের জন্য কুমড়া ফসল বিবর্জিত শস্যচক্র অনুসরণ করুন।
  • উদাহরণস্বরূপ সুষম সার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসলের উপর ধকল সর্বনিম্ন করুন।
  • সরঞ্জামাদির ক্ষেত্রে উচ্চমানসম্পন্ন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করুন।
  • সম্ভব হলে উপরি সেচের পরিবর্তে ফোঁটায় ফোঁটায় সেচ দিন।
  • গাছ সিক্ত থাকলে সেখানে কোন আন্তঃপরিচর্যা করবেন না।
  • মরশুমের শেষে ফসলের অবশিষ্টাংশ অপসারণ করুন।
  • মাঠের গভীরে পুঁতে বা মাঠ থেকে দূরে পুড়িয়ে ফেলে অবশিষ্টাংশ ধ্বংস করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন