Botryosphaeriaceae
ছত্রাক
এটি মূলতঃ কাঠের রোগ যা গাছের প্রধান কাণ্ডে ডাইব্যাক এবং ক্ষতরোগের জন্য দায়ী। মাঠে কাজ করার সময় আঘাতপ্রাপ্ত বাকলে ক্ষতরোগ দেখা যায়, যেমন প্রুনিং। গাছের প্রধান কাণ্ড কাটলে কীলক আকারের বাদামী ক্ষত দেখা যায় যা কাঠের ভিতর পর্যন্ত পৌঁছায়। কচি কাণ্ড ডাইব্যাক দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। কোষ কলার ভিতরের অংশ মরে যায় এবং কুঁড়ির বৃদ্ধি থেমে যায় বা দেরি হয়। গ্র্যাফটের ব্যর্থতা এ রোগের বৈশিষ্ট্য। এ রোগের উপসর্গ সবসময় একসঙ্গে দেখা যায় না এবং কিছু জাতের ক্ষেত্রে পাতায় কোন লক্ষণ দেখা যায় না। সামগ্রিকভাবে, এ রোগ গাছের উৎপাদনশীলতা, আয়ুষ্কাল, উৎপাদন কমায় এবং উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেয়।
ট্রাইকোডার্মা ছত্রাক ( যেমন - টি. স্পেরেলাম এবং টি. গামসি ) এর ফরমুলেশন ব্যবহার করে একটা নির্দিষ্ট মাত্রার জৈবিক দমন সম্ভব। এটি সংক্রমণের পূর্বে ছটাঁইয়ের পর আক্রান্ত স্থান, প্রজননে ব্যবহৃত কাণ্ডের কাটা প্রান্ত এবং কলমের জখম হওয়ায় স্থানে প্রয়োগ করতে হবে। ছাটাঁইয়ের পর আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করার জন্য কয়েক ধরনের জৈব পণ্য রয়েছে।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। প্রুনিং এর পর কাটা অংশে ছত্রাকনাশক, পেইন্ট এবং পেস্ট সংঘটিত টেবুকোনাজল, সিপ্রোকোনাজল, ফ্লুসিলাজল সরাসরি প্রয়োগ করতে হবে। অন্যান্য ছত্রাকনাশকের মধ্যে রয়েছে ফ্লোডিওক্সনিল, ফ্লাইজিনাম, ফ্লুসিলাইজল, পেমকোনাজল, ইপ্রোডিওন, মাইক্লোবিউটানিল এবং পাইরাক্লোস্ট্রবিন।
বট্রাওস্ফেরিয়া পরিবারের কয়েকটি ছত্রাকের জীবাণু এ রোগের লক্ষণের জন্য দায়ী। এরা অনেক গাছে আক্রমণ করলেও সাধারন কাষ্ঠল গাছে বেশি দেখা যায়। ছত্রাক আক্রান্ত গাছের বাকলে শীতাবস্থায় থাকে এবং বসন্তে ছত্রাকের গুটি বের হয়। গুটি বাতাস ও বৃষ্টির জল দ্বারা বাহিত হয়ে অন্য গাছে আক্রমণ করে। এরা গাছের নতুন জখম বা প্রাকৃতিক কারণে ফেটে যাওয়া স্থানের মাধ্যমে গাছে প্রবেশ করে এবং সেখানে ৫ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা পেলে জন্মায়। সুপ্তাবস্থার শুরুতে ছাঁটাই করলে আঘাত প্রাপ্ত স্থান এ রোগের জীবাণুর প্রতি বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকে। এরা পর্যায়ক্রমে পরিবহণ কোষ কলা ভেদ করে মূলের দিকে যেতে থাকে। এ কারণে আঘাতপ্রাপ্ত বাকলে ক্ষতরোগ দেখা যায় এবং প্রধান কান্ড ডাইব্যাক প্রদর্শন করে। বিকল্প আবাসী গাছের মধ্যে রয়েছে কর্কওক,পপলারস,সাইপ্রাসেস এবং জুনিপারস।