গম

কালশীষ রোগ

Ustilago segetum var. tritici

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • ফুলধারন পর্যায়ে বা তার কিছু আগেই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
  • কালচে মাথা ও কালো পাউডারের মতো গুঁড়ো বিশিষ্ট দানার সৃষ্টি হয় যার ভিতর থেকে "পচা মাছের" মতো অদ্ভুত গন্ধ নির্গত হয়।
  • ক্রমবিকাশমান বীজের ভিতরের অংশ ছত্রাকের বৃদ্ধি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

গম

উপসর্গ

ফুলধারন পর্যায়ে বা তার কিছু আগেই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। কালচে মাথা ও কালো পাউডারের মতো গুঁড়ো দানা বিশিষ্ট দানার সৃষ্টি হয় যার ভিতর থেকে পচা মাছের মতো অদ্ভুত গন্ধ বের হয়। বিকাশমান বীজের ভিতরের অংশ ছত্রাক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় এবং আক্রান্ত ছড়ায় দানার কোন ফলনই হয় না। বিশ্বের সমস্ত গম উৎপাদনশীল এলাকা জুড়েই এটি একটি পরিচিত রোগ।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরম জলে বীজ ৪ থেকে ৬ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। পরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরম জলে ২ মিনিট ধরে ডুবিয়ে রাখুন। পরবর্তী ধাপে পলিথিন চাদরের উপর সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আরও ৪ ঘন্টা ধরে ফেলে রাখুন। বপনের পূর্বে বীজগুলোকে বাতাসের সম্পূর্ণ শুকিয়ে নিন। এ পদ্ধতি প্রয়োগে সংক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে দেয় কিন্তু এটা বীজের অঙ্কুরোদ্গমের হারকে তরান্বিত করতে পারে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। প্রবাহমান ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করা যেতে পারে যেমন, কার্বোক্সিন বা ট্রায়াডিমেনোল অঙ্কুরধগমশীল বীজ শুষে নেয় এবং বীজের ভিতরে থাকা অন্তর্নিহিত ছত্রাককে ধ্বংস করে। বীজ শোধনের জন্য অন্যান্য উপাদানগুলো হচ্ছে ট্রাইটিকোনাজোল (triticonazole),ডাইফেনোনাজোল (difenoconazole ) এবং টেবুকোনাজোল (tebuconazole)।

এটা কি কারণে হয়েছে

এ রোগের লক্ষণগুলি সৃষ্টি হয় বীজবাহিত ছত্রাক উস্তিলাগো ট্রিটিচির সংক্রমণ দ্বারা যা সংক্রামিত বীজের ভিতরে সুপ্তাবস্থায় থাকে। উদ্ভিদের জীবন চক্রের সাথে তাল মিলিয়েই এ ছত্রাকের বিকাশ ঘটতে থাকে। সংক্রামিত বীজ অঙ্কুরিত হলে, গমের কচি চারার কাণ্ডে পুনরায় এ ছত্রাকের বৃদ্ধি ঘটতে থাকে এবং অবশেষে এরা নতুন ফুলের কোষকলায় বাসা বাঁধে। বাতাসের মাধ্যমে পরাগরেণু ছড়ানোর পরবর্তীতে আক্রান্ত ফুল থেকে ছত্রাকের গুটি সুস্থ ফুলগুলোতে ছড়িয়ে যায়। সেখানে গুটিগুলি অঙ্কুরিত হয় এবং অন্তর্নিহিত কোষকলায় বাসা বাঁধে এবং অবশেষে নতুন বীজের সাথে মিশে যায়। সুপ্তাবস্থায় ছত্রাক বহনকারী বীজগুলো দেখতে সুস্থই মনে হয়। ঐ বীজগুলো বপনের মাধ্যমে পুনরায় সংক্রমণ চক্রটি শুরু হয়। রোগ ছড়ানোর অন্যান্য মাধ্যমগুলো হচ্ছে কর্তিত ফসলের অবশিষ্টাংশ, বৃষ্টি ও পোকামাকড়। গুটিগুলো দ্রুত অঙ্কুরিত হওয়ার জন্য অনুকূল অবস্থা হলো আর্দ্র জলবায়ু (আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৬০% থেকে ৮৫%) সাথে ঘন ঘন বৃষ্টি অথবা শিশির এবং (১৬ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাযুক্ত) শীতল আবহাওয়া।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সুস্থ গাছের থেকে বা প্রত্যয়িত উৎস থেকে প্রাপ্ত বীজই ব্যবহার করুন।
  • সম্ভব হলে রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করুন।
  • ভিন্ন ভিন্ন জমিতে কাজ করার ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি, হাত ও জুতো ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন