Cochliobolus miyabeanus
ছত্রাক
এ রোগের উপসর্গ বিভিন্ন ধরনের হয়। যাইহোক, সংক্রমিত বীজে ছোট, গোলাকার, হলুদ বাদামী বা বাদামী ডিম্বাকৃতির দাগ দেখা যায় এবং কুশি গজানোর অবস্থা থেকে পাতায় এ দাগ দেখা যায়। দাগ বড় হলে হালকা বাদামী থেকে ধূসর কেন্দ্রযুক্ত বৃত্তাকার থেকে ডিম্বাকৃতি আকার ধারণ করে যার চারিদিকে লালচে বাদামী আবরন দিয়ে ঘেরা থাকে। কাণ্ডের বিবর্ণতা এ রোগের আরও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। সংবেদনশীল জাতে লম্বা ক্ষত ৫-১৪ মিমি দীর্ঘ হতে পারে যা থেকে পাতা শুকিয়ে যেতে পারে। রোগ প্রতিরোধী জাতে ক্ষত হলুদ-বাদামী রঙের এবং দেখতে আলপিনের মাথার মত সূক্ষ্মাকৃতির হয়। ধানের ছড়া আক্রান্ত হলে অপরিপূর্ণ ও বিকৃত শস্যদানা লক্ষ্য করা যায় এবং দানার গুনগত মান হ্রাস পায়।
বীজ সংক্রমিত নয় বলে নিশ্চিত করার জন্য ১০ থেকে ১২ মিনিটের জন্য গরম জলে (৫৩ থেকে ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ভিজিয়ে শোধন করুন। ফলাফল আশানুরূপ করতে, গরম জলে শোধনের আগে বীজ ঠাণ্ডা জলে ৮ ঘন্টা চুবিয়ে রাখুন।
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। বীজ শোধনের জন্য ছত্রাকনাশক ব্যবহার করুন [ যেমনঃ আইপ্রোডিয়ন (iprodione) , প্রপিকোনাজল (propiconazole), অ্যাজোক্সিস্ট্রবিন (azoxystrobin), ট্রাইফ্লোক্সিসট্রোবিন (trifloxystrobin) এবং কারবেণ্ডাজিম (carbendazim) ]।
Cochliobolus miyabeanus ছত্রাক দ্বারা এ রোগের উপসর্গ দৃশ্যমান হয়। ছত্রাক চার বছরের বেশী পর্যন্ত বীজের ভিতর বেঁচে থাকতে পারে এবং বায়ুর মাধ্যমে এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছড়িয়ে যেতে পারে। যাইহোক রোগ বিস্তারের প্রধান উৎস মাঠে পড়ে থাকা আক্রান্ত ধানের অবশিষ্টাংশ ও ক্ষেতের আগাছা। ধানের বাদামী দাগ রোগ বৃদ্ধির সব পর্যায়ে ঘটতে পারে, তবে কুশি হওয়ার সময় থেকে, ফসল পাকা পর্যন্ত সময়ে লক্ষ্যনীয়ভাবে তার বৃদ্ধি হতে পারে। এ রোগ সাধারণত পুষ্টির অভাব বিশেষ করে অনুখাদ্যের অভাবে হয়ে থাকে। সিলিকন সমৃদ্ধ সার ব্যবহার করে এ রোগ দমনে দক্ষতা অর্জন করা যায়। গোবর সারের সাথে রাসায়নিক সার মিশ্রণ করে ব্যবহার করলে এ রোগ অনেকটা দমন করা যায়। উচ্চ আর্দ্রতা (৮৬-১০০%), ধানের পাতা দীর্ঘ সময় সিক্ত থাকলে এবং অপেক্ষাকৃত উচ্চ তাপমাত্রা (১৬-৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস) ছত্রাকের পক্ষে অনুকূল।