Balansia oryzae-sativae
ছত্রাক
এ রোগের লক্ষণ ধানের শীষ বের হওয়ার সময় প্রথম দেখা যায়। এ রোগের সংক্রমণ গাছের ভিতর দিয়ে প্রবাহমান ( systemic) এবং সকল কুশিই জীবাণু বহন করে। আক্রান্ত গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, শীষ সাদা বর্ণের ছত্রাক দিয়ে আবৃত হয় এবং শীষদণ্ড গুলি পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে যায়। শীষ খাড়া, একক, ময়লা রঙযুক্ত এবং খোল থেকে চোঙাকৃতি রডের মত অংশ বের হয়। ধান গাছের উপরিভাগের পাতা এবং খোল পাতা সাদা ছত্রাক দিয়ে আবৃত হয়ে যায় এবং রূপার মত দেখায়। শিরা বরাবর সাদা ছত্রাকগুলো সরু ডোরাকাটা দাগ সৃষ্টি করে। আক্রান্ত শীষে কোন দানা তৈরি হয় না।
বীজ বপনের পূর্বে ৫০-৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরম জলে ১০ মিনিট শোধন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। বীজ রৌদ্রে রেখে শোধন করেও ছত্রাকের জীবাণু ধ্বংস করা যায়।
সম্ভাব্যক্ষেত্রে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। কাপটান (captan) অথবা থাইরাম (thiram) দিয়ে বীজ শোধন করে নিন। অরিওফানজিন (aureofungin) এবং মানকোজেবের (mancozeb) বিভিন্ন মিশ্রণ প্রয়োগ করলে রোগের তীব্রতা কমে এবং কিছু কিছু জাতের ধানে ফলন বাড়ার প্রমাণও মিলেছে। বীজ শোধন না করে যদি মাটি শুধু থাইরামের সাহায্যে ও পরবর্তীতে অন্য কোন ছত্রাকনাশক দ্বারা শোধন করা হয় তাহলে উদ্ভাতা রোগ কমে আসে এবং বেশি ফলন পাওয়া যায়।
এ রোগ দক্ষিণ ভারতের অনেক জায়গায় মারাত্মকভাবে দেখা দিয়েছে। মৌসুমের শুরুতে কিংবা শেষে ধান চাষ করলে এ রোগের সংক্রমণ কম হয়। ছত্রাকের জীবাণু বীজে, ধান গাছের পাতায় কিংবা অন্যান্য আবাসে থাকে। ফসল কাটার পরে জীবাণু ফসলের অবশিষ্টাংশে অবস্থান করে এবং বাতাস ও জলের মাধ্যমে ছড়ায়। এ ছত্রাকের অনেকগুলো বিকল্প আবাস রয়েছে যেমন ইসাকনি এলিগ্যান্স (Isachne elegans) , সাইনোডোন ডেকটাইলন (Cynadon dactylon), পেনিসেটাম (Pennisetum sp.), এরাগ্রোস্টিস টেনুইফোলিয়া (Eragrostis tenuifolia) প্রভৃতি আগাছা। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় গাছ বেশি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। চারা রোপণ এবং বৃদ্ধি পর্যায়েই সবচেয়ে বেশি রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তবে এ রোগের লক্ষণ শীষ বের হওয়ার সময় প্রথম দৃশ্যমান হয়।