পেঁপে

পেঁপের বাদামী দাগ রোগ

Corynespora cassiicola

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • পুরাতন পাতার উপরে ছোট বাদামী দাগ দেখা যায় এবং তা ধীরে ধীরে উপরের দিকে বিস্তার লাভ করে।
  • দাগগুলি পরে বৃদ্ধি পায় এবং গাঢ় বর্ণের কিনারাসহ হলুদাভ অস্বচ্ছ বলয় দিয়ে ঘেরা হাল্কা ধূসর রঙের দেখায়।
  • এই দাগগুলির কেন্দ্রভাগ মৃত হয় এবং এই মৃত অংশ ঝরে পড়ে গিয়ে ছোট ছিদ্রাকার অংশের সৃষ্টি করে।
  • আর্দ্র আবহাওয়ায় ফলের গায়ে বাদামী রঙের দাবানো দাগের আবির্ভাব হতে পারে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

পেঁপে

উপসর্গ

প্রাথমিকভাবে, পুরাতন পাতার উপরে ছোট কোনাকার বাদামী দাগ দেখা যায় যা ধীরে ধীরে উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। রোগ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দাগগুলি বড় হয়ে হাল্কা ধূসর রঙের হয় এবং গাঢ় কিনারাসহ হলুদাভ বলয় দিয়ে ঘেরা থাকে। এই দাগগুলির কেন্দ্রভাগ মৃত হয় এবং এই মৃত অংশ ঝরে পড়ে গিয়ে সেই স্থানে ছোট ছিদ্র গঠন করে ফলে পাতায় একটা খসখসে ভাব দেখা যায়। আর্দ্র আবহাওয়ায়, এই দাগগুলি বৃদ্ধি পেয়ে অনেক বড় হয় এবং একত্রে মিলিত হয়ে চাঁদমারির লক্ষ্যবস্তুর মতো গঠন তৈরী করে। উপবৃত্তাকার, গাঢ় বাদামী দাগ মাঝে মাঝে পত্রবৃন্ত ও ডালপালার উপরে দেখা যায়। সাধারণতঃ ফলের গায়ে এই লক্ষণ দেখা যায় না কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে, দীর্ঘকালীন ব্যাপী স্থায়ী আর্দ্র আবহাওয়ায় বাদামী রঙের দাবানো দাগ দেখা যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

সিলোন দারচিনি-র থেকে নিষ্কাষিত আবশ্যিক তেল (০.৫২ μL/mL) পাতার উপরে সৃষ্ট ক্ষতদাগের আকার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা হয়। ফলে আক্রমণ ঘটার আগেই ফসলকে সুরক্ষা দেওয়ার কাজ করলে তা কার্যকরী ভূমিকা নেয়, অন্যথায় তার কোন কার্যকারিতাই থাকে না।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। নিয়মিত ব্যবধানে ম্যানকোজেব (mancozeb), কপার বা ক্লোরোথ্যালোনিল (chlorothalonil) সমৃদ্ধ ছত্রাকনাশক রোগের মারাত্মক আক্রমণ কালে উদাহরণ হিসাবে পাতার ক্ষয় রোগ সৃষ্টি হলে এই রোগকে দমন করার জন্য সাহায্য করে। বেঞ্জিমিডাজোল (benzimidazole) ছত্রাকনাশকের বিরুদ্ধে অবশ্য কিছু প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে।

এটা কি কারণে হয়েছে

এই রোগের জন্য দায়ী ছত্রাকটির নাম করিনেস্পোরা ক্যাসিকোলা (Corynespora cassiicola)। এই রোগ ক্রান্তীয় বলয় ও উপ-ক্রান্তীয় বলয় অঞ্চলে খুবই সাধারণ। শসা ও টম্যাটো উদ্ভিদের ক্ষেত্রে এই জীবাণু প্রধান আসন গ্রহণ করে এবং মাঝে মাঝে এটা পেঁপের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। এই রোগ ছত্রাকরেণুর মাধ্যমে ছড়ায় এবং এই রেণু পাতার নিচের দিকে বিস্তার লাভ করে। বাতাস ও বৃষ্টির জলের মাধ্যমে রেণু এক উদ্ভিদ থেকে অন্য উদ্ভিদে ছড়িয়ে পড়ে। উষ্ণ, আর্দ্র আবহাওয়া এই রোগের চরম আকার ধারণের পক্ষে অনুকূল হয়। পাতার অত্যধিক ক্ষয়, ফসল হানি ও ফসলের গুণমাণ হ্রাসের কারণ হয়ে ওঠে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আশ্রয়দাতা হিসাবে অনেক আগাছা যেমন দায়ী তেমনি একইসঙ্গে অ্যাভোকাডো, কাঁঠাল, কাসাভা, সয়াবীন বা বেগুনের মতো উদ্ভিদের নাম করা যায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • এই রোগ পেঁপের ক্ষেত্রে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নয় যাতে কোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দরকার হয়।
  • যে জমিতে টম্যাটো ও শসার চাষ করা হয় সেই জমির আশেপাশে পেঁপে গাছ লাগাবেন না।
  • ভালোভাবে আগাছা দমন করলেই জীবাণু এক ফসল থেকে অন্য ফসলে ছড়িয়ে যেতে পারে না।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন