Cordana musae
ছত্রাক
5 mins to read
নিচের দিকের পাতার কিনারার কাছে ডিম্বাকৃতির হলুদ বা মলিন বাদামী দাগ দেখা যায়। সময়ের সাথে সাথে, এ দাগগুলো বড় হয় ও তাদের কেন্দ্র পচে বাদামী হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে একটি স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট এককেন্দ্রিক বলয়স্থান গঠন করে। পাতার বৃদ্ধির সাথে সাথে শিরা বরাবর এসব দাগের বৃদ্ধি ঘটতে পারে। একাধিক দাগ একত্র হয়ে হলুদ রঙের কোষকলা বেষ্টিত একটি বৃহৎ পচে যাওয়া বাদামী ক্ষত তৈরী করতে পারে। পাতার কিনারা সংক্রমিত হলে, ছোট এককেন্দ্রিক দাগ দেখা যায় যা পরবর্তীতে পচে যাওয়া কোষকলার বিবর্ণ বাদামী রঙের লম্বা ডোরা দাগে রূপান্তরিত হয়। মাঝে মাঝে ডোরাদাগগুলো মধ্যশিরা পর্যন্ত বর্ধিত হয়। সংক্রমিত স্থান উজ্জ্বল হলুদ বলয় দ্বারা বেষ্টিত থাকে বলে রোগাক্রান্ত পাতা সুস্পষ্ট হয়।
এ রোগের বিরুদ্ধে বিশুদ্ধ কোন জৈবিক দমন ব্যবস্থা প্রচলিত নেই। তাই, কলা বাগানের সঠিক ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আক্রমণ মারাত্মক হলে, ১ শতাংশ বোর্দো মিশ্রণের মত জৈব কপার ভিত্তিক রাসায়নিক সংক্রমিত স্থানে ছিটাতে পারেন।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। কলা গাছের পাতায় যেহেতু কয়েক ধরণের দাগ রোগ দেখা যায় তাই পাতার তামাটে দাগ রোগ বা সিগাটোকা দাগ রোগ নিয়ে কাজ করার বদলে আপনি পাতার করডানা দাগ রোগ নিয়ে কাজ করছেন, সেটা নিশ্চিত করুন। আক্রমণ মারাত্মক হলে ০.৪ শতাংশ ম্যানকোজেব বা তেল ভিত্তিক ০.২-০.৪ শতাংশ কপার অক্সিক্লোরাইড রাসায়নিক ছিটিয়ে দিন। ক্লোরোথ্যালোনিল বা ম্যানকোজেবের মত স্পর্শক ছত্রাকনাশক ও টেবুকোনাজল বা প্রোপিকোনাজল এর মত সিস্টেমিক ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ রয়েছে। এ ছত্রাকনাশক শীর্ষ পাতায় পৌঁছানোর ব্যাপার নিশ্চিত করুন।
করডানা মুসি ছত্রাকের কারণে এসব লক্ষণ প্রকাশিত হয়। একে পাতার করডানা দাগও বলা হয়। এটি কলার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছত্রাকঘটিত রোগ যা প্রায় সকল কলা উৎপাদনকারী এলাকায় বিরাজমান। জলের ছিটা ও বাতাসের মাধ্যমে রোগের বিস্তার ঘটে যা ঘন করে রোপনকৃত জমিতে ব্যাপক পরিমাণে ছড়ায়। ঘন ঘন বৃষ্টিপাত নির্ভর উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ছত্রাকের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। সংক্রমণের কারণে পাতার যে ক্ষতি হয় তা সালোকসংশ্লেষণের স্থান ও ফলনের ব্যাপক হ্রাস ঘটায়।