Magnaporthe salvinii
ছত্রাক
ধান গাছের কুশি ছাড়ার পরে সাধারণত এ রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে, জলের কাছাকাছি পাতার বাইরের খোলে অনিয়মিত ছোট, কালো ক্ষত দেখা যায়। রোগের প্রকোপ যত বৃদ্ধি পায়, ক্ষত তত বাড়তে থাকে, পাতার ভেতরের খোলে এবং কাণ্ডে ক্ষত ছড়ায়, যা বাদামী- কালো ক্ষত তৈরি করে। অবশেষে কাণ্ডের ভেতরের একটি অথবা দুইটি গাঁট পচে যায় এবং কাণ্ডের ভিতর নিঃশেষ হয়ে যায় (শুধুমাত্র এপিডার্মিস ঠিক থাকে), ফলে গাছ মাটিতে নুইয়ে পড়ে, শস্যকনা বিহীন মঞ্জরী, চিটা দানা তৈরি হয় অথবা গাছ মরে যায়। কাণ্ডের ফাঁপা জায়গায়, আক্রান্ত কাণ্ডে নিষ্প্রভ-ধূসরাভ মাইসেলিয়াম, সাথে ভেতরের আবরণে ছোট, কালো স্কেলোরোসিয়ার ছোপ দাগ দেখা দিতে পারে।
কাণ্ড পচা রোগ নিয়ন্ত্রণে জৈব পদ্ধতিগুলো হচ্ছে, জমির উত্তম ব্যবস্থাপনা এবং এর শত্রু জীবের ব্যবহার নিশ্চিত করা।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। সাধারনত রোগের মাঝ পর্যায়ে বা রোগের শুরুতে রাসায়নিক যৌগ যেমন ভ্যালিডামাইসিন বা হেক্সাকোনাজোল @ ২ মিলি/লিটার, প্রপিকোনাজোল @ ১ মিলি/লিটার বা থায়োফেনেট-মিথাইল @ ১.০ গ্রাম/লিটার জলে ১৫ দিন অন্তর দুইবার স্প্রে করে গাছের কাণ্ড পচা রোগ রোধ করা যায়।
এ রোগ ম্যাগনাপোর্থি স্যালভিনি ছত্রাকের কারণে হয়। এ ছত্রাক মরা গাছের কোষ বা মাটির মধ্যে গোটা শীতকাল অতিবাহিত করে। পরবর্তীতে, যখন আবহাওয়া অনুকূল হয় (উচ্চ আর্দ্রতা, অধিক হারে নাইট্রোজের সারের প্রয়োগ) তখন এর বীজগুটি বৃষ্টির জলের ঝাপটা ও জলসেচের মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। যখন কোন পাতার উপরে গিয়ে এ বীজগুটি আশ্রয় নেয়, তা পাতার পৃষ্ঠতলে আটকে থাকে এবং পাতার কিউটিকলের মধ্যে দিয়ে ছিদ্র করে প্রবেশ করে। এই প্রক্রিয়া ক্ষতযুক্ত (পতঙ্গের আক্রমণ বা ভুল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়)। ফসল যতই পরিপক্ক হয় ততই এ রোগের তীব্রতা বাড়ে। গ্রীষ্মপ্রধান এলাকায়, ফসল সংগ্রহের পর উচ্চ আর্দ্রতার সময়ে এ ছত্রাকের জীবন-চক্র আনুকূল্য পায়।