শিম

কলাইয়ের পাতার সারকোস্পোরা দাগ

Cercospora canescens

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • পাতায় অসংখ্য ছোট ছোট ফ্যাকাসে-বাদামী বৃত্তাকার দাগ পড়ে যা লালচে বাদামী রেখা দ্বারা বেষ্টিত থাকে।
  • দাগ শাখা-প্রশাখায় ও সবুজ শুঁটিতে দেখা যায়।
  • ব্যাপকভাবে পাতা ঝরে পড়ে।
  • ফলনের হ্রাস হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে


শিম

উপসর্গ

লক্ষণসমূহ জীবাণুর শক্তি কিংবা গাছের ধরনের উপর খুবই সামান্য নির্ভরশীল। বীজ বপনের ৩-৫ সপ্তাহ পরে পাতায় ছোট ছোট বৃত্তাকার জলসিক্ত দাগ দেখা যায় যার কেন্দ্র বাদামী রঙের হয় এবং পাতায় হলুদ বর্ণবলয় দেখা যায়। রোগের পরবর্তী ধাপে দাগ বেড়ে অসংখ্য হয় এবং নেক্রোটিক (গাঢ় বাদামী) হয়ে যায়, যার কিনারা লালচে বাদামী রং ধারণ করে এবং গাছকে কিছুটা নির্জীব দেখায়। গাছের অন্যান্য অংশেও এরা আক্রমণ করতে পারে, বিশেষ করে সবুজ শুঁটিতে। ফুল আসা ও শুঁটি ধারণের সময় অনুকূল পরিবেশ পেলে এ রোগের আক্রমণে ব্যাপকভাবে পাতা ঝরে পড়ে। ছত্রাক শুঁটির উপর ও ভিতরে জন্মায় এবং আক্রান্ত শুঁটি পুরোপুরি নষ্ট করে, যার ফলে ১০০% পর্যন্ত ফলন নষ্ট হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

বীজ গরম জলে শোধন করুন । রোগের ব্যাপকতা হ্রাস করতে নিম তেলের নির্যাসও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে ( অধিক সংখ্যক বেশি ওজনের সুস্থ শুঁটি ও বীজ পাওয়া যায়)।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। যদি ছত্রাকানাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয়, তাহলে ম্যানকোজেব, প্রতি লিটারে ১ গ্রাম হারে ক্লোরোথ্যালোনিল বা ১ মিলি. থায়োফেনেট মিথাইল ১০ দিন অন্তর ব্যবহার করুন।

এটা কি কারণে হয়েছে

পাতায় দাগ রোগের জন্য দায়ী সারকোস্পোরা কেনেসেন্স, যা মাসকলাই ও মটরশুঁটিতে আক্রমণ করে। এ ছত্রাক বীজ বাহিত এবং মাটির মধ্যে উদ্ভিদ অবশিষ্টাংশে প্রায় ২ বছর টিকে থাকতে পারে। মূলের মধ্য দিয়ে এটি মাটির ভিতরে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে। এ জীবাণু বিকল্প আবাসী অথবা স্বেচ্ছাসেবী ফসলেও অনেক দিন টিকে থাকে। কাদামাটি ও বাতাসের মাধ্যমে গাছের নিচের অংশে সংক্রমণ ঘটায়। দিন ও রাতের তাপমাত্রার তারতম্য, আর্দ্র মাটি, বাতাসে উচ্চ আর্দ্রতা অথবা ঝড়ের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত এ ছত্রাকের বিস্তারে সহায়তা করে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
  • সুস্থ গাছ থেকে সংগৃহীত অথবা অনুমোদিত রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করুন।
  • রোগ প্রতিরোধী অথবা সহনশীল জাত ব্যবহার করুন।
  • ফুলের গাঠনিক ক্ষতি পরিহার করতে দেরিতে বপন করুন।
  • এক সারি থেকে অন্য সারিতে সংক্রমণ রোধে লম্বা জাতের শস্য অথবা মিলেটের সাথীফসল চাষ করুন।
  • বায়ু চলাচলের সুবিধার্থে গাছের মধ্যবর্তী স্থানে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রাখুন।
  • গাছের নিচের পাতা থেকে যাতে ছত্রাক ছড়াতে না পারে সেজন্য মালচ্‌ ব্যবহার করুন।
  • জীবাণুমুক্ত ভালো মাটি নিশ্চিত করতে সকল উদ্ভিদ অবশিষ্টাংশ সরিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলুন।
  • সংক্রামিত সরঞ্জাম পরিষ্কার করুন।
  • অনাবাসী ফসলের সাথে শস্য আবর্তনের সুপারিশ করা হয়।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন