Tilletia indica
ছত্রাক
প্রথম পর্যায়ে শষ্যমঞ্জরীর কিছু দানার গোড়া কালো বর্ণের হয়ে যায়। ধীরে ধীরে দানাগুলো অন্তঃসার শূন্য হয়ে পড়ে এবং আংশিক বা পুরো অংশটাই কালো বর্ণের ছত্রাকসৃষ্ট গুঁড়ো দিয়ে পূর্ণ থাকে। এ অবস্থার ফলে দানাগুলো স্ফীত না হয়ে চ্যাপ্টাবদ্ধ খোসায় পরিণত হয়। রোগ বৃদ্ধি হতে থাকলে অন্যান্য সুস্থ দানাগুলোও আক্রান্ত হয়, ঐ সমস্ত দানাগুলো চূর্ণ করলে পচা মাছের আঁশটে গন্ধ বের হয়। যাইহোক, প্রত্যেকটি শস্যমঞ্জরীতে আক্রান্ত দানার সংখ্যা ৫/৬ টির বেশী হয়না। আক্রান্ত গাছগুলো খর্বাকৃতি হয়ে যেতে পারে। এ রোগ দানার উৎপাদনকে কম ব্যাহত করে, কিন্তু গুনগত সমস্যা থাকার কারনে আক্রান্ত দানাগুলো পরবর্তীতে বীজ হিসেবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে কিংবা ছত্রাকগুটির উপস্থিতির কারনে সাধারনভাবেই বাতিল বলে গণ্য হয়।
আমরা দুঃখিত যে Tilletia indica-র বিরুদ্ধে কোনও বিকল্প নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা আছে কিনা তা এখনো আমাদের অজানা। যদি আপনি এই রোগের বিরুদ্ধে বিকল্প কোন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রয়োগ করে সফল হয়ে থাকেন তবে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমরা আপনার কাছ থেকে শুনতে চাই।
সম্ভবমত সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। কোন ধরনের বীজ শোধনই একশতভাগ কার্যকর নয়, কিন্তু আরও কিছু রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে যেগুলো ছত্রাকের বৃদ্ধি ও বীজ নষ্ট হওয়া ব্যাহত করে। কার্বক্সিন-থাইরাম (carboxin-thiram), ডাই-ফেনকোনাজল (difenoconazole), মেফিনোক্সাম/টেবুকোনাজল (mefenoxam or tebuconazole) ইত্যাদি ছত্রাকনাশক বাতাস বাহিত সংক্রমন রোধ করে।
গমের শাঁস পচা রোগ বীজবাহিত অথবা মাটিবাহিত ছত্রাক Tilletia indica দ্বারা সৃষ্টি হয়। এ ছত্রাকের গুটি ৪ থেকে ৫ বছর মাটিতে জীবিত থাকতে পারে। এ গুটিগুলোই সংক্রামিত মাটি এবং উদ্ভিদ অবশিষ্টাংশ থেকে সুস্থ গাছ এবং পুষ্পমঞ্জরীতে ছড়িয়ে পড়ে। ফুল ধারণের সময় থেকেই সংক্রমণ ঘটে, কিন্তু মঞ্জরী বিকাশের সময় গাছগুলো বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে । ক্রমবিকাশমান বীজের মধ্যে এ ছত্রাক বাসা বাঁধে এবং বীজগুলোকে অন্তঃসার শূন্য করে দেয়। অনুকূল আবহাওয়া এ রোগের লক্ষণ বিকশিত হওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে দানা গঠনের সময়ে আর্দ্র জলবায়ু ও ১৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রোগ বৃদ্ধির জন্য খুবই অনুকূল পরিবেশ। তাছাড়াও, খামারের যন্ত্রাংশ, জিনিসপত্র, পোশাক এবং এমনকি যানবাহনের মাধ্যমেও এ রোগ ছড়ায়।