আম

আমের ফোমা ব্লাইট

Peyronellaea glomerata

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • পুরাতন পাতার উপরে হলুদ থেকে বাদামী বর্ণের অনিয়মিত ক্ষত দেখা যায়।
  • সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতগুলি একত্রিত হয়ে কেন্দ্রভাগে ধূসর বর্ণের মৃত কোষ সমন্বিত বড় ধরনের ক্ষতযুক্ত দাগ তৈরী করে।
  • পাতা দুর্বল হয়ে যেতে থাকে এবং পরে পত্রমোচন শুরু হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

2 বিবিধ ফসল

আম

উপসর্গ

ফোমা ব্লাইটের সংক্রমণের উপসর্গ কেবলমাত্র পুরাতন পাতার উপরে লক্ষ্য করা যায়। আক্রান্ত পাতার উপরে কৌণিক, হলুদ থেকে বাদামী বর্ণের অনিয়মিত ক্ষত লক্ষ্য করা যায় যা পাতার সমগ্র ল্যামিনা অংশের উপরে ছড়িয়ে থাকে। রোগ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতগুলি বড় হতে থাকে এবং একত্রিত হয়ে বড় ধরণের দাগযুক্ত অংশ গঠন করে যা পরে ধূসর বর্ণের কেন্দ্রভাগ ও কালো প্রান্তভাগ সমন্বিত মৃত কোষযুক্ত অঞ্চলে রূপান্তরিত হয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে, পাতা দুর্বল হতে শুরু করে এবং পত্রমোচন শুরু হয়। এই রোগজীবাণুর পরাশ্রয়দাতা উদ্ভিদের মধ্যে সাধারণ আঙ্গুর (Vitis vinifera) ও কেন্টাকি ঘাস (Poa pratensis)-এর কথা উল্লেখ করা যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

প্রথম উপসর্গ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কপার অক্সিক্লোরাইড (copper oxychloride) (০.৩%) স্প্রে করলে এবং ২০ দিন অন্তর একই প্রক্রিয়া জারি রাখলে রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আম ফলে নিম পাতার নির্যাস লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে যদি হিমঘরে ফল সংরক্ষণ করা যায় তবে সংরক্ষণাগারে থাকার সময়ে অনেক জীবাণুর বৃদ্ধিকে আটকানো সম্ভব।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র বেনোমিল (০.২%) [benomyl (0.2%)] সমৃদ্ধ ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে এবং এর পরেই ২০ দিন অন্তর ০.৩% মিলটক্স (miltox) প্রয়োগ করলে ছত্রাকের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে তা ভালো কাজ করে।

এটা কি কারণে হয়েছে

ফোমা ব্লাইট নতুন রোগ কিন্তু আম উৎপাদিত অঞ্চলে এটা এখন অর্থনৈতিক গুরুত্ব লাভ করছে। রোগের লক্ষণগুলি পেইরোনেল্লাই গ্লোমের‍্যাটা (Peyronellaea glomerata) নামক ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট হয় যা আগে ফোমা গ্লোমের‍্যাটা (phoma glomerata) নামে পরিচিত ছিল, যার জন্যে রোগের এই নামকরণ হয়েছে। এই ছত্রাক সর্বত্রগামী ও বহুল প্রচারিত যা মাটি এবং বিভিন্ন মৃত বা জীবিত উদ্ভিদ দেহাংশের (বীজ, ফল, তরিতরকারী) উপর সাধারণভাবে কোন উপসর্গের প্রকাশ ছাড়াই বেঁচে থাকে। এছাড়াও এই ছত্রাককে ঘরের অভ্যন্তরে কাঠ, সিমেন্ট, তেল রঙে চিত্রিত পৃষ্ঠতল ও কাগজের উপরেও থাকতে দেখা যায়। এই ছত্রাককে সাধারণতঃ রোগাক্রান্ত কোষের গৌণ আক্রমণকারী হিসাবে গন্য করা হয়। যাইহোক, পরাশ্রয় প্রদানকারী কিছু উদ্ভিদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু আবহাওয়াজনিত শর্তের (স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া ও অত্যুষ্ণ তাপমাত্রা) অধীনে এই ছত্রাক রোগের প্রকাশ ঘটায়। ২৬ ডিগ্রি থেকে শুরু করে ৩৭ ডিগ্রির নীচের তাপমাত্রায় এই রোগের সর্বোত্তম বৃদ্ধি ঘটে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সংরক্ষণাগারে যাতে ছত্রাকের বৃদ্ধি না হতে পারে সেইজন্য সংরক্ষণাগার আগাপাশতলা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন