সয়াবিন

সয়বিনে পাউডারি মিলডিউ রোগ

Erysiphe diffusa

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • প্রাথমিকভাবে, সাদা পাউডারের মত ছত্রাক পাতার উপরিভাগে জন্মায়, পরবর্তীতে পাতার উপরের অংশে এবং নিচে বিস্তৃত হয়।
  • সয়বিনের শিম এবং কাণ্ডে আক্রমণ বিস্তৃত হতে পারে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

সয়াবিন

উপসর্গ

প্রাথমিকভাবে, সাদা গোলাকার পাউডারের মত ছত্রাক পাতার উপরিভাগে জন্মায়। আক্রান্ত স্থান বড় হতে হতে পাতার অনেকটা জুড়ে বিস্তৃত হয় এবং পরবর্তীতে পাতার উপরের অংশে এবং নিচে বিস্তৃত হয়। সয়বিনের শিম এবং কাণ্ডে ছত্রাকের আক্রমণ বিস্তৃত হতে পারে।আক্রমণ তীব্র হলে সাদা থেকে সাদা-ধূসর বর্ণের ছত্রাক দেখা যায়। কিছু জাতের সক্লোরোসিস, অথবা হলুদাভ দাগ দেখা যেতে পারে, পাতার নিচের দিকে মরিচার মত দাগ দেখা যেতে পারে। মারাত্মক আক্রমণের ক্ষেত্রে, অপরিণত পাতা ঝরে পড়ে। খুব আক্রমণ হলে, সয়াবিনের শিম জীর্ণ, অপরিণত, বিকৃত এবং চ্যাপ্টা ধরণের সবুজ বীজযুক্ত হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

বাগানের জন্য দুধ মিশ্রিত জলের দ্রবন ছত্রাকনাশক হিসেবে কাজ করে। প্রতি দুই দিন অন্তর অন্তর এ দ্রবন প্রয়োগ করুন। রসুন অথবা সোডিয়াম বাই-কার্বনেট মিশ্রণ ব্যবহার করে সন্তোষজনক ফল পাওয়া যেতে পারে। জলে দ্রবণীয় সালফার প্রতি লিটারে ৩ গ্রাম হারে প্রয়োগ করলে কার্যকরী হয়।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। সিক্ত সালফার ভিত্তিক ছত্রাকনাশক, কার্বেনডাজিম, ট্রাইফ্লুমাইজল, মাইক্লোবিউটানিল, অথবা ডাইনোকাপ ফসলের ছত্রাকের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করুন।

এটা কি কারণে হয়েছে

এরিসিফি ডাইফোসা ছত্রাকের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়, জীবাণুগুটিগুলো বাতাসের মাধ্যমে সুস্থ সবল গাছে ছড়ায়। এ বীজগুটিগুলোর অঙ্কুরোদগম হয়ে পাতার কোষ কলায় শিকড় প্রবেশ করায়, এ বীজগুটিগুলো জার্ম টিউব তৈরী করে এবং পাতার কোষের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে, যাতে এগুলো ভালো ভাবে লেগে থাকতে পারে। এর ফলে, পাতা থেকে রস সংগ্রহ করতে এবং বৃদ্ধি লাভ করতে পাতার ত্বকে সাদা আবরণের সৃষ্টি করে। বাতাসের মাধ্যমে এগুলো ছড়ায় এবং নতুন করে আক্রমণ করে এবং সয়াবিন গাছ বড় না হওয়া পর্যন্ত এগুলো ছড়ায়। ৩০ ডিগ্রী তাপমাত্রার উপরে এদের বৃদ্ধি কমে যায় এবং তাপমাত্রা কম থাকলে বৃদ্ধি বাড়ে। বৃষ্টিপাত এ রোগের বৃদ্ধির জন্য তেমন কোন ভূমিকা রাখে না। যদিও সয়াবিনের গাছ এ রোগে যেকোন বয়সেই আক্রান্ত হতে পারে, তবে প্রজননের সময়ের মধ্যবর্তী থেকে শেষ মরশুমের সময়ে অর্থাৎ ফুল-ফল আসার সময়ের আগে এবং পরে লক্ষণ খুবই কম হয়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • এমনভাবে রোপণ করুন যাতে বায়ু চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে।
  • রোগ প্রতিরোধী জাত রোপণ করুন।
  • রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করুন।
  • পাতায় প্রথম লক্ষণ দেখার সাথে সাথেই আক্রান্ত পাতা অপসারণ করুন।
  • আক্রান্ত গাছ যত্ন করার পর সুস্থ, সবল গাছে স্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
  • ফসল তোলার পর পর জমি চাষ করুন যাতে ফসলের অবশিষ্টাংশ এবং আক্রান্ত অংশ মাটির গভীরে চাপা পড়ে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন