আপেল

আপেলের ফাইটোপথোরা শিকড় পচন রোগ

Phytophthora cactorum

ছত্রাক

সংক্ষেপে

  • প্রথম লক্ষণ হিসেবে দেখা যায় গাছের বৃদ্ধি হ্রাস, ছোট ছোট মৃত কোষ কলা, পাতা নেতিয়ে পড়ে এবং বৃদ্ধি থেমে যায়।
  • প্রধান কাণ্ডের অভ্যন্তরীণ কোষ কলার একটি সুগঠিত এলাকাকে কমলা-লাল-বাদামী রঙের দেখায় কয়েক ঋতু গাছের বৃদ্ধি হ্রাস পায় এবং অবশেষে মারা যায়।
  • ফলেও পচন ধরে এবং গাঢ় বাদামী ক্ষত দেখা যায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

আপেল

উপসর্গ

আপেল এবং ন্যাশপাতি গাছের পাতায় প্রথম লক্ষণ দেখা যায় এবং গাছের বৃদ্ধি হ্রাস পায়, ছোট ছোট মৃত কোষ কলা, পাতা নেতিয়ে পড়ে এবং বৃদ্ধি থেমে যায়। গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়। এই সময়ের মধ্যে শিকড় এবং মুকুটে পচন ধরে এবং ইতিমধ্যে রোগ অনেক দূর অগ্রসর হয়ে যায়। বাকল সরালে প্রধান কাণ্ডের অভ্যন্তরীণ কোষ কলার একটি সুগঠিত এলাকাকে কমলা-লাল-বাদামী রঙের দেখায়। রোগ বাড়ার সাথে সাথে এটি বড় হয় এবং বাদামী রং ধারণ করে। কোষ কলার পচন বা মৃত কোষ কলার কারণে সারা গাছে খাদ্য পরিবহন হ্রাস পায়। গাছে রোগের সাধারণ লক্ষণ দেখা যায় যেমন-ফ্যাকাশে হয়ে পাতা নেতিয়ে পড়া এবং পরিশেষে পাতা ঝরে পড়ে এবং গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়। কয়েক ঋতু গাছের বৃদ্ধি হ্রাস পায় এবং অবশেষে মারা যায়। ফলেও পচন ধরে এবং গাঢ় বাদামী ক্ষত দেখা যায় যা পুরো ফলকে সংক্রমিত করে। ফলের গাছ বিভিন্ন পর্যায়ে এ পচন দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

আজ পর্যন্ত এ ছত্রাকের বিরুদ্ধে কোন জৈবিক দমন ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হয়নি। যা’হোক, কপার সংঘটিত ছত্রাকনাশক সংক্রমিত কাণ্ডের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থার আওতায় জৈবিক দমনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। বাণিজ্যিক মেফেনক্সাম, এট্রিডিয়াজোল বা ফসিটাইল-অ্যালুমিনিয়ামের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করে মাটি শোধন করা হয় কিন্তু উদ্ভিদ সংক্রামিত অংশে ব্যবহার নিরর্থক। গাছের গোড়ার চারপাশে মেটালেক্সাইল+ ম্যানকোজেব মিশিয়ে প্রয়োগ করে পি. কেকটোরাম দমন করা যায়।

এটা কি কারণে হয়েছে

মাটিতে জন্মানো ফাইটোপথোরা কেকটোরাম ছত্রাকের কারণে এ রোগের লক্ষণ দেখা যায়, যারা অসংখ্য আবাসী গাছে থাকতে পারে। এটি ভিজা মৃত্তিকাতে প্রবাহিত হয়, এবং এইভাবে নিম্নভূমিতে, বন্যা প্রবণ এলাকা বা আর্দ্র জমির জন্য সমস্যা হতে পারে। গরম মরশুমে ছত্রাকের গুটি বের হয়ে সংক্রমণ হতে পারে। এটি আপেল ও ন্যাশপাতি উভয় গাছে আক্রমণ করে কিন্তু ন্যাশপাতি গাছে খুবই কম আক্রমণ করে। ফুল আসার পূর্বের সময় এর আক্রমণের গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে বিবেচিত হয়। সংক্রমণের প্রধান উৎস হিসেবে আক্রান্ত পতিত ফল ( যা ছত্রাকের গুটি ছড়িয়ে দেয় )এবং আক্রান্ত চারা দায়ী। যখন সংক্রমণ মাটির নিচে ছড়িয়ে পড়ে তখন শিকড় এবং মূলের প্রান্তে পচনের লক্ষণ দেখা যায়। মাটির ঠিক উপরে এবং কাণ্ডের নিচের অংশে কলার পচন দেখা যায়। উভয় ক্ষেত্রেই গাছের উপরের ফুল-ফলের লক্ষণ দেখে শিকড়ের অভ্যন্তরীণ কোষ কলার পচন এবং পরিবহন কলার অকার্যকারিতা বোঝা যায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • যদি পাওয়া যায় তাহলে প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করুন।
  • জমিতে সঠিক জলসেচ প্রদান করুন।
  • আক্রান্ত কচি ডাল এবং শাখা কেটে ফেলুন।
  • সংক্রমিত ফল সংগ্রহ করে ধ্বংস করুন।
  • প্রধান কাণ্ডের নিকট অতিরিক্ত আগাছার বৃদ্ধি পরিহার করুন।
  • মাটির ক্ষয় এড়াতে বৃক্ষের প্রধান কাণ্ডের চারপাশে ঘন কুঁড়ি যোগ করুন।
  • সংক্রমিত কাণ্ডকে উন্মুক্ত করতে গাছের গোড়া থেকে মাটি সরান, যাতে ঐ স্থানটি শুষ্ক থাকে এবং শরৎকালে পুনরায় মাটি প্রদান করুন।
  • ফল সংগ্রহের জন্য একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় ফল সংগ্রহ করুন।
  • বাগানের পতিত পাতার পচন ত্বরান্বিত করতে ৫% ইউরিয়া প্রদান করুন।
  • ট্রাক্টরের মাটি থেকে যাতে ফল আক্রান্ত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন