অন্যান্য

ভুট্টা বা জোয়ারের তুর্কী পাতা ঝলসানো রোগ

Setosphaeria turcica

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • প্রথমে নিচের দিকের পাতায় লক্ষণ প্রকাশ পায়।
  • বড়, প্রায়শই ডিম্বাকৃতি, ধূসর বা হালকা তামাটে বর্ণের কালচে সীমাবিহীন ২৫-১৫০ মিমি দাগ পাতার উপরে দেখা যায়।
  • এই রোগ আক্রমণের ফলে পাতা শুকিয়ে যায় ও দুর্বল হয়ে মারা যায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে


অন্যান্য

উপসর্গ

প্রথমে নিচের পাতায় ছোট, ডিম্বাকৃতি, জল-সিক্ত দাগ দেখা যায়। রোগ বাড়ার সাথে সাথে উদ্ভিদের উপরের অংশেও লক্ষণ দেখা যায়। পুরনো দাগ ধীরে ধীরে তামাটে, লম্বা চুরুট আকৃতি ধারন করে এবং সুস্পষ্ট কালো দাগ ও বিবর্ণ সবুজ, জল-সিক্ত সীমারেখা দিয়ে ঘেরা থাকে। এই দাগ পরে একত্রিত হয়ে পত্রফলক ও বোঁটার অধিকাংশ স্থান জুড়ে ফেলে। মাঝে মাঝে গাছ ঢলে পড়ে ও গাছের মৃত্যু ঘটে। ভুট্টার শীষ উৎপাদনের সময় সংক্রমণ যদি উদ্ভিদের উপরের অংশে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে ফসলের ক্ষতি (৭০% পর্যন্ত) হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

ফসলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে জৈব-ছত্রাকনাশক ভিত্তিক ট্রাইকোডারমা হ্যাজারিয়াম (Trichoderma harzianum) বা ব্যাসিলাস সাবটিলিস (Bacillus subtilis) প্রয়োগ করা যেতে পারে। সালফারের দ্রবণ প্রয়োগও কার্যকর ।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। প্রথম দিকে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অথবা রোগ দেখামাত্রই ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। কার্বোক্সিন (carboxin), ক্লোরোথ্যালোনিল (chlorothalonil) অথবা মানকোজেব (mancozeb) যুক্ত ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। বীজ শোধন অনুমোদিত নয় ।

এটা কি কারণে হয়েছে

এই ছত্রাক শীতকালে মাটি ও ফসলের অবশিষ্ট অংশের মধ্যে থাকে। বৃষ্টিপাত, রাতের শিশির, উচ্চ আর্দ্রতা এবং মাঝারি তাপমাত্রা এই ছত্রাক ছড়ানোর জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরী করে। বাতাস বা বৃষ্টির ফোঁটার সাহায্যে এটি প্রথম মাটি থেকে কচি ভুট্টার নিচের পাতায় ছড়ায়। বৃষ্টিস্নাত অবস্থা ও কম মাঠ কর্ষণ অন্য ফসল ও জমিতে এই ছত্রাক ছড়ানোর জন্য সুবিধাজনক। বৃদ্ধিকালে সংক্রমণের জন্য সঠিক তাপমাত্রার পরিধি ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস । দীর্ঘ ৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় পাতা ভেজা থাকাও প্রয়োজন। জোয়ার এই ছত্রাকের অন্য একটি প্রিয় পোষক।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • রোগ প্রতিরোধী ও সহিষ্ণু ফসলের জাত চাষ করতে হবে।
  • সুষম পুষ্টি নিশ্চিতকরণ এবং অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে।
  • জমির ভিতরে এবং বাইরে আগাছা নিধন করতে হবে।
  • রোগের বিস্তার রোধে সয়াবিন, শিম এবং সূর্যমুখী চক্রাকারে চাষ করতে হবে।
  • গভীর চাষ দিয়ে অবশিষ্টাংশ মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে এবং মাটিতে রোগের বীজের পরিমান কমিয়ে ফেলতে হবে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন