ভুট্টা

ভুট্টার পাতার নর্দান দাগ রোগ

Cochliobolus carbonum

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • নিচের পাতাগুলোতে লম্বাটে থেকে ডিম্বাকার বা গোলাকার হালকা-বাদামী ক্ষত দেখা যায়, যা প্রায়ই একটি ঘন ধার দ্বারা বেষ্টিত থাকে।
  • কিছু কিছু ক্ষেত্রে, এ ক্ষতগুলো পাতার খোলসে ও ফলের খোসায় দেখা যায়।
  • কখনও কখনও শস্য দানায় কালো ছত্রাক দেখা যায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

ভুট্টা

উপসর্গ

জীবাণুর কাঠিন্য, চারাগাছের সংবেদনশীলতা এবং পরিবেশগত অবস্থার উপর ভিত্তি করে লক্ষণ খুব অল্পই ভিন্ন হয়। উদ্ভিদের বৃদ্ধির পরবর্তী ধাপে বিশেষত সিল্ক তন্তুর উদ্ভবের সময় অথবা পূর্ণাঙ্গ পরিপক্ব অবস্থায় প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশিত হয়। নিচের পাতাগুলোতে লম্বাটে থেকে ডিম্বাকার বা গোলাকার হালকা-বাদামী ক্ষত দেখা যায়, যা প্রায়ই একটি ঘন ধার দ্বারা বেষ্টিত থাকে। ক্ষতের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ জীবাণুর সক্ষমতা ও চাষকৃত ফসলের ধরণের উপর নির্ভর করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, এ ক্ষতগুলো পাতার খোলসে ও ফলের খোসায় দেখা যায়। কখনও কখনও শস্য দানায় কালো ছত্রাক দেখা যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

এখানে উল্লেখিত অধিকাংশ ব্যবস্থাই ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণাগারের পরীক্ষায় দেখা গেছে, বেল (এগল মারমেলোস) থেকে প্রাপ্ত তেল হেলমিন্থোস্পোরিয়াম কার্বোনাম ছত্রাকের বিরুদ্ধে কার্যকর। ভুট্টার কতিপয় জাতের (রোগ প্রতিরোধী ও সংবেদনশীলের মত) পাতার নির্যাস এ ছত্রাকের জন্য বিষাক্ত। কাণ্ড পচা রোগে সংক্রমিত ভুট্টা গাছের মজ্জা থেকে আলাদা করা ছত্রাকও হেলমিন্থোস্পোরিয়াম কার্বোনাম ছত্রাকসহ অন্যান্য কিছু পরিচিত ছত্রাকের পরবাসী হিসেবে কাজ করে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। সিল্ক তন্তু উদ্ভব পর্যায়ের শুরুতে সংবেদনশীল চারার পত্রপল্লবে ছত্রাকনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে। উদাহরণ হিসাবে, ৮-১০ দিন অন্তর প্রতি লিটার জলে ২.৫ গ্রাম ম্যানকোজেব মিশিয়ে স্প্রে করলে জীবাণুর বিরুদ্ধে তা কার্যকরী হয়।

এটা কি কারণে হয়েছে

ভুট্টা পাতার নর্দান দাগ রোগ হেলমিন্থোস্পোরিয়াম কার্বোনাম ছত্রাকের দ্বারা হয়, যা মাটিতে ভুট্টার অবশিষ্টাংশে শীত অতিবাহিত করে। এ অবশিষ্টাংশে থাকা রেণুগুলো আর্দ্র আবহাওয়ায় সংক্রমণের প্রাথমিক উৎস হিসেবে কাজ করে। বাতাস বা বৃষ্টির মাধ্যমে এক গাছ থেকে অন্য গাছে গৌণ সংক্রমণ ঘটে। মূলত বীজ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে চাষকৃত ফসলে এ রোগ বিস্তার লাভ করে এবং যেখানে অনেকটা রোগ প্রতিরোধী হাইব্রিড জাতের চাষ করা হয় সেই জমিতে এ রোগ কদাচিৎ সমস্যার সৃষ্টি করে। মোটামুটি তাপমাত্রা, আর্দ্র আবহাওয়া এবং শস্য আহরণের পর সামান্য চাষ এ রোগের বৃদ্ধিকে সহায়তা করে। দানা পরিপুষ্টতার ধাপে এ রোগের সংক্রমণ হলে শতকরা ৩০ ভাগ বা তারও বেশি ফলনের হ্রাস ঘটতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • বাজারে রোগ সহনশীল বা রোগ প্রতিরোধী জাত সহজলভ্য কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।
  • রোগের বৃদ্ধি নিরীক্ষা করতে সপ্তাহে একবার জমি পরিদর্শন করুন।
  • গাছের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখুন যাতে বৃষ্টি হওয়ার পরে বা জলসেচের পরে গাছের ঝোপালো অবয়ব দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারে।
  • গাছ যাতে মাটি স্পর্শ করতে না পারে সেইজন্যে মাটিতে মালচ্‌ বিছিয়ে দিন।
  • আগাছা দমন করুন যাতে বাতাস চলাচলের উন্নতি হয় এবং গাছের ঝোপালো অবয়বের আর্দ্রতা হ্রাস পায়।
  • ফসলে সঠিকভাবে সার প্রয়োগ করুন বিশেষ করে নাইট্রোজেন ও পটাশিয়াম।
  • সংবেদনশীল ফসলের ক্ষেত্রে অনাবাসী ফসলের সাথে শস্যচক্র মেনে চলুন।
  • শস্য আহরণের পর ফসলের অবশিষ্টাংশ মাটিতে পুঁতে ফেলতে চাষ করার মাধ্যমে রোগের প্রকোপ হ্রাস করা যায়।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন