Alternaria alternata
ছত্রাক
5 mins to read
এ ছত্রাক গাছে দুটি প্রধান লক্ষণ সৃষ্টি করে এবং তা কখনোই একসঙ্গে উপস্থিত হয় না। সাধারণত এরা কালো দাগ এবং ফলের হার্ট পচন বা হার্ট রট নামে পরিচিত, এরা প্রায়ই ডালিমের জাতের উপর নির্ভর করে। কালো দাগ রোগের সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো পাতা এবং ফলে ছোট লাল বাদামী বৃত্তাকার দাগ দেখা যায়, যা হলুদ সবুজ বর্ণবলয় দিয়ে ঘেরা থাকে। রোগ বাড়ার সাথে সাথে দাগ একত্রিত হয়ে দীর্ঘ ক্ষত তৈরি করে যা ফলত্বকের প্রায় ৫০% স্থান জুড়ে থাকে। পাতার কোষ কলা মরে যায় ফলে পাতা অকালে ঝরে পড়ে। ফলের বাহিরের অংশ পচে যায় তবে ভিতরের কলা অক্ষত থাকে। ফলের আকার এবং রঙের সামান্য পরিবর্তন দেখে বহিরাগত লক্ষণ বোঝা যায় কিন্তু প্রায়ই ফল পাকা পর্যন্ত তাদের সুস্থ চেহারা ধরে রাখতে পারে। ফল কাটলে স্পষ্ট ক্ষত দেখা যায়।
অল্টারনারিয়া অল্টারনাটা দমনে কোন জৈবিক দমন ব্যবস্থা জানা যায়নি। যা’হোক, কপার অক্সিক্লোরাইড সংঘটিত উপাদানের বালাইনাশক এ রোগ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে ।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ফুল ধারণের সময় বা ফলে প্রথম লক্ষণ দেখার সাথে সাথে দুটি প্রতিরোধী স্প্রে এ রোগের দমনের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে। প্রপিকোনাজল, থিওফেনেইট মিথাইল বা অ্যাজ্যাওক্সিস্ট্রবিন সংঘটিত উপাদানের বালাইনাশকের ব্যবহার খুবই কার্যকরী। পোকার প্রতিরোধী ব্যবস্থা দমন করতে বিভিন্ন ধরণের বালাইনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
কালো দাগ এবং হার্ট পচন রোগ প্রধানত অল্টারনারিয়া পরিবারের অনেক ছত্রাক দিয়ে হতে পারে তবে প্রধানত অল্টারনারিয়া অল্টারনাটা এ রোগের জন্য দায়ী। এ ছত্রাক সাধারণতঃ গাছের ধ্বংসাবশেষ, আক্রান্ত ফল বা মাটিতে বাঁচতে পারে। তারপর ছত্রাকের গুটি বাতাসের মাধ্যমে ফুলে ছড়িয়ে পড়ে। পাখি এবং পোকা এদের বিকল্প বাহক হিসেবে কাজ করে। দেরীতে ফুল আসার সময় বা অকালে ফলের বিকাশের সময় ঘন ঘন বৃষ্টি বা আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। মাঝে মাঝে হার্ট রট কেবলমাত্র ফল সংগ্রহ, সংরক্ষণ বা পরিবহনের সময় বোঝা যায়। ডালিমের ভিতরে ছত্রাক জন্মালে ফল পচে যায় এবং বাজারজাত মান হ্রাস পায়।