Phytophthora capsici
ছত্রাক
শুষ্ক অঞ্চলে মরিচের মূলে এবং মুকুটে সংক্রমণ লক্ষণীয় হয়। মাটি বরাবর আক্রান্ত উদ্ভিদগুলোতে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কালো অথবা বাদামী দাগ দেখা যায়। অত্যধিক আপেক্ষিক আর্দ্রতা বজায় থাকলে উদ্ভিদের সমস্ত অংশই আক্রান্ত হয়। রোগাক্রান্ত শিকড় ঘন বাদামী রং ধারণ করে ও নরম মণ্ডবৎ হয়ে যায় এবং এর ফলে চারা নেতিয়ে পড়া রোগে আক্রান্ত হয়। পাতায় এবং ফলে ঘন সবুজ রঙের জল-সিক্ত দাগ দেখা যায়। আক্রান্ত পুরাতন উদ্ভিদে মুকুট পচা রোগ সৃষ্টি হয়। কাণ্ড ঘন বাদামী রঙের ক্ষতদাগ দ্বারা আবৃত হয়ে যাওয়ার ফলে মরিচ গাছ মারা যায়। জমি থেকে ফসল সংগ্রহের পর কিংবা সংরক্ষণের সময় মরিচে পচন ধরে।
ফাইটোফথোরা ক্যাপসিসি-র বিরুদ্ধে বারখোলডেরিয়া সেপাসিয়া (এমপিসি-৭)[ Burkholderia cepacia] ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। চারা রোপণের সময় মেফেনোক্সাম সংঘটিত কীটনাশক এবং রোপণের দু’সপ্তাহ পর কপার ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করলে উদ্ভিদের ফুল আসা পর্যায়ে রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো যায়। মুকুট পচন ধরলে উদ্ভিদের মূলীয় অঞ্চলে মেফেনোক্সাম সহযোগে ড্রিপ পদ্ধতিতে জলসেচ করলে মরিচের ফলে সংক্রমণ সীমিত থাকে।
এ রোগের জীবাণু ফাইটোফথোরা ক্যাপসিসি (Phytophthora capsici) একটি মৃত্তিকাজাত জীবাণু এবং চরম প্রতিকুল আবহাওয়াতেও এরা বেঁচে থাকে। শস্যের খড়কুটো, বিকল্প আবাস কিংবা মাটিতে তিন বছর পর্যন্ত জীবাণু জীবিত থাকতে পারে। পরবর্তীকালে এটি জলসেচ কিংবা ভূ-পৃষ্ঠের জলের প্রবাহে ছড়ায়। ফাইটোফথোরা ক্যাপসিসি সাধারনতঃ ৭ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বৃদ্ধি পায় তবে অতি উপযুক্ত তাপমাত্রা হলো ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অধিক তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার মত আদর্শ পরিবেশ থাকলে, এ রোগ দ্রুত বৃদ্ধি লাভ করে এবং চারদিকে ছড়ায়। শীতল তাপমাত্রায় এ রোগের বিস্তার কম হয়।