Gibberella fujikuroi
ছত্রাক
5 mins to read
বাকানি সাধারণতঃ সুস্পষ্টভাবে চারার রোগ কিন্তু গাছের বৃদ্ধির সকল পর্যায়ে এ রোগ দেখা যায়। ছত্রাক প্রথমে গাছের মূলে বা মুকুটে আক্রমণ করে এবং ধারাবাহিকভাবে কাণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমনের প্রথম পর্যায়ে যদি টিকে যায়, সংক্রমিত গাছ কিছু কুশিসহ অন্যান্য গাছ থেকে অস্বাভাবিকভাবে অনেক লম্বা হয়, ফ্যাকাশে, লিকলিকে এবং পাতা শুকিয়ে যায় । কাণ্ডের ভিতরের অংশে পচে যায় এবং পর্বসন্ধিতে অনেক মূল বের হয়। সংক্রমিত অংশে বাদামী দাগ পড়ে। গাছ পরিপক্ক পর্যায় পর্যন্ত টিকে থাকলে অপুষ্ট ধান ও চিটা বেশী হয়। এ পর্যায়ে গাছের ডিগ পাতা লক্ষণীয়ভাবে এবং অনুভুমিকভাবে বৃদ্ধি পায়।
আজ পর্যন্ত এ রোগের বিরুদ্ধে কোন জৈবিক দমন ব্যবস্থা জানা নেই। তবে লবণাক্ত জল ব্যবহার করে সুস্থ বীজ থেকে হালকা ওজনের সংক্রামিত বীজকে পৃথক করা যেতে পারে।
সম্ভাব্যক্ষেত্রে, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ট্রাইফ্লুমিজল (triflumizole), প্রপিক্লোনাজল (propiconazole), প্রোক্লোরাজ (prochloraz ) সমন্বিত ছত্রাকনাশক একক ভাবে বা থাইরাম এর সাথে মিশ্রণ করে আক্রান্ত বীজ শোধন করলে কার্যকরী ফল পাওয়া যায়। ছত্রাকনাশকের দ্রবনে ৫ ঘন্টা বীজ ভিজিয়ে রাখলেও প্রয়োজনীয় ফল পাওয়া যায়। সডিয়াম হাইপক্লরাডইড ( ব্লিচ) দ্বারা বীজ শোধন করলে রোগের প্রকোপ অনেক কমান যায়। ফসলের বৃদ্ধি পর্যায়ে এক সপ্তাহ পর পর ২ বার স্প্রে করলেও এ রোগ দমনে উপকার হয়।
বাকানি বীজবাহিত ছত্রাক জাতীয় রোগ। সাধারণত আক্রান্ত বীজ ব্যবহার করার কারণে বাকানি রোগ বেশি দেখা যায় কিন্তু উদ্ভিদ উপাদান বা মাটিতে এ রোগের জীবানু থাকলেও এ রোগ দেখা যায়। এ রোগের ছত্রাকের রেণু বাতাস বা জলের মাধ্যমে এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছড়িয়ে পড়ে। ফসল মাড়াইয়ের সময় জীবাণু আক্রান্ত গাছের মাধ্যমে এ ছত্রাকের রেণু সুস্থ বীজে ছড়িয়ে পড়ে এবং এছাড়া জলে বীজ ডুবিয়ে রাখার সময় জীবাণু বহন করতে পারে। ৩০-৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা এ রোগের জন্য অনুকূল।