Claviceps africana
ছত্রাক
শীষে বিদ্যমান কিছু বা সম্পূর্ণ অনুছড়ার বদলে সরগামের খোসার ভিতর নরম, সাদা, প্রায় গোলাকৃতির আকারের ছত্রাকের কাঠামো সৃষ্টি হয়। স্পোর বহনকারী আঠালো, তরল ফোঁটা, পাতলা থেকে চটচটে, কমলা-বাদামী বা ত্বকের উপর অতি মাত্রায় সাদা মধুরস নিঃসরিত হয়। উচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতায়, মধুরস স্বল্প চিটচিটে এবং এর উপরিভাগ সাদাটে হয়ে থাকে। সরগাম শীষ, বীজ, পাতা, ডাঁটা এবং মাটির উপরিভাগও ফোঁটা ফোঁটা মধুরস দ্বারা ভিজে যায় এবং সাদা বর্ণের হয়ে যায়। গাছের যেখানে মধুরস শুকিয়ে যায় সেখানে সাদাটে গুঁড়ো সাদা মিছরি দানার উদ্ভব হয়। মধুরসে বিভিন্ন ধরণের সুবিধাবাদী ছত্রাক নিবাস গড়ে তুলতে পারে।
বিশেষত ছত্রাক ইনোক্যুলেশনের বেশ কয়েকদিন পূর্বে, বাণিজ্যিকভাবে গ্রিনহাউসে ট্রাইকোডার্মা প্রজাতির নির্দিষ্ট কিছু ছত্রাক ব্যবহার করে রোগ হ্রাস বা প্রতিরোধ করতে পারে ।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। মধুরস দ্বারা সংক্রামিত বীজ ক্যাপ্টান ছত্রাকনাশক দিয়ে শোধন করুন। অনাবৃষ্টির সময়, জমিতে ৫-৭ দিনের ব্যবধানে প্রোপিকোনাজল বা টেবুকোনাজল (ট্রাইয়াজোল ছত্রাকনাশক) ৩-৪ বার স্প্রে করার ফলে বীজক্ষেতে ভাল ফল দেখায়। এ ধরনের ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি অ্যাজক্সাজিস্ট্রোবিন সরাসরি স্ত্রী কেশরের গর্ভমুণ্ডের উপরে প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় ।
ক্লাভিসেপস আফ্রিকানা ছত্রাক দ্বারা সরগামে এ লক্ষণ দেখা দেয়। সংক্রামিত সরগাম ফুল থেকে অতি ঘন প্রাথমিক স্পোর সৃষ্টির সাথে সাথে মধুরস নিঃসরিত হয়। পাশাপাশি, উৎপাদিত বায়ুবাহিত স্পোর মাঝারি থেকে বহু দূরত্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরিপক্ক বীজবাহিত স্পোর বা সংক্রামিত শীষ থেকে মাটিতে পড়ে , ফসল কাটার সময় এবং/অথবা বা বীজের সাথে লেগে থাকা মধুরস অবশিষ্টাংশ থেকে প্রাথমিক সংক্রমণ শুরু হয়। ৯-১২ মাস ব্যাপী শুকনো মধুরসে সংক্রামক ক্ষমতা থাকে। ছত্রাকের অঙ্কুরোদগম ১৪-৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস, বা সচরাচর ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ঘটে থাকে।