শিম

পাতায় কালো দাগ রোগ।

Colletotrichum lindemuthianum

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • পাতা এবং কাণ্ডের উপর গোলাকার, গাঢ় বাদামী থেকে কাল দাবানো দাগ দেখা যায়।
  • পাতার শিরা এবং বোঁটাতে কৌনিক গঠনের ইঁট-লাল রঙ থেকে কালো রঙের ক্ষত দেখা যায়।
  • বৃত্তাকার, হালকা বাদামী থেকে মরিচা বর্ণের ক্ষত, ফল এবং কাণ্ডের উপর কালো রেখা দ্বারা বেষ্টিত থাকে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

শিম

উপসর্গ

সংক্রামিত বীজ থেকে প্রাপ্ত চারা গাছে প্রায়শই পাতা এবং কাণ্ডের উপর গোলাকার, গাঢ় বাদামী থেকে কাল দাবানো দাগ দেখা যায়। চারাগুলির বৃদ্ধি আপোস করা হয় এবং তারা অকালে মারা যায় বা এদের বৃদ্ধি স্তব্ধ হতে পারে। গৌণ সংক্রমণের সময়, পাতার শিরা এবং বৃন্তগুলি প্রথমে পাতার নীচে, পরে উপরের দিকেও কৌণিক গঠনের ইঁট-লাল থেকে কালো ক্ষত বিকাশ করে। বৃত্তাকার, হালকা বাদামী থেকে মরিচা বর্ণের ক্ষতগুলি, একটি কালো সীমারেখা দ্বারা বেষ্টিত, শুঁটি এবং কাণ্ডে প্রদর্শিত হয়। মারাত্মকভাবে সংক্রামিত শিমগুলিতে, এগুলি দেবে যাওয়া দূষিত ক্ষত রোগের দিকটি অবলম্বন করে কিছুটা কুঁচকে গিয়ে বিকৃত হতে পারে। সংক্রামিত বীজ প্রায়শই বর্ণহীন হয় এবং বাদামী থেকে কালো ক্ষতে বিকশিত হয়। সাধারণ শিম গাছগুলি এই রোগের জন্য খুব সংবেদনশীল। ।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

চলমান মরশুমের উষ্ণতম সময়কালে নিম তেল নির্যাস প্রতি ৭ থেকে ১০ দিন পর পর দিলে তা ছত্রাকের বৃদ্ধিকে সীমাবদ্ধ করে। জৈবিক এজেন্ট সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। বীজ শোধনকারী পণ্য হিসাবে জৈব নিয়ন্ত্রক এজেন্ট যেমন ছত্রাক ট্রাইকোডার্মা হার্জিয়ানাম এবং ব্যাকটিরিয়াম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ব্যবহার করে কালেক্টোট্রিকাম লিন্ডেমুথিয়ানামের বৃদ্ধি সীমাবদ্ধ করা যায়। এ ছত্রাক হ্রাস করতে ১০ মিনিটের জন্য গরম জলে (৫০° সেলসিয়াস) বীজকে নিমজ্জন করুন।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে ক্ষেতে রোগের তীব্রতা হ্রাস করা যেতে পারে তবে অর্থনৈতিকভাবে তা খুবই কম উপযোগী। পাতা শুকনো হয়ে গেলে ম্যানকোজেব, ক্লোরোথ্যালোনিল, ফ্লুত্রিয়াফোল, পেনকোনাজোল বা কপার সংগঠিত ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করুন।

এটা কি কারণে হয়েছে

কলিটোট্রিকাম লিন্ডেমুথিয়ানাম প্রজাতির ছত্রাকের কারণে কালো দাগ রোগ হয়। এটি মূলত বীজবাহিত রোগ, তবে ফসলের অবশিষ্টাংশ এবং বিকল্প আবাসেও বেঁচে থাকে। যখন পরিবেশের পরিস্থিতি অনুকূল হয়, তখন বীজগুটি অঙ্কুরিত হয় এবং বাতাস এবং বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে। শীতল থেকে মাঝারি তাপমাত্রা (১৩-২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস), উচ্চ আর্দ্রতা, শিশির ভেজা পাতায় বা ঘন ঘন বৃষ্টিপাত ছত্রাকের জীবনচক্র এবং রোগের অগ্রগতি বাড়ায়। যেহেতু জলের উপস্থিতিতে ছত্রাক ছড়িয়ে পড়ে, তাই পাতা ভেজা অবস্থায় মাঠের কাজকর্ম চলাকালীন যান্ত্রিক আঘাতের কারণেও এটি ছড়িয়ে যেতে পারে। ছত্রাক ফলের ত্বকে আক্রমণ করতে পারে এবং বীজপত্র বা বীজের আবরণে সংক্রামিত করতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সুস্থ গাছ থেকে বা প্রত্যয়িত উৎস থেকে বীজ ব্যবহার করুন।
  • রোগ সহনশীল জাত বপন করুন।
  • গাছ থেকে গাছে উত্তম বায়ুচলাচল বজায় রাখুন।
  • রোগের কোন চিহ্ন আছে কিনা তা জানার জন্য আপনার ফসল বা ক্ষেত পরীক্ষা করুন।
  • আপনার ফসলের কাছাকাছি অতিরিক্ত আগাছা বৃদ্ধি এড়িয়ে চলুন যেহেতু আগাছা বিকল্প বাহক হিসাবে কাজ করে।
  • জমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
  • গাছের পাতা ভিজে থাকলে মাঠে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
  • ফসল কাটার পরে আক্রান্ত গাছের অবশিষ্টাংশ মাটির গভীরে পুঁতে দিন।
  • অনাবাসী ফসল দ্বারা প্রতি দুই থেকে তিন বছর অন্তর শস্য আবর্তন করার জন্য সুপারিশ আছে।
  • বীজে রোগের সংক্রমণ এড়াতে আপনার গুদাম ঘর পরিষ্কার রাখুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন