Penicillium spp.
ছত্রাক
ফসল সংগ্রহের পর ভুট্টার দানায় এ রোগটির প্রথম লক্ষণ দেখা যায় বলে এ রোগের নাম পেনিসিলিয়াম ছত্রাকজনিত শীষ পচা রোগ হয়েছে। গাছের বৃদ্ধি পর্যায়ে ছত্রাক আক্রমণ করলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, গাছ নেতিয়ে পড়ে এবং হলদেটে হয়ে যায়। রোগ সংক্রমণের পরবর্তী পরিচর্যার সময় এ ছত্রাক বিভিন্ন পোকামাকড় কর্তৃক সৃষ্ট ক্ষত কিংবা যান্ত্রিক ক্ষতের মধ্য দিয়ে ভুট্টার শীষে প্রবেশ করে। জমি পরিচর্যা কিংবা ফসল সংগ্রহের সময় যান্ত্রিক ক্ষত সৃষ্টি হয়। অধিক তাপমাত্রা এবং অধিক আর্দ্রতা বজায় থাকলে ভুট্টার মোচার গায়ে এবং দানায় নীলাভ-সবুজ বর্ণের ছত্রাক সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত দানাগুলো ঝলসে যায় এবং দানার গায়ে লম্বাটে দাগ পড়ে। ভিতরের দিকে পচে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট উপসর্গটিকে ‘নীল চোখ’ বলা হয়। মাঝে মাঝে এ ছত্রাকের বাহ্যিক উপস্থিতি ফসল কাটার পর কিংবা সংরক্ষণের সময় লক্ষণীয় হয়।পচনশীল দানাগুলোর ফলশ্রুতিতে ফলন হ্রাস কিংবা ফসল সংগ্রহের পরে ক্ষতি ঘটায়।
দুঃখিত, এ রোগের বিরুদ্ধে আমাদের কোন জৈবিক নিয়ন্ত্রণের কথা জানা নেই। এ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে এমন কোন জৈবিক নিয়ন্ত্রণের কথা যদি আপনার জানা থাকে তাহলে অনুগ্রহপূর্বক আমাদের জানান। আপনাদের কাছ থেকে কিছু জানার অপেক্ষায় রইলাম।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। সংক্রমণ গুরুতর হলে মানকোজেব (mancozeb) অথবা কাপটান (captan) সহযোগে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করুন।
পেনিসিলিয়াম ছত্রাকটি বায়ুবাহী এবং পরিবেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। এ ছত্রাকটি স্বল্প জলের উপস্থিতিতেই জন্মাতে পারে এবং আক্রান্ত উদ্ভিদের অবশিষ্টাংশে কিংবা সংরক্ষনাগারে বেঁচে থাকতে পারে। এ রোগের বিস্তৃতি ঘটে বাতাস ও বৃষ্টির ছিটার মাধ্যমে এবং শীষ আক্রান্ত হয় ক্ষতের মাধ্যমে। এরা অধিক আর্দ্রতা ও তাপমাত্রায় জীবনধারণ করে। ফুল ধরা এবং মোচার বৃদ্ধি পর্যায়ে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। তবে এ রোগের প্রথম লক্ষণ ফসল সংরক্ষণের সময়ই কেবল পরিলক্ষিত হতে পারে।