Plasmodiophora brassicae
ছত্রাক
মাটির ওপর এবং নিচে রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। সর্বোপরি, উদ্ভিদের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং পাতা হলুদ হয়ে যায়। জমি শুষ্ক থাকলে গাছ নেতিয়ে পড়ে, কিন্তু সিক্ত অবস্থায় গাছ পুনরায় সজীব হয়ে যায়। পাতার রং বেগুনিও হতে পারে। মাটির নিচের অংশের লক্ষণ হিসেবে মূলের গিঁটযুক্ত হয়ে ফুলে যাওয়া এবং ক্ষুদ্র মূলের (মূলরোম) বিলুপ্তি ঘটে। ক্রমশ এ গিঁট ফুলে যাওয়ার ফলে মূলের বিকৃতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিক মূল গদাকৃতির হয়ে যায় (এ কারণেই এ রোগের এমন নামকরণ)। ফসলের বৃদ্ধি এবং ফলন গুরুতরভাবে হ্রাস পায় ও মারাত্মকভাবে আক্রান্ত গাছ মারা যায়।
এ রোগের একমাত্র জৈবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হচ্ছে ঝিনুক চূর্ণ বা ডলোমাইট ব্যবহার করে মাটির পিএইচ মাত্রা ৭.২ পর্যায়ে বাড়িয়ে তোলা। শরৎকালে ছোট চাষী এবং বাগানকারীগন এ ব্যবস্থা নিতে পারেন। মাটির পিএইচ মাত্রা পরীক্ষা করার জন্য কিছু সহজলভ্য যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ১০০ শতাংশ কার্যকর নয় বলে মাটি ধূমায়িত করা সুপারিশযোগ্য নয়। চারা রোপণের পূর্বে চুনাপাথর (ক্যালসিয়াম কার্বোনেট) কিংবা ভেজা চুন (ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড) প্রয়োগ করে পিএইচ মাত্রা বাড়িয়ে নিলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাস পায়।
মাটিস্থ জীবাণু প্লাজমোডাইয়োফোরা ব্রাসিকি বাঁধাকপির মূলে আক্রমণ করার ফলে রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ জীবাণু বিভিন্ন শস্য যেমন ব্রাসেলস স্প্রাউট, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শালগম এবং মূলাতে আক্রমণ করে। এ জীবাণু সুপ্ত স্পোর তৈরি করতে পারে যা ২০ বছর পর্যন্ত মাটিতে সুপ্তাবস্থায় বেঁচে থাকতে পারে। সংবেদনশীল মূলের সংস্পর্শে এসে স্পোরগুলো অঙ্কুরোদগম করে এবং মূলরোম সংক্রমিত হয়। ফলে শিকড় ফুলে যায় এবং এ লক্ষণটির সাপেক্ষেই রোগের নামকরণ করা হয়েছে। ফুলে যাওয়া অঞ্চল থেকে ক্রমশ আরো জীবাণু তৈরি হয় এবং মাটিতে সে জীবাণু প্রবেশ করে। এভাবে রোগের জীবনচক্র সম্পন্ন হয়। আর্দ্র এবং উষ্ণ মাটিতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। চুন প্রয়োগের মাধ্যমে পিএইচ মাত্রা বাড়ালে এ রোগের তীব্রতা হ্রাস পেলেও সম্পূর্ণ রোগমুক্তি ঘটে না।