Physopella zeae
ছত্রাক
এ রোগের লক্ষণ, গোলাকার থেকে ডিম্বাকৃতি সাদা রঙের ফুসকুড়ি মূলতঃ পাতার বহিঃত্বকের নিচে দেখা যায়। ফুসকুড়িগুলো উভয় পাশে শিরার সমান্তরালে গুচ্ছ আকারে থাকে। বৃদ্ধির সাথে সাথে এরা বেগুনী থেকে কালো হয়ে যায় এবং ফুসকুড়িগুলো ফেটে গিয়ে কেন্দ্রে উজ্জ্বল ও সুস্পষ্ট ক্ষত দেখা যায়। সংক্রমণ তীব্র হলে ফুসকুড়িগুলো একত্রে মিশে যাওয়ার ফলে অপরিণত অবস্থায় পাতা ঝরে যায়। এ ছত্রাক মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে থাকে এবং ফুল ধারণ পর্যায়ের আগে ভুট্টা গাছকে সংক্রমিত করলে মারাত্মকভাবে ফলনের হ্রাস ঘটে।
ফাইসোপেলা জি (Physopella zeae) ছত্রাকের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণের কোন বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের জানা নেই। যদি জৈবিক নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে আপনারা কিছু জানেন, তবে এ রোগ দমনে অনুগ্রহ করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। উচ্চমূল্যের ফসলে প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাওয়া মাত্র পাতায় ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করুন। এজোক্সিস্ট্রোবিন (azoxystrobin), টেবুকোনাজল (tebuconazole), প্রোপিকোনাজল (propiconazole) সমৃদ্ধ ছত্রাকনাশক বা এদের সমন্বিত ব্যবহার এ রোগের বিস্তার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
এ ছত্রাক বিক্ষিপ্তভাবে থাকে এবং শুধুমাত্র আমেরিকা মহাদেশের উষ্ণ ও আর্দ্র ক্রান্তীয় জলবায়ুতে সংক্রমণ ঘটায়। বাধ্যতামূলক পরজীবী হিসেবে এ ছত্রাক সুবিধাজনক আবাসী উদ্ভিদ ছাড়া তার জীবনচক্র সম্পন্ন করতে পারে না। এরা মাটি বা উদ্ভিদের অবশিষ্টাংশে শীত যাপন করতে পারে না বিধায় আন্তঃমৌসুম সংক্রমণ সহজেই এড়ানো যায়। এ ছত্রাক মূলতঃ বাতাসের মাধ্যমে এক গাছ থেকে অন্য গাছে এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়ায়। গ্রীষ্মাঞ্চলীয় মরিচা রোগের বিস্তৃতির জন্য উচ্চ তাপমাত্রা(২২ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস), অধিক আর্দ্রতা এবং অত্যধিক সূর্যালোক বেশি উপযোগী। পাতায় জলের উপস্থিতি ছত্রাকরেণুর অঙ্কুরোদগমকে ত্বরান্বিত করে। মূলতঃ নিচু জমিতে ভুট্টার নাবী চাষ করলে গ্রীষ্মাঞ্চলীয় মরিচা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।