ডালিম

ফল এবং পাতার সারকোস্পোরা দাগ রোগ

Pseudocercospora punicae

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • ফুলের পাঁপড়িতে ও পাতায় গাঢ়, ছোট দাগ দেখা যায়।
  • ফুলের পাঁপড়িতে কালো দাগ বড় হয়ে একত্রিত হয়।
  • পাতায় বাদামী দাগ দেখতে পাওয়া যায়।
  • পাতার দাগটি সবুজাভ হয় এবং একটি বিচ্ছিন্ন হলুদ মার্জিন থাকে, অবশেষে মাটিতে পড়ে যায়।
  • এছাড়া কচি শাখাও আক্রান্ত হতে পারে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

ডালিম

উপসর্গ

লক্ষণ প্রথমে ফুলের পাঁপড়িতে দেখা যায়। সেখানে ছোট, বৃত্তাকার এবং বাদামী থেকে কালো দাগ দেখা যায়। আকৃতিটি অনিয়মিত হয়ে যায় এবং দাগের ব্যাসের আকার ১ থেকে ১২মিমি পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। ফলের উপর দাগ দেখতে ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইটের মতো দেখায় কিন্তু এ দাগ গাঢ় কালো, বিচ্ছিন্ন, বিভিন্ন আকৃতির এবং কোন ফাটল বা চটচটে অবস্থা থাকে না। পাতার দাগটি ছড়ানো, বৃত্তাকার বা অনিয়মিত হয় এবং একটি বিচ্ছিন্ন হলুদ মার্জিন থাকে। দাগগুলি ০.৫ থেকে ৫ মিমি ব্যাসের মধ্যে হয় এবং একত্রিত হয় না। কচি ডালের উপর কালো উপবৃত্তাকার দাগ দেখা যায়, যার প্রান্ত কিছুটা উঁচু হয়ে চ্যাপ্টা বা মলিন দেখায়। আক্রান্ত কচি ডাল শুকিয়ে মরে যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

দুঃখিত আমরা এ রোগ দমনে তেমন কোন জৈবিক দমন ব্যবস্থা সম্পর্কে জানি না। আমরা এই শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করছি।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। আর্থিক ক্ষতির পর্যায়ে পৌঁছলে দমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ফল ধারণের পর ১৫ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার ছত্রাকনাশক ছিটিয়ে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। সক্রিয় উপাদান হলো ম্যানকোজেব, কোনাজল বা কাইটাজিন। সঠিক নিবন্ধন করা বালাইনাশক ব্যবহার করুন। পোকার প্রতিরোধী ব্যবস্থা দমন করতে বিভিন্ন ধরণের বালাইনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাগান থেকে ফল সংগ্রহে বিরতির সুপারিশটি মেনে চলুন।

এটা কি কারণে হয়েছে

এ রোগের জন্য দায়ী সুইডোসারকোস্পোরা পুনিসি ছত্রাক। এটি উদ্ভিদের ধ্বংসাবশেষ এবং গাছের সংক্রামিত কাণ্ডে বেঁচে থাকতে পারে। এর গুটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়। রোগের প্রাদুর্ভাব বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধ মাটিতে সহজে হতে পারে। তাই আর্দ্র ও বৃষ্টির সময় সংক্রমণ প্রক্রিয়া এবং রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পাতার দাগ পরোক্ষভাবে গাছের ফলন কমিয়ে দেয়। এটি পাতার সালোকসংশ্লেষণ কমিয়ে দেয় এবং শক্তি উৎপাদন হ্রাস করে। চা উৎপাদনের জন্য বা অন্য কোনও স্থানে সংক্রমিত পাতা বিক্রি করা যাবে না। ফলের দাগ বাজারজাত পণ্যের বাজার মূল্য কমিয়ে দেয়। এমনকি আক্রান্ত ফল বিক্রি করা যায় না।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • অনুমোদিত উৎস থেকে রোগমুক্ত চারা ব্যবহার করুন।
  • আপনার এলাকায় পাওয়া গেলে সহনশীল জাত ব্যবহার করুন।
  • সঠিক মাত্রায় সার ব্যবহার করুন যাতে ফসলের উপর কোন প্রভাব না পড়ে।
  • বিশেষত ফুল আসার সময় এবং বৃদ্ধির যে কোন পর্যায়ে রোগের কোন চিহ্ন আছে কিনা তা জানার জন্য আপনার জমি তদারকি করুন।
  • জমির পরিচ্ছন্নতা ছত্রাক দমনে সাহায্য করে।
  • আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে ধ্বংস করুন।
  • আক্রান্ত ডাল ছাঁটাই করে পুড়িয়ে ফেলুন।
  • নীচে পড়ে থাকা পাতা আঁচড়িয়ে সরিয়ে ফেলুন।
  • ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা এবং ৯২ শতাংশেরও বেশী আপেক্ষিক আর্দ্রতায় ডালিম ফলকে আট থেকে বারো সপ্তাহ সংরক্ষণ করুন ।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন