আঙুর

আঙ্গুরের অ্যাঙ্গুলার লিফ স্পট

Mycosphaerella angulata

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • দ্রাক্ষালতার পাতাগুলির উপরে মৃদু, হালকা হলুদ বর্ণের দাগ দেখা যায়।
  • এই দাগগুলির কেন্দ্রভাগে অসম ধরণের বাদামী রঙের ছিটছিট দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
  • পাতা সাধারণত হলুদ হয়ে যায় এবং নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
  • চরম মাত্রায় পত্রমোচন উদ্ভিদের জীবনীশক্তি কমিয়ে দেয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

আঙুর

উপসর্গ

জীবাণু কেবলমাত্র পাতাকেই আক্রমণ করে। রোগের প্রথমাবস্থায়, সংক্রামিত আঙ্গুরলতার পাতার নীচের কিনারা ঘেঁষে হালকা ধরনের পাণ্ডুর বর্ণের দাগ দেখা যায়। সারা মরশুম জুড়ে এই দাগ আয়তনে বৃদ্ধি পায় এবং হলুদ দাগের কেন্দ্রস্থলে অসম ধরনের বাদামী রঙের ছিটছিট দাগের আবির্ভাব হয়ে এদের অনেকটা কোণের মতো দেখতে লাগে এবং আরো স্পষ্টভাবে দেখা যায়। পাতার বাকি অংশেও ক্রমে এই উপসর্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সাধারণত এর ফলে পাতা হলুদ হয়ে মারা যায়। রোগ যদি এইভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে মরশুমের শেষে গিয়ে অস্বাভাবিক হারে পত্রমোচন শুরু হয়। পাতার অভাবে উদ্ভিদ তার জীবনীশক্তি হারিয়ে ফেলে এবং ফলন কম হওয়ার সাথে সাথে ফলের গুণমানও কমে যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

দুঃখের বিষয় হলো মাইকোস্ফ্যারেল্লা অ্যাঙ্গুলাটা-র(Mycosphaerella angulata) বিরুদ্ধে বিকল্প কোন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কথা আমাদের জানা নেই। আপনি যদি কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করে সফল হয়ে থাকেন অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনার কাছ থেকে আমরা শুনতে চাই।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। প্রচলিত ছত্রাকনাশক সময়মতো প্রয়োগ করে অ্যাঙ্গুলার লিফ স্পট রোগকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। সংক্রমণ এড়ানোর জন্য মরশুমের শুরুতে বারে বারে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করাই হলো সবথেকে কার্যকরী উপায়।

এটা কি কারণে হয়েছে

উপসর্গগুলি সৃষ্টি হয় উদ্ভিদের ছত্রাকঘটিত জীবাণু মাইকোস্ফ্যারেল্লা অ্যাঙ্গুলাটা-র মাধ্যমে। এই রোগ মাস্কাডাইন আঙ্গুরের (ভিটিস রোটানডিফোলিয়া- Vitis rotundifolia) একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রোগ কিন্তু অন্যান্য আঙ্গুরের প্রজাতিকেও আক্রমণ করতে পারে। পরাগরেণু বাতাস ও জলের ঝাপটার মাধ্যমে অন্য পাতা ও উদ্ভিদে ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ভিদের পাতায় অবস্থিত প্রাকৃতিক ছিদ্র বা ক্ষতস্থানের মধ্যে দিয়ে এই পরাগরেণু প্রবেশ করে উদ্ভিদকে রোগাক্রান্ত করে তোলে। রোগাক্রান্ত পাতায় সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয় যার ফলে পত্রমোচন ঘটে, আঙ্গুরলতার জীবনীশক্তি কমে যায় এবং আঙ্গুর সূর্যালোকের উত্তাপে ঝলসে যায়। আঙ্গুর ভালোভাবে পরিণত হওয়ার আগেই যদি রোগের আক্রমণ হয় তবে তা ফলের বৃদ্ধিকে ধীরগতি সম্পন্ন বা একেবারে স্তব্ধ করে দিতে পারে। জীবাণু উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় সক্রিয় হয়ে ওঠে বিশেষ করে মরশুমের প্রথমভাগে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • আপনার এলাকায় যদি সুলভ হয় তবে আঙ্গুরলতার আরো বেশী সহ্যগুণশক্তিসম্পন্ন বা রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করুন।
  • রোগের চিহ্ন খুঁজতে ঘন ঘন আঙ্গুরবাগিচা পরিদর্শন করুন।
  • সার প্রয়োগের সুব্যবস্থার মাধ্যমে আঙ্গুরলতাকে সুস্থ রাখুন।
  • দেরী করে অস্বাভাবিক পরিমান সার প্রয়োগ করবেন না।
  • আঙ্গুরবাগানের আশেপাশে বন্য প্রজাতির আঙ্গুরলতা দেখলেই তা অপসারিত করুন।
  • আঙ্গুরলতার ডালপাতা এমনভাবে ছেঁটে দিন যাতে লতার মধ্যে ভালোভাবে বায়ু চলাচলের মাধ্যমে পাতা বায়ুর সংস্পর্শে থাকে।
  • ফসল চাষের পরবর্তী সময়ে জমিতে পড়ে থাকা উদ্ভিদের অংশবিশেষ সরিয়ে নিন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন