আলু

ব্ল্যাক স্কার্ফ

Rhizoctonia solani

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • আলুর বহির্ভাগে কালো শক্ত উত্থিত দাগ দেখা যায়।
  • মূলের উপরের ভাগ এবং কচি কাণ্ড বাদামী হয়ে যায়, এবং বিভিন্ন স্থানে জলস্ফীত দাগ সহ সাদা ছত্রাক জন্মায়।
  • পাতা আংশিকভাবে নেতিয়ে যায় এবং বিবর্ণ হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

আলু

উপসর্গ

আলুর কন্দের বহির্ভাগে অনিয়মিত আকার এবং আকৃতির উত্থিত কালো কালো দাগ দেখা যায়। এই কালো চিহ্নগুলি খুব সহজেই ঘষা অথবা খোঁচা দিয়ে তুলে ফেলা যায়। আতসকাঁচ ব্যবহার করলে এই দাগগুলোর চারপাশে ছত্রাকের সাদা স্তর দেখা যায়। কচি কাণ্ডে ও শাখায় ক্যা্ঙ্কার সংক্রমণ হলে যেরকম দেখায় ছত্রাক সেরকম লক্ষণ সৃষ্টি করে। মূলের উপরে বাদামী বর্ণের জলস্ফীত দাগ দেখা যায় যার চারপাশে সাদা হয়ে ছত্রাক জন্মায়। যদি কাণ্ডের চারপাশে পচে যায় তাহলে তার মধ্যে দিয়ে জল এবং পুষ্টি উপাদান পরিবাহিত হতে পারেনা, ফলে পাতা শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

মাটিতে জৈব ছত্রাকনাশক ট্রাইকোডারমা হ্যারজিয়ানাম অথবা রোগ সৃষ্টি করেনা এরকম প্রজাতির রাইজোকটনিয়া অগভীর গর্তে প্রয়োগ করুন। এটা জমিতে ব্ল্যাক স্কার্ফের সংক্রমণ কমানোর পাশাপাশি সংক্রমিত কন্দের পরিমানও কমাতে পারে। আলু রোপণের অগভীর গর্তে গবাদিপশুর মল অথবা সবুজ সরিষার অবশিষ্টাংশ দিয়ে জৈব-ধোঁয়া সৃষ্টি করেও রোগের সংক্রমণ কমানো যেতে পারে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। বীজে ফ্লুয়োডিঅক্সিনিল (fluodioxinil) অথবা থায়োফ্যানেট-মিথাইল (thiophanate-methyl) ও ম্যানকোজেবের (mancozeb) মিশ্রণ প্রয়োগ করলে ব্ল্যাক স্কার্ফ সহ অনেক প্রজাতির ছত্রাক ঘটিত সংক্রমণের মাত্রা কমে যায়। ফ্লুয়োটানিল (fluotanil) অথবা অ্যাজোক্সিস্ট্রোবিন (azoxystrobin) প্রয়োগ করে অগভীর ভাবে বীজ রোপণ করে ছত্রাকের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

এটা কি কারণে হয়েছে

রাইজোকটনিয়া সোলানি (Rhizoctonia solani) নামক এক ধরনের ছত্রাক ব্ল্যাক স্কার্ফ রোগ সৃষ্টি করে। ৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই ছত্রাক এমনকি আলুর অনুপস্থিতিতেও অনেকদিন পর্যন্ত মাটিতে বেঁচে থাকতে পারে। এই রোগের সংক্রমণ মাটি থেকে অথবা সংক্রমিত আলুর কন্দ রোপণ করলে সেখান থেকে হতে পারে। যদিও ছত্রাক কাণ্ডের পচে যাবার জন্য দায়ী নয় তবুও সংক্রমিত আলুকে বীজ হিসেবে ব্যবহার করা উচিৎ নয়। ঠাণ্ডা ও আর্দ্র আবহাওয়া সংক্রমণের মাত্রা অনেক বাড়িয়ে দেয়। প্রাথমিক বৃদ্ধির সময়ে উষ্ণ তাপমাত্রা থাকলে রোগের প্রকোপ অনেক কমে যায়। হালকা বালি মাটিতে ব্ল্যাক স্কার্ফ এবং কাণ্ডের ক্ষতরোগ অনেক বেশী হয়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সুস্থ সবল উদ্ভিদ অথবা প্রত্যয়িত কোনো উৎস থেকে বীজ সংগ্রহ করুন।
  • মরশুমের শুরুতেই চারা রোপণ করা থেকে বিরত থাকুন।
  • উষ্ণ মাটিতে (৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশী) বীজ কন্দ রোপণ করুন।
  • মাটি থেকে যেন তাড়াতাড়ি কাণ্ড উত্থিত হতে পারে সেজন্য লাঙ্গল দিয়ে অগভীর ভাবে চাষ দিয়ে সেখানে কন্দ রোপণ করুন।
  • জমিতে বিভিন্ন রকমের শস্যের পর্যায়ক্রমিক চাষ করুন।
  • ফসল তোলার পর জমিতে পরাশ্রয় দান করেনা এরকম উদ্ভিদের অবশিষ্টাংশ রেখে দিন।
  • উদ্ভিদে পর্যাপ্ত পরিমানে জলসেচ করুন, বিশেষ করে শুষ্ক সময়ে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন