পীচ

পীচের পাতা কুঁকড়ানো রোগ

Taphrina deformans

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • লাল রঙের বিবর্ণতার সাথে পাতার বিকৃতভাব লক্ষ্য করা যায়।
  • পাতার উপরে ছত্রাকের বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়।
  • অকাল পত্রমোচন ঘটে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

3 বিবিধ ফসল
বাদাম
খুবানি
পীচ

পীচ

উপসর্গ

পাতা ফোটার আগেই সাধারনত এর উপসর্গগুলো দেখা যায়। পাতা শুকিয়ে যায় এবং গুরুতরভাবে পাতাগুলি কুঁচকে যায় বা কুঁকড়ে যায় এবং লালচে থেকে বেগুনী রঙে বিবর্ন হয়ে যায়। এ বিবর্ণ হওয়ার রঙ গাছের জাতের উপর নির্ভর করে। সংক্রমণ যত বাড়বে, পাতার রঙ তত বেশী সাদাটে-ধূসর হয়ে যাবে, ছোট ছোট সাদাটে গুঁড়ো আকৃতির পদার্থের আবির্ভাব ঘটবে যার ফলে পাতার পৃষ্ঠে ছত্রাকের আবির্ভাব ঘটবে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা দিনের উচ্চ তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে ধূসর রঙ থেকে কালো রঙ হয়ে যাবে। অবশেষে, আক্রান্ত পাতা মারা যায় এবং পড়ে যায়, যার ফলে গাছ পত্রহীন হতে থাকে এবং তার প্রাণশক্তি হারায়। এ পাতাগুলো একই জায়গা থেকে উৎপন্ন সম্পূর্ণ নতুন পাতা দ্বারা স্থানান্তরিত হয়। যখন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, ডগার খানিক অংশ বা সম্পূর্ণ অংশ কালো হয়ে যায়, এটা তখনি শুরু হয় যখন ছত্রাক গাছের আভ্যন্তরীণ কলায় ছড়িয়ে যেতে শুরু করে। এই কারনে ক্রমবর্ধমান ডগাগুলি অস্বাভাবিক আকৃতির পার্শ্বীয় ডগা তৈরী করে এবং তা ঝাড়ুর পিছনের অংশের মতন আকৃতির গঠন তৈরী করে। যেসব গাছে আক্রমণ বেশী হয়, সেসব গাছের পৃষ্ঠদেশের আকৃতি অদ্ভুত ভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

কপার মিশ্রিত পদার্থ যেমন বোর্দো মিশ্রণ ছত্রাকনাশক ঝাঁঝরির মাধ্যমে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাবে। একবার শরৎকালের পরে এবং আরেকবার বসন্তকালে কুঁড়ি ফোটার পূর্বে শোধনের কাজ করতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে, কপারের একাধিকবার ব্যবহারের ফলে মাটিতে কপারের পরিমান বেড়ে যাবে যা মাটিতে অবস্থিত অনুজীব সমূহের জন্য বিষাক্ত হতে পারে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। কপার অক্সিক্লোরাইড, কিউপ্রিক হাইড্রোক্সাইড, থিরামজিরাম, ক্লোরোথালোনিল অথবা ডিফেনোকোনাজল ছত্রাকনাশক ব্যাবহার করা যাবে। একবার শরৎকালের পরে এবং আরেকবার বসন্তকালে কুঁড়ি ফোটার পূর্বে শোধনের কাজ শুরু করতে হবে।

এটা কি কারণে হয়েছে

এই উপসর্গগুলো সৃষ্টি হয় ছত্রাক টাফ্রিনা ডিফরমান্স-এর উদ্ভিদ কলার উপনবিশের মাধ্যমে। পাতার পৃষ্ঠে উৎপাদিত বীজগুলি বৃষ্টিপাতের দ্বারা ধুয়ে বা বায়ু দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে উড়ে পাতায় এবং ডালে গিয়ে পতিত হয় যা নতুন ভাবে সংক্রমণের সৃষ্টি করে। টানা বর্ষনের সময় যখন বীজ (স্পোর)-এর অঙ্কুরোদ্গমের সময় হয় তখন কুঁড়ি ফোটে বসন্তকালে এবং সেইসব পাতাগুলিতে আক্রমণ করে যেগুলো ফোটা শুরু করেনি। তখন থেকে বীজ (স্পোর) গুলো পাতার ভিতর ঢুকে যায়, তখন এ সংক্রমণ রোধ করার জন্য উপযুক্ত প্রতিব্যবস্থাও সৃষ্টি হয় না পাতায়। যদি তখন বৃষ্টি না হয় তবে বীজ(স্পোর)গুলি অকর্মক থাকে এবং সামান্য বা একদমই সংক্রমণ ঘটে না। পুরো গ্রীষ্ম জুড়ে বাকলে ফাটল শুরু হয় এবং শীত আসতে আসতে তারা চূড়ান্তভাবে অঙ্কুরিত হয়। ছত্রাক শুধুমাত্র ১৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কর্মঠ থাকতে পারে এবং শুধুমাত্র নিম্ন তাপমাত্রাতেই এরা বংশবৃদ্ধি করতে পারে। টাফ্রিনা ডিফরমান্স অমৃতিন ছাড়াও নেকটারিন্স , বাদামকে আক্রমণ করে এবং মাঝে মাঝে খুবানি এবং শোভাদানকারী উদ্ভিদেও আক্রমণ করে বসে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • কুঁড়ি যখন বড় হতে থাকে তখনকার সময়ে গাছকে বৃষ্টি বা অতিরিক্ত জলসেচের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
  • সঠিকভাবে আলো বাতাস যাতায়াতের জন্য গাছের শীর্ষ মুকুল নির্দিষ্ট আকৃতিতে কর্তন করতে হবে।
  • নিয়মিত সঠিক পরিমাণে সার প্রয়োগ করা উচিত।
  • কুঁড়ি বড় হওয়ার আগেই গাছকে সতেজ রাখতে হবে।
  • কিছু প্রাণবন্ত বৈচিত্র্য যেমন সাদা জ্ঞাতি বৈচিত্র্যের (জাত) গাছ নেওয়া যেতে পারে।
  • স্পষ্টতই সংক্রামিত পাতা, ছোট ফল এবং ছোট ডগা সরিয়ে ফেলতে হবে এবং ধ্বংস করতে হবে।
  • যখনই সম্ভব, সংক্রমণ রোধ করার জন্য প্লাস্টিকের তৈরি বৃষ্টি আবরন ব্যবহার করতে হবে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন